কাউখালীতে বেইলী ব্রিজ ভেঙ্গে জনদুর্ভোগ চরমে

384

॥ মোঃ ওমর ফারুক ॥

এক সপ্তাহ কেটে গেলেও কাউখালীর বেইলী ব্রিজটি মেরামতের ব্যবস্থা না হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছে কাউখালীর ২ ইউনিয়নের মানুষ। কাউখালী উপজেলার বাজার বেইলী ব্রিজটি অতিরিক্ত পাথর বোঝাই ট্রাকসহ গত শুক্রবার গভীর রাতে ভেংগে কাউখালী খালে পড়ে যায়।

সুত্র জানায়, কাউখালী উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত হলেও কিন্তু বড় ২টি ইউনিয়নের মধ্যে ঘাগড়া, কলমপতির কয়েক হাজার লোকের বসবাস। এই দুই ইউনিয়নের কয়েক হাজার লোকজন প্রতিদিন এই একমাত্র কাউখালী বাজার বেইলী ব্রিজ দিয়ে প্রতিনিয়ত চলাচল করতো। যার মধ্যে প্রতিদিন শত শত স্কুল কলেজ,মাদ্রাসার ছাত্র/ছাত্রীরা চলাচল করে। তা ছাড়া উপজেলা সদরে প্রশাসনিক কাজে প্রতিদিন শত শত লোকজন আসা যাওয়া করতো সেই সাথে বিভিন্ন যানবাহন মোটর সাইকেল, রিকসা, জীপ, ট্রাক, সিএনজি সহ বিভিন্ন হালকা ভারী যানবাহন এই সড়ক দিয়ে সদর হয়ে নাইল্যাছড়ি তারাবুনিয়া সুগারমিল দিয়ে চট্টগ্রাম রাঙামাটি প্রধান সড়কে চলাচল করতেন বলে জানা যায়। যদিওবা এই বেইলী ব্রিজটি অনেক পুরাতন দির্ঘ প্রায় ৩৫-৪০ বছর পুর্বে নির্মান করা হয় বলে এলাকাবাসি জানান। ইতিপুর্বে বেশ কয়েক বছর পুর্বে রাতের বেলা সেগুন কাঠ সহ (গভীর রাত্রে) একটি ট্রাক বেইলী ব্রিজটি নিয়ে ভেংগে পড়েন। পরবর্তীতে সেই পুরাতন বেইল্লী ব্রিজটি সংস্কার করা হয়েছিল। যদিওবা তখন থেকে এই বেইলী ব্রিজটি তখন থেকেই ঝুঁকিপুর্ণ হয়ে পড়েছে। তারপরেও উপজেলা সদরে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহি কাউখালী বাজার দুই ইউনিয়নের জনসাধারনের দৈন্য দশার যেন শেষ নেই। স্থানীয় ব্যবসা বাণিজ্য সব কিুছুতেই দেখা দিয়েছে অস্থিÍবরতা।

গত ২০ শে আগষ্ট/২০২১ ইং রাত্রে(শুক্রবার) ১২টার সময় কাউখালী উপজেলার কলমপতি ইউনিয়নের পোয়াপাড়া নামক স্থানে টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ (টিটিসি) নির্মানাধীন ভবনের জন্য সিলেটি পাথর বোঝাই (প্রায় ৩৫ মেট্রিক টনের মতো) ট্রাক অতিরিক্ত বোঝাইয়ের কারনে ট্রাকসহ বেইলী ব্রিজ যার দৈর্ঘ- ১৪৫, ফুট প্রস্থ -১৪ ফুট ভেংগে কাউখালী খালে পড়ে যায়। পরদিন (শুক্রবার) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন কাউখালী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো, সামশু দোহা চৌধুরী, ইউএনও নাজমুন আরা সুলতানা,রাঙামাটি সড়ক ও জণপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো,শাহে আরেফিন,কলমপতি ইউপি চেয়ারম্যান ক্যাজাই মারমা, সড়ক ও জণপথ বিভাগের এসএইও দীপন চাকমা সহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা। জণসাধারনের আপাতত চলাচলের জন্য উপজেলা প্রশাসন, সড়ক ও জণপথ বিভাগের সহযোগিতায় তারপর দিন (শনিবার)একটি বাশেঁর সাকো তৈরী করে দেওয়া হলে তা গতকাল মঙলবার রাত্রে প্রবল বর্ষণে সম্পুর্ন ভেংগে যায় এবং ভেংগে যাওয়া ব্রীজের দক্ষিনাংশে মানুষের বেশ কিছু জায়গা ভেংগে কাউখালী খালে বিলীন হয়ে যায়।

গতকাল (বুধবার)সরেজমিনে পরিদর্শনকালে দেখা যায়, বেইলী ব্রিজের দক্ষিণ পাশে দোকান পাট বাড়িঘর কাউখালী বাজার শ্রী শ্রী গীতা মন্দিরটিও বর্তমানে ঝুকিঁপুর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সেই সাথে খালে পানি বৃদ্বি পাওয়ায় দু পাশের লোকজনের পারাপারে এবং মালামাল পারাপার করতে লোকজন কে চরম সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। এ সময় কাউখালী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো,সামশু দোহা চৌধুরী সরেজমিনে পরিদর্শনে আসেন। তিনি বলেন যেহুতু এই বেইলী ব্রিজটি অনেক পুরাতন এবং ঝুকিঁপুর্ন ছিলো। যেহুতু একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে সেহুতু সরকারের সড়ক ও জণপথ বিভাগ যতদ্রুত সম্ভব তা স্থায়ীভাবে পাকা সেতুর ব্যাবস্থা গ্রহন করলে এই উপজেলা বাসির জন্য ভাল হবে। তা ছাড়া কাউখালী সদর হয়ে নাইল্যাছড়ি তারাবুনিয়া সুগারমিল হয়ে রাঙামাটি চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাথে এটি আমাদের অভ্যন্তিরন সড়ক অত্যান্ত গুরুত্বপুর্ন সড়ক বলে তিনি মন্তব্য করেন।

অপরদিকে রাঙামাটি সড়ক ও জণপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহে আরেফিন বলেন যেহুতু এটি একটি দুর্ঘটনা, আর এই দুর্ঘটনার ফলে ভেংগে যাওয় বেইলী ব্রিজটির ৯টি প্যানেল নষ্ট হয়েছে এবং বেশ কিছু যন্ত্রপাতি ব্রিজের নষ্ট হয়ে গেছে আমরা দ্রুত কাজ চালিয়ে যাচ্ছি যাতে ব্রিজটি সংস্কার করে পুনরায় যান ও জন সাধারণ চলাচলের জন্য ব্যবস্থা করে দেওয়া যায়। তা ছাড়া জণসাধারণ আপাতত চলাচলের জন্য বিকল্প একটি বাঁেশর সাকোঁ ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান। এছাড়া সড়ক ও জণপথ বিভাগ রাঙামাটির পক্ষ হতে ঠিকাদার ট্রাকের মালিক এবং চালকের নামে রাঙামাটি কোর্টে ২০ লক্ষ টাকার একটি ক্ষতিপুরুণ মামলা করা হয় বলে তিনি জানান।

কাউখালী উপজেলার সচেতন মহল মনে করেন যত দ্রুত সম্ভব কাউখালী বাজার এই বেইলী ব্রিজটি সংস্কার করা হউক নয়তো স্থায়ীভাবে পাকাঁ সেতু করে দেওয়ার জন্য সরকারের উর্দ্বোতন কতৃপক্ষ ও প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান।