কাপ্তাই হ্রদের বিষফোঁড়া কচুরিপানার জঞ্জাল এবার পরিণত হচ্ছে সম্পদে

82

॥ মঈন উদ্দীন বাপ্পী ॥

কাপ্তাই হ্রদের বিষফোঁড়া হিসেবে পরিচিত কচুরিপানার জঞ্জাল এবার সম্পদে পরিণত করার মিশনে নেমেছে একদল তরুণ স্বপ্নবাজ। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া একদল তরুণ-তরুণী কাপ্তাই হ্রদের এই কচুরীপানার জঞ্জালকে সম্পদে পরিণত করা উদ্যোগ নিয়েছে। কচুরীপানাকেই প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে উন্নতমানের জৈব সারে রূপান্তর করছে তারা। আর এই সার প্রকৃতিকভাবে উৎপাদিত হওয়ায় তা হবে রাসায়নিক প্রভাবমুক্ত এবং এর কার্যক্ষমতাও হবে বেশি। বিষমুক্ত হওয়ায় উৎপাদিত এসব জৈব সার হবে অর্গানিক এবং চাষিরাও এর ব্যবহারে বেশ উৎসাহী। উদ্যোক্তারা স্বপ্নবুনা নামের পাইলট প্রকল্পটি কৃষক-কৃষাণীদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে নিরলসভাবে কাজ করছে। তারা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কচুরীপানা দিয়ে সার উৎপাদনের জন্য কৃষক-কৃষাণীদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করছে। ইতোমধ্যে এই আবিস্কার ইউনিসেফ থেকেও পুরস্কৃত হয়েছ্।ে

কাপ্তাই হ্রদে নৌযোগাযোগের ক্ষেত্রে দীর্ঘ বছর ধরে কচুরীপানা একটি বড় বাধা হিসেবে কাজ করছে। কচুরীপানার কারণে বছরের বেশ কয়েক মাস নৌ-যোগাযোগে বিঘœ ঘটে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি কর্তপক্ষ কাপ্তাই হ্রদ হতে কচুরীপানা অপসারনে নানা উদ্যোগ নিলেও কিছুদিন পর আবারো কচুরীপানায় ভরে যায় কাপ্তাই হ্রদ। এইবার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া একদল স্বপ্নবাজ তরুণ-তরুণী কচুরীপানাকে সম্পদে রূপ দিয়েছে।
বছরের বেশিরভাগ সময় কচুরীপানার জন্য নৌ-যোগাযোগ ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ে। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কাপ্তাই হ্রদ হতে কচুরীপানা অপসারণের জন্য বিভিন্ন সময় উদ্যোগ নিয়েছিলো।তবে সেই উদ্যোগ কখনো সফলতার মুখ দেখিনি। আবারো কচুরীপানার জঞ্জাল কাপ্তাই হ্রদে ভরে যায়। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কাপ্তাই হ্রদের দূষণ কমাতে কচুরীপানার ব্যবহার করার উদ্যোগ নিলেও সফলতার মুখ দেখিনি।

স্বপ্নবাজ দলটির লিডার পার্সন এবং তরুণ উদ্যোক্তা মো. আসাদুজ্জমান বলেন- কাপ্তাই হ্রদ ভ্রমণ করার সময় দেখলাম কচুরীপানার জন্য নৌ-যোগাযোগে বিঘ্ন ঘটছে। সময়ের অপচয় হচ্ছে। নদীর পানি দূষণ করছে। সেই চিন্তা থেকে আমার আইডিয়াটা আসে।

তরুণ এই উদ্যোক্তা আরও বলেন- কচুনীপানা দিয়ে আমরা উন্নতমানের জৈব সার তৈরি করছি। কৃষক আমাদের তৈরি সার ব্যবহার করলে যেমন অধিক ফসল পাবে তেমনি তাদের খরচের পরিমাণ কমে যাবে।

টিমটির লিডার পার্সন বলেন-আমরা জেলার তৃণমূল কৃষকদের মাঝে আমাদের আইডিয়াটা ছড়িয়ে দিতে চাই। কারণ পুরো রাঙামাটি জেলা কাপ্তাই হ্রদ পরিবেষ্টিত। কৃষকরা যদি কচুরীপানার সদ্ব্যবহার করতে পারে তাহলে ফসল উৎপাদনের জন্য তাদের পকেটের টাকা খরচ করতে হবে না। কচুরীপানার সার ব্যবহার করে ফসল উৎপাদন করতে পারবে। কাপ্তাই হ্রদের পানি দূষণমুক্ত হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া স্বপ্নবাজ তরুণদের পাইলট প্রকল্পটি যদি সফল হয় তাহলে কাপ্তাই হ্রদ থেকে দ্রুত কচুরীপানা অপসারণ হবে তেমনি উৎপাদিত ভালমানের জৈব সার ব্যবহার করে কৃষক অধিক ফসল পাবে, সঞ্চিত হবে অধিক অর্থ।