কাপ্তাই হ্রদের মাছ শুধু দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদাই মেটাবে না, বরং রপ্তানির সম্ভাবনাও তৈরি হবে – উপদেষ্টা ফরিদা আখতার

5

।।সাইয়্যেদ মোঃ সাখাওয়াত উল্লাহ।।

কাপ্তাই হ্রদের আধুনিকায়নের মাধ্যমে এটি শুধু দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর কেন্দ্র নয়, বরং রপ্তানিমুখী মৎস্য উৎপাদনের একটি সম্ভাবনাময় খাত হিসেবেও গড়ে তোলা যাবে—এমন মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।

সোমবার (১২ মে) সকালে রাঙামাটির বিএফডিসি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কাপ্তাই হ্রদে পোনা অবমুক্তকরণ এবং জেলেদের মাঝে ভিজিএফ চাল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, কাপ্তাই হ্রদ আমাদের জাতীয় সম্পদ। এই হ্রদকে রক্ষা করতে সরকার প্রয়োজনীয় ও যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

এ সময় ফরিদা আখতার হ্রদের সাথে সম্পৃক্ত হাজারো জেলে, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকার কথা তুলে ধরে বলেন, এই লেক যেন সকলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পথ হয়ে ওঠে, সেজন্য সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।

চাঁদাবাজির বিষয়ে স্থানীয়দের উদ্বেগের প্রসঙ্গ টেনে তিনি জানান, জেনেছি—চাঁদাবাজির কারণে অনেক জেলে ও ব্যবসায়ী সঠিকভাবে কাজ করতে পারছে না। বিষয়টি সরকার গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে এবং দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হ্রদে মাছের প্রজাতি কমে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে তিনি বলেন, এক সময় কাপ্তাই হ্রদে ৮৬ প্রজাতির মাছ ছিল, এখন তা নেমে এসেছে ৬৬-তে। মৎস্য উৎপাদন বাড়াতে জেলেদের আরও আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে, সেই সঙ্গে হ্রদের পরিবেশ দূষণ রোধেও সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এটা শুধু ট্যুরিস্টদের ঘোরার জন্য নয়। ট্যুরিস্টরা এসে যেন পরিবেশ দূষণ থেকে বিরত থাকে সেজন্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের অতিরিক্ত সচিব সুরাইয়া আখতার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজর জেনারেল (অবঃ) অনুপ কুমার চাকমা, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. অনুরাধা ভদ্র, রাঙামাটি জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ, রাঙামাটির পুলিশ সুপার ড. এস এম ফরহাদ হোসেন।

বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের অতিরিক্ত সচিব সুরাইয়া আখতার বলেন, পর্যাপ্ত লোকবল না থাকায় কাপ্তাই হ্রদের কার্যকর তদারকি ব্যাহত হচ্ছে। তবে বিএফডিসিকে আধুনিকায়নের মাধ্যমে ভবিষ্যতে ড্রোন ও সিসিটিভি ক্যামেরার সাহায্যে হ্রদ তদারকির পরিকল্পনা রয়েছে।

আলোচনা শেষে অতিথিরা কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের পোনা অবমুক্ত করেন এবং হ্রদে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞাকালীন ২৬ হাজার ৬৫১ জন জেলে পরিবারের মাঝে ভিজিএফ-এর চাল বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।