কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়লো আরো ১৫দিন

243

॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥

কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণের উপর নিষেধাজ্ঞা আরো ১৫ দিন বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি স্বল্পতার কারণে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আরো ১৫দিন বৃদ্ধি করার আদেশ দিয়েছেন রাঙামাটির জেলাম্যাজিস্ট্রেট। এর আগে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণ বিষয়ে এই পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় জানানো হয়, এ বছর কাক্সিক্ষত হারে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এখন পর্যন্ত হ্রদে পানির উচ্চতা ৯২ এমএসএল রয়েছে। কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের সুষ্ঠু প্রজনন ও বংশ বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি বছর মে মাস থেকে সাধরণভাবে তিন মাসের জন্য মাছ আহরণ ও বাজার জাতকরণের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়ে থাকে। পানির স্তর ১০০ এমএসএল এর নীচে থাকলে সাধারণত মাছ শিকার উন্মুক্ত করা হয় না। গত বছর পানি স্বল্পতায় ১০দিন করে তিন দফায় আরো এক মাস নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বৃদ্ধি করে চারমাস মাছ শিকার বন্ধ রাখা হয়েছিল।
সভায় বিএফডিসির ব্যবস্থাপাক নৌ কমান্ডার তৌহিদুল ইসলাম জানান, বর্তমানে পানি বাড়ছে, আশা করা যায় আর কিছুদিনের মধ্যেই পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে। ব্যবসায়ীরা এবং বিএফডিসি নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ১০দিন বাড়ানোর প্রস্তাব করলেও সভায় বিস্তারিত আলোচনার পর ১৫দিন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। আগামী ১০ আগস্ট পরামর্শ সভায় পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ আল মামুন মিয়া, বিএফডিসির ব্যবস্থাপক কমান্ডার তৌহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ মারুফ, জেলা মৎস্য কর্মকতা শ্রীবাস চন্দ, প্রেসক্লাবের সেক্রেটারী আনোয়ার আল হক, মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হারুনুর রশীদ, সাধারণ সম্পাদক উদয়ন বড়ুয়া, বনরূপা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবু ছৈয়দ, ৭নং ওয়াড কাউন্সিলর জামাল উদ্দিন প্রমুখ।

‘দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম কৃত্রিম জলাধার রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে কার্পজাতীয় মাছের বংশবিস্তার ও প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিতকরণে প্রতিবছরের ১ মে থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত তিন মাস সব ধরনের মাছ শিকার, বাজারজাতকরণ এবং পরিবহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জেলাপ্রশাসন। এ বছরও একইভাবে নিষেধাজ্ঞার সময় তিনমাস দেয়া হলেও হ্রদে পর্যাপ্ত পানি না বাড়ায় আরো ১৫ দিন হ্রদে মাছ আহরণ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার সময়ে নিবন্ধিত জেলেরা প্রতিমাসে ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে খাদ্যশস্য হিসেবে ২০ কেজি করে চাল সহায়তা পান।’

সূত্র আরো জানায়, স্বাভাবিক সময়ের হিসাবে কাপ্তাই হ্রদের পানির পরিমাণ ১০৫ এমএসএল (মীনস্ সী লেভেল) হলে মাছ ধরা শুরু হয়। কিন্তু এবছর পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের অভাবে নির্ধারিত তিনমাস সময়ে হ্রদে পর্যাপ্ত পানি না বাড়ায় সময় বৃদ্ধি করতে হচ্ছে।

মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক উদয়ন বড়ুয়া বলেন, ‘হ্রদে পানি কম থাকায় আমরা ১০ দিন সময় বৃদ্ধির আবেদন জানানো হলেও আলোচনার ভিত্তিতে ১৫দিন সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে।’

জেলা প্রশাসক মো.মিজানুর রহমান বলেন,‘মাছ আহরণের জন্য হ্রদে যে পরিমাণ পানি প্রয়োজন সেটা এখনো না থাকায় সকলের আলোচনার ভিত্তিতে আরো ১৫ দিন সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। আগামী ১০ আগস্ট আবারো সভার মাধ্যমে পরবর্তী নির্দেশনা গ্রহণ করা হবে।’