কেএসআর পরিচালিত আল-আমিন ইয়াতিম খানার শিশুদের দিনব্যপী শিক্ষা সফর অনুষ্ঠিত

606

॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥

অনগ্রসর ও পিছিয়ে পড়া পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটি জেলায় কুয়েত ভিত্তিক একটি সাহায্য সংস্থার আর্থিক অনুদানে পরিচালিত আল-আমিন ইয়াতিম খানার ছাত্রদের নিয়ে দিনব্যপী শিক্ষা সফর অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে এতিমখানার প্রায় ৮০জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে রাঙামাটিতে থেকে এই শিক্ষা সফর কর্মসূচি শুরু হয়। সড়ক পথে শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান পরিদর্শন ছাড়াও চট্টগ্রামে অবস্থিত স্বাধীনতা কমপ্লেক্স (মিনি বাংলাদেশ) ও সমুদ্র সৈকত ঘুরে দেখে।

বিগত দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে কুয়েত ভিত্তিক সাহায্য সংস্থা ‘কুয়েত সোসাইটি ফর রিলিফ’  (কে এস আর) রাঙামাটি শহরের প্রাণকেন্দ্র বনরূপায় অবস্থিত আল আমি এতিমখানার ৮০জন শিক্ষার্থীর লালন-পালন ও ভরণ-পোষণ ছাড়াও শিক্ষার ব্যয়ভার বহন করে যাচ্ছে। ৮০ এর দশকে তৎকালীন অনগ্রসর রাঙামাটির দুঃস্থ, এতিম ও অনাথ শিশুদের শিক্ষার আলোয় আলিকত করার মানসে ইসলামিক সেন্টার রাঙামাটি আল-আমি এতিমখানাটি প্রতিষ্ঠা করে। কিন্তু অভাব অনটনের সমাজ ব্যবস্থার পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘ তিন দশকের স্বশ¯্র সংঘাতময় পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে এই প্রতিষ্ঠানে পিতা-মাতা হারা এতিম শিশুদের ভিড় বাড়তে থাকে। এসব অনাথ শিশুদের ক্রমাগত চাপের মুখে ইসলামিক সেন্টার কর্তৃপক্ষ এক পর্যায়ে প্রতিষ্ঠান চালানোর ক্ষেত্রে বেকায়দায় পড়লে ঢাকায় অবস্থিত বিভিন্ন দাতা সংস্থার স্মরণাপন্ন হয়। শিশুদের জীবন বৃত্তান্ত, পাহাড়ের সামাজিক প্রেক্ষাপট এবং প্রতিষ্ঠানটির অবকাঠামো দেখে এক পর্যায়ে ৪০জন শিশুর ভরণ পোষণের মাধ্যমে আল আমিন এতিমখানার পরিচালনার দায়িত্ব কাধে তুলে নেয় কেজিআরসি এবং পরবর্তীতে কেএসআর।

এতিম খানার সুপার থেকে শুরু করে এই প্রতিষ্ঠানের সকল আবাসিক শিক্ষক এবং অন্যান্য কর্মচারী ‘কুয়েত সোসাইটি ফর রিলিফ’ (কে এস আর)এর অর্থায়নে পরিচালিত হয়। এতিমখানার সুপার মাওঃ ওয়ালিউল্লাহ দৈনিক রাঙামাটিকে জানান, কে এস আর এর কান্ট্রি ডিরেক্টর তথা বাংলাদেশ ক্লাস্টারের মহা পরিচালক ড. গাজি মোহাম্মদ জহিরুল ইসলামের সরাসরি তত্ত্বাবধানে আমরা এতিম শিশুদের সর্বোচ্চ মমতা এবং মধ্যবিত্ত সুযোগ সুবিধায় লালন পালন করে থাকি। তিনি জানান, বছরে দুইবার শিশুদের নতুন কাপড় চোপড় ঈদ সালামী প্রদান ছাড়াও তাদের লেখা-পড়ার যাবতীয় ব্যয় প্রতিষ্ঠান থেকে বহন করা হয়। এই প্রতিষ্ঠানে তাদের থাকা খাওয়া ছাড়াও শ্রেণির পাঠদানের ব্যবস্থা রয়েছে। তবে এতিমরা তাদের পছন্দমতো বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করে থাকে।

এক প্রশ্নের জবাবে মাওঃ ওয়ালিউল্লাহ জানান, এতিম শিশুদের নির্বাচনের যাবতীয় প্রক্রিয় দাতা সংস্থা সরাসরি সম্পন্ন করে। আমরা শুধু প্রয়োজনীয় তথ্যাদিসহ এতিম শিশুদের ছবি প্রেরণ করি। কাদের জন্য সংস্থা অনুদানের অর্থ প্রদান করবে সেটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার, এখানে আমাদের কোনো হাত নেই।

তিনি জানান, প্রতি বছরই শিক্ষা সফর ছাড়াও অন্যান্য জাতীয় অনুষ্ঠানে শিশুদের অংশ গ্রহণ করানো হয়। এবারের শিক্ষা সফরে দিনবপী দর্শনীয় স্থান পরিদর্শন ছাড়াও শিশুদের জন্য নানা ধরণের প্রতিযোগীতার আয়োজন ছিল বলে জানান এতিম খানার সুপার মাওঃ ওয়ালিউল্লাহ।