ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর ৫ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের দাবি পিসিপির

48

॥ প্রেস বিজ্ঞপ্তি ॥

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর সরকারি চাকুরিতে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর/আদিবাসীদের ৫ শতাংশ কোটা পুনবর্হালের দাবি জানিয়েছে সন্তু লারমা সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও ইউপিডিএফ সমর্থিত বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতারা। গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে দুই ছাত্র সংগঠনের নেতারা কোটা নিয়ে সম্প্রতি দেয়া আপিল বিভাগের রায়কে অগ্রহণযোগ্য ও বৈষম্যমুলক আখ্যায়িত করে তা প্রত্যাখান করেছেন।

২২ জুলাই পিসিপির কেন্দ্রীয় তথ্য প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অন্বেষ চাকমা স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২১ জুলাই আপিল বিভাগ সাধারণ আসনে ৯৩%, মুক্তিযোদ্ধা ৫%, প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গ কোটায় ১% এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটায় ১% আসন বরাদ্দ করে চুড়ান্ত রায় প্রদান করেন। দেশে বসবাসরত ৫০টির বেশি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য মাত্র ১% কোটা বরাদ্দ রেখে আপিল বিভাগের রায় অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ।

বিবৃতিতে বলা হয় দেশের সবচেয়ে দরিদ্রতম ও অনগ্রসর অংশ হল আদিবাসীরা। একদিকে ভিন্ন ভাষা সংস্কৃতি ও জীবনধারা যেমন আদিবাসীদেরকে মুল জনগোষ্ঠী থেকে সার্বিকভাবে পিছিেিয় রাখতে বাধ্য করেছে অপরদিকে রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়ন, শোষণ-নিপীড়ন আদিবাসীদের জনজীবনকে অস্তিত্বের হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে আদিবাসীরা দেশের মুল জনগোষ্ঠীর সাথে কোনভাবেই উন্মুক্ত প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারছে না। মাত্র কয়েকটি জনগোষ্ঠী ব্যতীত অধিকাংশ আদিবাসী জনগোষ্ঠী থেকে এখনও বিসিএসে প্রতিনিধিত্ব নেই এবং তাদের রাষ্ট্রীয় কাঠামোয় অর্ন্তভুক্তকরণের কোন নির্দেশনা আপিল বিভাগের রায়ে প্রতিফলিত হয়নি।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশ বিনির্মাণে রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে আদিবাসীদের অংশগ্রহণ অত্যন্ত প্রয়োজন। এ প্রয়োজন মেটানোর জন্যই ১ম ও ২য় শ্রেণীর সরকারি চাকুরিতে আদিবাসীদের জন্য ন্যুনতম ৫% কোটা পুনবর্হালের জন্য পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ জোর দাবি জানাচ্ছে।

উল্লেখ্য ২০১৮ সালের ০৪ অক্টোবর সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সরকারি চাকুরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে নবম গ্রেড (পুর্বতন ১ম শ্রেণী) এবং ১০ম থেকে ১৩তম গ্রেডের ( পুর্বতন ২য় শ্রেণী) পদে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি বাতিলের পরিপত্র জারি করায় এর পরবর্তীতে বিসিএসে পাহাড় এবং সমতলের আদিবাসীদের সরকারি চাকুরিতে প্রবেশের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে যায়। অথচ আগে সরকারি চাকুরিতে উক্ত গ্রেডে নিয়োগের ক্ষেত্রে আদিবাসীদেনর জন্য ৫% কোটা চালু ছিল।

ইউপিডিএফ (প্রসিত গ্রুপ) সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি অংকন চাকমা ও সাধারণ সম্পাদক অমল ত্রিপুরা যৌথ বিবৃতিতে আপিল বিভাগের রায়কে প্রত্যাখান করে বলেছেন, সমতলে বসবাসরত ৫০টির বেশি পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর সরকারি চাকুরিতে ১% কোটা পর্যাপ্ত নয়। ৫০টির বেশি জাতিসত্তার জন্য মাত্র ১% কোটা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রতি বৈষম্য। আপিল বিভাগের রায় অবিবেচনাপ্রসূত বলেও উল্লেখ করেছেন পিসিপির নেতৃবৃন্দ। সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের রায় প্রত্যাখান করে ৫% ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটা পুনর্বাহালের দাবি জানিয়ে সম্প্রতি রাঙামাটিতে বিক্ষোভ করেছেন বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতাকর্মীরা।