॥ শহিদুল ইসলাম হৃদয় ॥
রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাটে বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফের সমাধি অবস্থিত। দূর দুরান্ত থেকে পর্যটকরা এখানে আসে, সড়ক পথে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম এটি। আর এই রাস্তারই বেহাল অবস্থা। এমনটাই অভিযোগ করে স্থানীয়রা বলেন ঘিলাছড়ি থেকে বুড়িঘাট সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গনের কারণে এ পথে যাতায়াতকারীদের বিভিন্ন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। রাস্তার মাঝে এই গর্ত গুলো সৃষ্টি হওয়ার দীর্ঘ দিন পেরিয়ে গেলেও সংস্কারের কোন চিহ্ন এখনো পর্যন্ত চোখে পরেনি বরংচ এ অবস্থায় চলছে ভারী যানবাহন। ফলে গর্ত গুলো আরো ভয়ংকর রূপ ধারণ করছে বলেও জানান তারা। তারা বলেন প্রতিদিন বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী ও স্থানীয় লোকজন এ পথে যাতায়াত করে। তাদের সকলরেই এ রাস্তাটির এ অংশগুলোতে এসে এক প্রকারের বিরক্তিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। বিশেষ করে রাম হরিপাড়া, পুলিপাড়া, আমলকি পাড়া ও ১৭নং টিলা এলাকার সড়কের বিভিন্ন জায়গায় ছোট বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
নানিয়ারচর বুড়িঘাট এলাকার বাসিন্দা ও রাঙামাটি কৃষি প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থী জাইফা হাওলাদার শীমু বলেন, আমি প্রতিদিন এই পথ দিয়ে আমার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসা যাওয়া করি। অনেক দিন ধরে দেখছি রাঙামাটি থেকে বুড়িঘাট আসার এই রাস্তা গুলো ভাঙ্গা পড়ে আছে, এর কারণে যাতায়াতে আমাদের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। যেমন সিএনজিতে আসলে এই স্থান গুলোতে ভাঙ্গা ও গর্তের কারণে সিএনজির সকল যাত্রীদের নেমে অল্প কিছু পথ পায়ে হেটে যেতে হয়। এই যে কিছুদিন আগে বৃষ্টি হওয়ার কারণে গর্তগুলোতে পানি জমে ছিলো আমি মোটরসাইকেল থেকে নেমে হেঁটে যাওয়ার সময় একটি সিএনজি গর্তে নামিয়ে দিলে ময়লা পানির ছিটকে এসে আমার গায়ে পড়ে এবং আমার প্রাতিষ্ঠানিক ইউনিফর্ম নষ্ট হয়ে যায়।
এছাড়াও অনেক সময় দেখা যায় বিভিন্ন রোগীকে উন্নত চিকিৎসার উদ্দেশ্যে বুড়িঘাট থাকে চট্টগ্রাম বা রাঙামাটিতে নেয়া হয় তাদের কি অবস্থার সম্মুখীন হতে হয় একবার ভাবুন। যেমন অনেক গর্ভবতী রোগীকে জরুরী চিকিৎসার জন্য রাঙামাটি সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। পুরো রাস্তায় ভালোভাবে যাতায়াত করতে পারলেও দেখা যায় যে এখানে এসে এক প্রকারের বেকায়দায় পারতে হয়। তাই রাস্তার ভাঙ্গা অংশগুলো দ্রুত সংস্কার বা মেরামত করা দরকার বলে আমি মনে করি। এ অংশটুকু ঠিক হলে এ পথ দিয়ে যাতায়াতকারী সকলেই উপকৃত হবে। রাস্তার এই অংশ গুলো যত দ্রুত সম্ভব যাতায়াত উপযোগী করে দিতে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
নানিয়ারচর প্রেসক্লাব সভাপতি মেহেদী ইমাম বলেন, নানিয়ারচর উপজেলায় সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমের অনেক দৃশ্য ইতিমধ্যে আমাদের চোখে পড়েছে যার সুফলও ভোগ করছে এখানকার মানুষ। কিন্তু ঘিলাছড়ি থেকে বুড়িঘাট যাওয়ার রাস্তার কিছু স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের মাঝে এমন ভাঙ্গনে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। তাই গর্ত গুলো শীঘ্রই সংস্কার বা মেরামত করা প্রয়োজন। বিভিন্ন ছোট বড় যানবাহনের চালক ও যাত্রী সহ সর্বসাধারণের চলাচলের কথা চিন্তা করে কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নজরে এনে দ্রুত সমাধান না করলে এজায়গায় বড় কোনো দুর্ঘটনার আশঙ্কা করা যাচ্ছে।
রাঙামাটির এক সিএনজি চালক বলেন, আমি দীর্ঘ ৪ বছর ধরে সিএনজি চালাই এর মধ্যে জেলার অনেক দুর্গম এলাকায় নতুন সড়ক নির্মাণ ও পুরাতন সড়ক মেরামত বা সংস্কার হতে দেখেছি এবং পর্যটন শহর রাঙামাটিতে যাতায়াতের সু-ব্যবস্থার লক্ষ্যে সড়ক ব্যবস্থারও অনেক উন্নয়ন করেছে বর্তমান সরকার।
যেহেতু আমরা ভাড়ায় চালিত গাড়ি চালায় সেহেতু বিভিন্ন জায়গায় যাত্রী নিয়ে আমাদের যেতে হয়। কিন্তু নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাট যাওয়ার পথে কিছু কিছু স্থানে ছোটখাটো গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় যাতায়াতে কিছুটা সমস্যা হয়। এই গর্ত গুলো সংস্কার করা হচ্ছেনা বলেই বৃষ্টির পানিতে ধীরে ধীরে গর্ত গুলো আরো বড় ও ভয়ংকর রূপ ধারণ করছে এবং এর আশেপাশেও ছোট-বড় আরো অনেক গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ যদি এই গর্ত গুলো ভরাট বা সংস্কার করে দেয় তাহলে এরাস্তা দিয়ে ট্রাক, মোটরসাইকেল ও সিএনজি চালক ভাইয়েরা অনায়াসে চলাচল করতে পারবে এবং যাত্রীদেরও কোনো সমস্যা হবে না।
নানিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো ফজলুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি প্রতিবেদককে জনান, আমি ঐ স্থানে গিয়ে রাস্তার অবস্থা দেখে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এবিষয়ে অবহিত করবো।