জমি সংক্রান্ত শত্রুতার জেরে নানিয়ারচরে মাছের ঘের ধ্বংসের অভিযোগ

340

নানিয়ারচর প্রতিনিধিঃ

পাহাড়ি জমি ও ফসলি জমির সীমানা নিয়ে রাঙামাটির নানিয়ারচরে কথা কাটাকাটি ও হুমকি পরবর্তি মাছের ঘের ধংসের অভিযোগ উঠেছে। এতে অসহায় হয়ে পড়েছে ভুক্তভোগী পরিবার। শুক্রবার সকালে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নানিয়ারচর উপজেলার ইসলামপুর ২নং ওয়ার্ড এলাকায় সোবাহান বাবুল নামের এক মাছ চাষীর প্রায় ২একর জমির জলাশয় (ক্রীক) এর মাছ বাধের জাল কেটে ছেড়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সোবাহান বাবুল।

সোবাহান জানান, ১৯৯৬সালে তিনি, তার ভাই ও মা মিলে তিন একর প্রথম শ্রেণির ধানের জমি ক্রয় করে চাষাবাদ করে আসছেন। পাশেই কদম আলী নামের এক ব্যক্তির পাহাড় রয়েছে। কদম আলীর সাথে জমি নিয়ে কখনও কোন প্রকার বিভেদ ছিলনা তাদের। কিন্তু কদম আলী মারা যাবার পরে গত বছর দেড় ধরে তার ছেলেরা আমার সাথে অবৈধভাবে জমি দখল ও বাক বিতণ্ডা শুরু করেন। এনিয়ে বেশ কয়েক বার অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে আসছিল কদম আলীর ছেলেরা। আমার এক ছেলে ও আমি চাষ করার জন্য জমিতে গেলে সে জোরপূর্বক চাষাবাদে কোন কাজ করতে দেয়নি।

তিনি আরো জানান, গত ২৩তারিখ বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে বসা হলে কদম আলীর ছেলে মোঃ ইব্রাহিম, মোঃ দুলাল ও তার অপর এক আত্মীয় আইয়ুব আলী সোবাহান বাবুলকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। এছাড়া সে কিভাবে মাছ চাষ করে তা দেখে নেওয়ার কথা বলেও হুমকি দেয়। পরদিন সকালে মাছের ঘেরে এসে বাধের জাল কাটা ও মাছ ভেসে যাওয়ার দৃশ্য দেখে মাটিয়ে লুটিয়ে পড়েন তিনি।

স্থানীয় রফজেল মন্ডল বলেন, এই জমিটি ক্রয় করার শুরু থেকেই আমি এই জমি সম্পর্কে জানি। ওই জমিতে আমি কয়েকবার ধান চাষ ও করেছিলাম। কদম আলী বেঁচে থাকতে তাদের উভয়ের মধ্যে কোন শত্রুতাপূর্ণ আচরণ দেখিনি। তবে গত বছর খানেক হয় এই জমির সীমানা নিয়ে তাদের মধ্যে বাক বিতণ্ডা করতে দেখেছি। কদম আলীর ছেলেরা অন্যায়ভাবে তাদের পাহাড়ি জমি রেখে নিচের ধানি জমি দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এবিষয়ে স্থানীয় শাহিন মল্লিক বলেন, আমি সেই ছোট বেলা থেকেই দেখে যাচ্ছি বাবুল এই জায়গাটিতে চাষাবাদ করছে। আগে কখনও কোন ঝামেলা ছিল না। বাবুলের জায়গার পাশে কদম আলীর পাহাড়ি জমি রয়েছে। কিন্তু বিগত সময়ে কদম আলীর পাহাড় ধ্বসে বাবুল এর নিচু জমিতে মাটি জমা হয়। পাহাড় ধ্বসের ফলে মাট জমাট হওয়া প্রায় ৫শতক জায়গা কদম আলীর ছেলেরা দাবি করলে এই দ্বন্দের সৃষ্টি হয়। সোবাহান বাবুল নিজ ক্রয়ে ৬৫কেজি ও মৎস অধিদপ্তর থেকে দেওয়া ১৩কেজি মোট ৭৮ কেজি মাছের পোনা এই ঘেরে অবমুক্ত করে।

স্থানীয় মোঃ ফারুক জানায়, এই জমিটি সোবাহান বাবুলের রেকর্ডভুক্ত জমি। সে পাহাড়ে অনেক কষ্ট করে এই জায়গায় একটি মাছের খামারের মত পরিবেশ তৈরী করেছে। আমার জানামতে সে এই ঘেরে এবছর বিভিন্ন জাতের মাছের পোনা ছেড়েছে। এতদিনে পোনা মাছ গুলো বড় হয়ে পরিপূর্ণ বয়সে এসেছে। যারাই এই ঘৃণীত কাজ টি করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত সাপেক্ষে তাদের কে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

এবিষয়ে জানতে চাইলে নানিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ সুজন হালদার জানান, এবিষয়ে আমাদের কাছে একটি অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মুঠোফোনে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মোঃ দুলাল জানান, এবিষয়ে আমরা কিছুই জানিনা। তার সাথে জমি সংক্রান্ত বিবাদ আছে। তবে তাকে আমরা কোন প্রকার হুমকি দেইনি।