॥ এম নাজিম উদ্দীন ॥
ইউনিসেফ চিফ অব ফিল্ড সার্ভিসেস মিজ সাজা ফারুক আবদুল্লাহ বৃহস্পতিবার রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরীর সাথে তার অফিসে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।
সাক্ষাৎকালে মিজ সাজা ফারুক আবদুল্লাহ বলেন, পার্বত্যঞ্চলে জিওবি-ইউনিসেফ কর্তৃক পরিচালিত পাড়াকেন্দ্রের মাধ্যমে এখানকার দুর্গম এলাকার শিশুরা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা এবং মা ও কিশোরীরা স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে। তিনি চেয়ারম্যানকে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন বলে জানান। তিনি কোভিড চলাকালীন এবং কোভিড পরবর্তীতে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে যে ভূমিকা রেখেছে তার প্রশংসা করেন। এছাড়া প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য পরিষদকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, জিওবি-ইউনিসেফ কর্তৃক পরিচালিত পাড়াকেন্দ্রের কার্যক্রম ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা আছে। এ বিষয়ে তিনি তার উদ্বেগের বিষয়টি চেয়ারম্যানকে জানান। তিনি বলেন, এ কার্যক্রমটি চলমান না থাকলে তিন পার্বত্য জেলার প্রায় ৪৮০০ পাড়াকেন্দ্রের মাধ্যমে দুর্গম পার্বত্যাঞ্চলে শিশুদের উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা এবং মা ও কিশোরীদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দুর্গম পার্বত্যাঞ্চলের প্রান্তিক পর্যায়ের শিশুদের উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা এবং মা ও কিশোরীদের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চলমান রাখার জন্য প্রকল্পটি সরকারের রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের বিষয়টি বিবেচনার জন্য তিনি পরামর্শ রাখেন।
চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী বলেন,জিওবি-ইউনিসেফ কর্তৃক পরিচালিত পাড়াকেন্দ্রের কার্যক্রমগুলো বেশ প্রশংসনীয়। এখানে শিশুরা পড়ালেখার পাশাপাশি ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডও সম্পাদন করে থাকে। তিনি পাড়াকেন্দ্রগুলো সরকারের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর এবং পাড়াকেন্দ্রগুলোর স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণে গুরুত্বরোপ করেন। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে স্বাস্থ্য খাতে একজন স্বাস্থ্যকর্মী পুরো একটি ইউনিয়নে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে থাকে। জেলার ইউনিয়নগুলো আয়তনে বড় ও দুর্গমতা থাকায় একজন স্বাস্থ্যকর্মীর পক্ষে পুরো ইউনিয়নে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা সম্ভব হয়ে ওঠেনা। সেজন্যে তিনি পাড়াকেন্দ্রে নতুন একটি পদ সৃষ্টি করে তাদেরকে ইউনিসেফের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য বিষয়ে প্রশিক্ষণ এবং পরিষদের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সরঞ্জাম প্রদানের প্রস্তাব করেন। তিনি বলেন, পার্বত্য চুক্তির আলোকে জনপ্রতিনিধিত্বশীল পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ এবং পার্বত্য জেলা পরিষদগুলির সৃষ্টি। এছাড়া জেলা পর্যায়ের বেশিরভাগ সরকারি সংস্থা জেলা পরিষদের সরাসরি তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়ে আসছে। জিওবি-ইউনিসেফ পরিচালিত পাড়াকেন্দ্রের সাথে এসব সরকারি সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলির সম্পৃক্ততা থাকায় এসব পাড়াকেন্দ্র পরিচালনায় প্রশাসনিকভাবে পরিষদের আরও অধিকতর অংশগ্রহণ প্রয়োজন। তিনি নতুন প্রকল্প প্রস্তাবনায় এবিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ইউনিসেফ প্রতিনিধির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
সাক্ষাৎকালে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব আশরাফুল ইসলাম,নির্বাহী কর্মকর্তা নূরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান, ইউনিসেফের চিফ অব ফিল্ড অফিস চট্টগ্রাম মিজ মাধুরী ব্যানার্জিসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।