ঝুঁকিপূর্ণভাবে বৈদ্যুতিক খুঁটি ঘেষে নানিয়ারচরে ভবন নির্মাণ

294

নানিয়ারচর প্রতিনিধি

ইমারত নীতিমালা না মেনে ঝুঁকিপূর্ণভাবে নানিয়ারচরে ভবণ নির্মাণ করে যাচ্ছে ধনঞ্জয় মল্লিক নামে এক ব্যক্তি। ৩৩হাজার ও ১১হাজার ভোল্ট ক্ষমতাসম্পন্ন বৈদ্যুতিক সংযোগ খুঁটির পাশে ঝুঁকিপূর্ণভাবেই ভবন নির্মাণ করছেন তিনি।

রোববার সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সম্প্রতি নানিয়ারচর উপজেলায় উদ্বোধন হওয়া নানিয়ারচর সেতু সংলগ্ন সিএনজি স্টেশন এলাকায় উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বৈদ্যুতিক পিলার ও নানিয়ারচর-লংগদু সড়ক ঘেষে অনুমোদনহীন বহুতল ভবন নির্মাণ করছে এই ব্যক্তি। এতে নির্মাণকর্মীরাও ঝুঁকিপূর্ণভাবেই নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

নানিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি শুনেছি। বিদ্যুৎ ও সড়ক বিভাগের সাথে কথা বলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

এই বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রগতি চাকমা বলেন, উপজেলা থেকে অনুমোদন নিয়ে ভবন নির্মাণের কথা থাকলেও এখানে অনুমোদন না নিয়ে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে।

সম্প্রতি নানিয়ারচর-লংগদু সড়ক প্রকল্পের নানিয়ারচর সেতু সংলগ্ন সড়কের ২পাশে অধিগ্রহণ করা জমির অংশে ভবনটি নির্মাণ হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে সড়ক ও জনপদ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মুসা জানান, নির্মাণাধীন ভবনটি সড়কের জায়গার আওতায় নয়। তবে অধিগ্রহণ করা জমি সড়ক বিভাগকে সম্পূর্ণ বুঝিয়ে দেওয়া হলে নিশ্চিত করে বলা যাবে ভবনটি অবৈধ দখল হয়েছে কিনা।

স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি কোন প্রকার নিয়মনীতি না মেনে ভবন নির্মাণ করে যাচ্ছেন। ঝুঁকিপূর্ণ সংযোগের নিচে হেলমেট ও সুরক্ষা সামগ্রী ছাড়া নির্মাণ শ্রমিকরা নির্মাণ কাজ করে যাচ্ছে। এবিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী জানান, অসচেতনতাবশত ঝুঁকিপূর্ণভাবে ভবন নির্মাণ করে ধনঞ্জয় মল্লিক ভূল করছেন। ভবন নির্মাণকল্পে তার সচেতনতা অবলম্বন করা উচিৎ।

নানিয়ারচর বাজার ব্যবসায়ী পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ সাহার নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা তো আসলে প্রশাসনিক বিষয়। আমি যতটুকু জানি ভবণ নির্মাণ করতে গেলে প্রশাসনের অনুমোদন দরকার হয়। এখন ধনঞ্জয় মল্লিক অনুমোদন নিয়েছে কিনা সেটা প্রশাসনের কেউ বা ধনঞ্জয় বলতে পারবে। তাছাড়া বিপজ্জনকভাবে এমন ভবন নির্মাণ করায় ঝুঁকি থাকে।

বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও ঠিকাদার অষোক তালুকদার জানান, অনুমোদন নিয়ে ভবন নির্মাণ হয়েছে কিনা লোকাল প্রশাসনের সে বিষয়ে খোঁজ নেওয়া উচিৎ। অবশ্য ঝুঁকিপূর্ণভাবে ভবনটি নির্মাণ করা হচ্ছে। ২য় তলার কাজ শেষ প্রায়। ৩য় তলার কাজ সম্পন্ন হলেই শর্ট সার্কিটের মারাত্মক ঝুঁকি বাড়বে। ঝড় বৃষ্টিতে বা বাতাসে পুরো ভবন বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

এবিষয়ে ভবনের মালিক ধনঞ্জয় বলেন, সড়ক অথোরিটি থেকে লিখিতভাবে অনুমোদন নেওয়া হয়নি। তবে বিদ্যুৎ বিভাগের সাথে বৈদ্যুতিক খুঁটি সরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে কথা বলেই তিনি ভবন নির্মাণকাজ শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, এর আগেও যারা ভবন নির্মাণ করেছে তারা উপজেলা থেকে কোন অনুমোদন নেয়নি। আর উপজেলা থেকে ভবন নির্মাণে কোন অনুমোদন দেওয়া হয়না।

মহালছড়ি বিদ্যুৎ বিভাগের আবাসিক প্রকৌশলী জিয়া উদ্দিন (অ.দা) কে ফোনে না পেয়ে লাইনম্যান মামুনের সাথে যোগাযোগ করলে বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, ঝুঁকিপূর্ণভাবে ভবন নির্মাণ সম্পর্কে আমরা শুনেছি। তবে আমাদের সাথে কেউ এবিষয়ে কথা বলতে আসেনি এবং কেউ অভিযোগও করেনি।