॥ থানচি প্রতিনিধি ॥
তিন পার্বত্য জেলা সীমান্ত সড়ক প্রকল্প কাজ শেষে হলে জেলাগুলোর আন্তঃআঞ্চলিক সংযোগ স্থাপন হবে তেমনী আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। সেই সঙ্গে সীমান্তে নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতি হবে বলে জানিয়েছেন সেনা প্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ।
রবিবার (২১ আগস্ট) সকালে থানচি এবং আলীকদম উপজেলায় নির্মাণাধীন সীমান্ত সড়কের কাজগুলো পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে সেনা প্রধান হেলিকপ্টারযোগে থানচি উপজেলায় পৌঁছান। সেখান থেকে সেনাবাহিনীর গাড়িতে করে থানচি এবং আলীকদম উপজেলায় নির্মাণাধীন সীমান্ত সড়কের কাজগুলো পরিদর্শন করেন।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কোরের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাসুদুর রহমান, বান্দরবান ৬৯ সেনা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জিয়াউল হক, সীমান্ত সড়ক প্রকল্প পরিচালক কর্নেল এএনএম ফয়েজুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত উপ-প্রকল্প পরিচালক মেজর সাঈদ মো. জাহিদুর রহমানসহ সেনাবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় সেনা প্রধান সেনা সদস্যদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আমাদের এমন একটা কাজের সাথে সংপৃক্ত হওয়া ভাগ্যের ব্যাপার এবং সেই সাথে আমাদের সরকার প্রধানকেও ধন্যবাদ দিতে চায় যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের উপর আস্থা রেখেছে এবং এই দায়িত্ব দিয়েছে। আমি বিশেষ ভাবে ধন্যবাদ দিতে চাই ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনষ্ট্রাকশন ব্রিগেড কমান্ডারসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে। আপনারা সরকার কর্তৃক প্রদত্ত দায়িত্ব অত্যন্ত সুন্দর ভাবে পালন করুন।
তিনি আরো বলেন, দেশের যে সমস্ত এলাকায় আমরা দায়িত্ব পালন করি তার মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম হলো অন্যতম দূর্গম এলাকা। এখানে দায়িত্ব পালন করা অত্যন্ত কষ্টকর। তবুও আপনার আপনাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সুন্দর ভাবে পালন করে যাচ্ছে।
সেনাসূত্র জানায়, সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কোর (ইসিবি) তত্ত্বাবধানে বান্দরবান, রাঙ্গামাটি এবং খাগড়াছড়ি তিন পার্বত্য জেলায় এক হাজার ছত্রিশ কিলোমিটার সীমান্ত সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। প্রথম পর্যায়ে ৩১৭ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের কাজ ৭টি সেগমেন্ট বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে পূর্ণাঙ্গ কাজটি বাস্তবায়ন করা হবে। ২০১৮ সালের জুন থেকে ২০২৪ সালের মধ্যেই সড়কটি শতভাগ বাস্তবায়নের কাজ চলমান রয়েছে। প্রকল্পটি রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, এবং বান্দরবান এই তিন পার্বত্য জেলায়।
সড়কটি নির্মিত হলে সীমান্ত সড়ক যোগাযোগের মাধ্যমে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়াতে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার হবে, সীমান্তের দু’পাশের অবৈধ ব্যবসা, অস্ত্র, মাদক, চোরাচালান বন্ধে নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে, সরকারি নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে এবং সীমান্ত এলাকায় উৎপাদিত কৃষি পণ্য সরাসরি দেশের মূল ভূখন্ডের পৌছানো সহজ হবে এবং দেশী ও বিদেশী পর্যটকদের জন্য পর্যটন ব্যবস্থা উন্নতিসহ সীমান্ত এলাকার মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সাধিত হবে এবং রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান পার্বত্য জেলার মধ্যে আন্তঃ আঞ্চলিক সংযোগ স্থাপন হবে যা পার্বত্য অঞ্চলের নিরাপত্তা কার্যক্রম ও শান্তি রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।