॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥
কচুক্রি মহলের ইন্দনে পাহাড়কে অস্থিতিশিল করার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে শেষ পর্যন্ত খাগড়াছড়ি জেলা শহরে ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। শনিবার দিনভর শহরে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় শহরে এক অস্বস্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এ দিকে ক্ষণে ক্ষণে ছড়িয়ে পড়ছে নানা গুজব। দিনভর সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে।
ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। পরে বেলা দুইটায় সদর উপজেলা ও পৌরসভা এলাকায় পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারির বিজ্ঞপ্তি দেয় জেলাপ্রশাসন।
খাগড়াছড়ি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকারের সই করা আদেশে বলা হয়, যেহেতু খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার খাগড়াছড়ি পৌরসভা ও সদর উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি এবং জনগণের জান ও মালের ক্ষতিসাধনের আশঙ্কা রয়েছে, তাই বেলা দুইটা থেকে আগামী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা আদেশ জারি থাকবে।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি সদর উপজেলায় ৮ম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবিতে ‘জুম্ম-ছাত্র জনতার’ ব্যানারে শনিবার দিনব্যাপী অবরোধ কর্মসূচি পালিত হচ্ছিল। এতে খাগড়াছড়ির সঙ্গে সড়কপথে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। বিক্ষুব্ধরা ভোর থেকেই সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে ও গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ করে রাখেন।
ওই স্কুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সকাল-সন্ধ্যা অবরোধের মধ্যেই খাগড়াছড়ি সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষের উপজেলা, স্বনির্ভর, চেঙ্গী এস্কায়ার, নারিকেল বাগান, মহাজনপাড়া এলাকায় পাহাড়ি-বাঙালী দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে ব্যাাপক উত্তোজন আর ইটপাটকেলের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। আহত হয় উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জনেরও বেশি।
পুলিশ, সোনাবাহিনী সাময়িকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হলেও আরো অবনতির আশঙ্কায় ১৪৪ ধারা জারি করেন জেলা প্রশাসন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার খাগড়াছড়ি পৌরসভা ও সদর উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি এবং জনগণের জান ও মালের ক্ষতিসাধনের আশঙ্কা রয়েছে। তাই ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ১৪৪ ধারা জারির আদেশ করা হয়।
ইতোমধ্যে ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত চয়ন শীল নামে এক কিশোরকে আটক করেছে পুলিশ। ওই কিশোর বর্তমানে ৫ দিনের রিমান্ডে রয়েছে। অজ্ঞাতনামা আরো ২ জন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের দাবিতে শনিবার জুম্ম ছাত্র-জনতার ডাকে খাগড়াছড়িতে সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ ডাকা হয়।
শনিবার সকাল থেকে অবরোধের কারণে খাগড়াছড়ির সঙ্গে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাঙামাটির সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া খাগড়াছড়ি জেলা সদরের সাথে দীঘিনালা, পানছড়ি, রামগড়, মহালছড়িসহ ৯ উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ে।
