॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥
রাঙামাটি জেলার দুর্গম বরকল উপজেলার রাকিবুল নিজের প্রচেষ্টায় এখন একজন সফল ফিল্যান্সার। ফ্রিল্যন্সিং করে তিনি বর্তমানে মাসে অর্ধলক্ষ আয় করছেন বলে জানিয়েছেন। রাকিবুল বলেন, লেখাপড়া করে চাকুরীর পিছনে না ঘুরে অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে একজন যুবক ইচ্ছা করলেই ফিল্যান্সিং এর মাধ্যমে আকর্ষণীয় উপার্জন করতে পারে। তিনি উপজেলার মো. মোসলেম আকনের ছেলে। এক বোন ও দুই ভাইয়ের সংসারে রাকিবুল বড়। রাকিবুলের বয়স যখন ১৬ পার হয়নি তখন থেকেই ফ্রিল্যান্সিং শুরু করেন তিনি।
মো.রাকিবুল ইসলাম (১৯) লেখাপড়া করেন ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের কম্পিউটার বিভাগে। স্কুলে পড়ালেখার সময়ই শুরু করেছিলেন ফ্রিল্যান্সিং। এখন মাসে আয় করছেন অর্ধ লক্ষ টাকারও বেশি। পাশাপাশি অন্যদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন অনলাইনে কাজ করে উপার্জন করার।
রাকিবুল জানান, বর্তমানে চাকরি পাওয়া বেশ কঠিন বিষয় হয়ে পড়েছে। হাজার হাজার বেকার ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অনলাইনে প্রচুর কাজ রয়েছে। এখান থেকে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। তাই চাকরির পেছনে না ঘুরে একটা কোর্স করে অনলাইনে কাজ করেও স্বাবলম্বী হওয়া যায়।
রাকিবুলের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তার অনলাইনে আয়ের বিষয় বেশ আগ্রহ ছিল। নিজের অদম্য ইচ্ছে থেকেই ২০২০ সালে ইন্টারনেটে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করেন। শুরুতে অভিজ্ঞতাটা ভালো ছিল না তার।নেননি কোন প্রশিক্ষণও।শুধুমাত্র কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে ইন্টারনেটের বিভিন্ন লেখা পরে এবং ইউটিউবে ভিডিও দেখে ফ্রিল্যান্সিং শিখেন তিনি। আর এই কঠোর পরিশ্রমের কারনে ধীরে ধীরে সফলতার দেখা পেতে শুরু করেন। একসময় তার আয়ও বাড়তে থাকে।পরবর্তীতে তিনি ফ্রিল্যান্সিং বিষয় আগ্রহী ছেলে মেয়েদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করে।
রাকিবুল বলেন,’পরিবারে আমরা দুই ভাই ও এক বোন।এর মধ্যে আমার দায়িত্বটা একটু বেশি। পড়ালেখার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং থেকে আমার আয়ের পথ খুলেছে। পরিবারকে অর্থনৈতিক দিক থেকে সাপোর্ট করতে পারছি,এটাই আমার সর্থকতা।
বেকারত্ব দূরীকরণে ভূমিকা রাখার আগ্রহের কথা জানিয়ে এই তরুণ বলেন, ‘ বেকারত্ব একটা অভিশাপ। আমি চাই এ পজন্মের ছেলে মেয়েরা ফ্রিল্যান্সিং শিখে নিজেদের আয়ের ব্যবস্থা নিজেরাই করুক।বর্তমানে সরকার বাংলাদেশের ডিজিটালাইজ করার যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সেই উদ্যোগে উদ্যোগী হয়ে আমি কাজ করে যাচ্ছি। পড়ালেখার পাশাপাশি নিজেরা কিছু করতে চাইলে ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা নেওয়া উচিত। প্রতিদিন ৬-৭ ঘন্টা কাজ করলে ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে, তাহলে বেকারত্ব দূর করা সম্ভব।
রাকিবুল এখন আ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং,এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন). লিড জেনারেশন, সোশাল মিডিয়া মার্কেটিংসহ ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিভিন্ন মাধ্যম সম্পর্কে তরুণ-তরুণীদের কাজ শেখাচ্ছেন।
ফ্রিল্যান্সিং পেশা বিষয় সফল ফ্রিল্যান্সার মো.রাকিবুল ইসলাম বলেন,’ আউটসোর্সিং বা ফ্রিল্যান্সিং পেশাটি বাংলাদেশের দক্ষজনশক্তি তৈরি করার একটি বড় খাত হিসেবে আগামীতে বিবেচনা হবে।তাই এই খাতকে সঠিকভাবে মূল্যায়িত করে দখল করা জরুরি। এই পেশার কারনে দেশে শিক্ষিত বেকার যুবকের হার কমবে ও রাকিবের মতো হাজারো মানুষ স্বাধীনভাবে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র পাবে।এই পেশাটিকে সামাজিক ভাবে পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া দরকার।