॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥
দৈনিক রাঙামাটির উদ্যোগে জাতীয় যাদুঘরে চুক্তির বর্ষপূর্তি ঘিরে পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে টেকসই পর্যটন শীর্ষক আলোচনা সভা ও পর্যটন উন্নয়নে বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে অবদান রাখা ১২জন ব্যক্তিকে সিএইচটি ট্যুরিজম এ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়েছে।
“পাহাড় জলে পর্যটন, রাঙামাটি সুন্দরবন” শ্লোাগান সামনে রেখে রোববার (১ ডিসেম্বর) বিকাল ৩টায় রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এ আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য ছিল পার্বত্য চট্টগ্রামে পর্যটন শিল্পের টেকসই উন্নয়ন, নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক বৈচিত্র সংরক্ষণ এবং পর্যটনশিল্পে রাজনৈতিক সম্প্রীতির গুরুত্ব তুলে ধরা। দৈনিক রাঙামাটি ও সুন্দরবন পর্যটন ক্লাব যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী ড. আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়াধীন শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. তরিকুল আলম (অতিরিক্ত সচিব), মুক্তিযুদ্ধকালীন পলিটিক্যাল এ্যাডভাইজর বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসন খান, ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার (প্লানিং এন্ড অপারেশন) হেড কোয়ার্টার মোহাম্মদ মহিউল ইসলাম, বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের অতিরিক্ত পরিচালক (প্লানিং) জিয়াউল হক হাওলারদার ওরাঙামাটি প্রেসক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল।
দৈনিক রাঙামাটির প্রকাশক মোঃ জাহাঙ্গীর কামালের সভাপতিত্বে এতে আলোচক ছিলেন সিনিয়র সাংবাদিক কুদরাত ই খুদা, চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত শিল্পনির্দেশক হিমাদ্রি বড়–য়া, অনষ্ঠান সঞ্চালনা করেন দৈনিক রাঙামাটি সম্পাদক আনোয়ার আল হক সম্পাদক।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের বলেন- বাংলাদেশের বিশেষ করে পার্বত্য অঞ্চলের পর্যটনস্থলগুলোর উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন করা উচিত, যাতে তা বিশ্বমানের সুবিধা প্রদান করতে পারে। টেকসই পর্যটনকে প্রাধান্য দিয়ে পরিবেশের ওপর প্রভাব কমানোর ব্যবস্থা নিতে হবে। স্থানীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে প্রচারের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক পর্যটনকে বিকশিত করতে হবে। আন্তর্জাতিক মার্কেটিং ও প্রচারাভিযান শক্তিশালী করতে হবে। পর্যটন শিল্পে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির জন্য প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা জরুরি।
শ্রম অধিদপ্তর এর মহাপরিচালক মো. তরিকুল আলম বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত হিসেবে কক্সবাজারের বালুকাময় সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ পর্যটন কেন্দ্র। এর বিস্তৃত সোনালি বালুকারাশি, বিশাল সমুদ্রের ঢেউ এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এর অনন্যতা প্রকাশ করে। কক্সবাজার ছাড়াও মহেশখালী, কুয়াকাটা এবং সেন্টমার্টিনের সমুদ্র সৈকতও বিশেষ জনপ্রিয়। বাংলাদেশের এই সমুদ্র সৈকতগুলো বিশ্বের অন্যান্য সমুদ্র সৈকতের তুলনায় অনেক বেশি সুন্দর, যেখানে প্রকৃতি, শান্ত পরিবেশ এবং মনোরম দৃশ্য পর্যটকদের মুগ্ধ করে। কক্সবাজারকে ইনানী হয়ে টেকনাফ পর্যন্ত সংস্কার করে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে হবে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ (প্লানিং এন্ড অপারেশন) এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিউল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন- পর্যটনশিল্পের উন্নতির জন্য পর্যটকদের সচেতনতা এবং স্থানীয়দের সাথে ভালো আচরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পর্যটকদের উচিত স্থানীয় সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং পরিবেশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা। যদি পর্যটকরা স্থানীয় ভাষা, খাদ্য এবং রীতিনীতির প্রতি আগ্রহী হন এবং তাদের আচরণে সচেতন থাকেন, তবে এটি স্থানীয় জনগণের সাথে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত করতে সাহায্য করবে এবং সংস্কৃতির সঠিক পরিচিতি বৃদ্ধি পাবে।
সবশেষে রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল কে পর্যটন সাংবাদিকতায় অবদানের জন্য এ্যাওয়ার্ড প্রদানসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ১২জন ব্যক্তিত্বকে সিএইচটি ট্যুরিজম এ্যাওয়াড প্রদান এবং মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়।