‘বিভিন্ন জায়গা থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা ধার-দেনা করে আনারস বাগান করেছিলাম। বাগান থেকে উত্তোালনের সময় আসার আগেই পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা আমাদের আনারস বাগান থেকে রাতের আধারে ৮২ হাজার গাছ কেটে তছনছ করে দিয়েছে। আমরা এখন কোথায় যাব? কার কাছে যাব? মানুষের ধার-দেনাওবা কিভাবে শোধ করবো? আমরা তো পথে গেছি। পরিবার নিয়ে অনাহারে থাকা ছাড়া আর কোন পথ খোলা নেই’।
সোমবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে বুড়িঘাটের আনারস বাগানের মালিক মধু মিয়া, জামাল সিকদার ও ফুলমতি কেঁেদ কেঁেদ এ ভাবেই তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন সাংবাদিকদের কাছে।
এসময় ক্ষতিগ্রস্থদের বুকফাটা আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠে সংবাদ সম্মেলনস্থল। সমধিকার আন্দোলনের রাঙামাটি জেলা কার্যালয়ে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্ত আট বাগান মালিকসহ সমধিকার নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্থরা অভিযোগ করেন, স্থানীয় থোয়াই চিং মার্মা হতে ৪ বছরের জন্য এ জমি লিজ নিয়ে আনারস চাষ করেছেন তারা। কোনো প্রকার বিরোধ ছিল না উভয়ের মধ্যে। বাগানে ৮২ হাজারেরও বেশী চারা গাছ তারা রোপন করেছিলেন বলে জানান তারা। কৃষকরা বলে, ‘আর কিছু দিন পর পুরো বাগান জুড়ে আনারসে ভরে যেত। কিছু কিছু গাছে ফলনও এসেছে। কিন্তু দুর্বৃত্তরা এতো কষ্টের বাগান নষ্ট করে দিয়ে আমাদেরকে পথে বসিয়েছে। আমরা এখন সম্পুর্ণ নিরুপায়’।
ক্ষতিগ্রস্থরা প্রশাসনের কাছে জড়িতদের বিচার ও ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। এদিকে সমধিকার নেতারা বক্তব্যে নানিয়ারচরের ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়াঁরি উচ্চারণ করেন।
নানিয়ারচরের অধিবাসীরা জানা, এ বিষয়ে স্থানীয় থানায় ঘটনার মূল হোতা নানাক্রম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক উথাচিং মার্মাকে প্রধান আসামি করে ৭০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মামলায় অন্তত ২০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্থ ৮ কৃষক পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সম অধিকার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সদস্য মোঃ ইউনুছ, জেলা সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আবছার আলী, কেন্দ্রীয় সদস্য মোঃ জাহাঙ্গীর কামাল, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভুমি রক্ষা আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম মুন্না ও যুবনেতা শাহজাহান আলম প্রমূখ।