স্টাফ রিপোর্টার, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, দৈনিক রাঙামাটি : নিজ ঘরেই গণধর্ষনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা এক গৃহবধূ। এই তিন সন্তানের জননী এলাকার মাতব্বর শ্রেণির একজনসহ সাত নরপশুর হাতে ধর্ষণের শিকার হন। রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিন সন্তানের জননী জানান, ছোট ছোট তিনটি সন্তান আর দিন মজুর স্বামীসহ তারা কাউখালী সীমান্তবর্তী জঙ্গল বগাবিল এলাকায় বসবাস করেন। গত ১৮ তারিখ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে পরিবারের সবাই যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন তখন ঘরের বেড়া কেটে ভেতরে ঢুকে তিন সন্তানের জননী ও তার স্বামীকেও হাত-পা বেঁধে মুখে গামছা ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। পরে স্বামীকে ঘরের ভেতরে রেখে তাকে টেনে হিচড়ে ঘরের বাইরে নিয়ে ওয়ার্ড মেম্বার চিংনুমং মারমার নেতৃত্বে পালাক্রমে সাতজন মিলে ধর্ষণ করে।
ভিকটিমের স্বামী জানিয়েছেন, ঘটনার পর ভোর বেলায় আমি এলাকার মুরুব্বি ও সর্দার মাওলার কাছে গিয়ে ঘটনাটি খুলে বলে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করি। তিনি আমাকে জানিয়েছেন, এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান চট্টগ্রাম রয়েছেন তিনি আসলে বিষয়টি নিয়ে এগুনোর পরামর্শ দেন মাওলা। পরে দুইদিন ঘটনার তিনদিন পরে স্থানীয় রাজানগর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ জামাল উদ্দিন মোস্তফা জাহাঙ্গীর তার কার্যালয়ে বসেন। সে সময় তার কাছে উপস্থিত ঘটনার সুষ্ঠ বিচার দাবি করেন ভিকটিমের স্বামী। পরে ঘটনা শুনে চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিকটিমের সাথে কথা বলে নিজের পকেট থেকে পাঁচশো টাকা দিয়ে আহত ভিকটিমকে চিকিৎসা সেবা নিয়ে মামলা করার পরামর্শ দেন।
এদিকে ঘটনাস্থল জঙ্গল বগাবিলের সর্দার হিসেবে পরিচিত স্থানীয় বাসিন্দা মাওলা জানিয়েছেন আমি ঘটনাটি শুনার সাথে সাথেই তাদেরকে চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করে মামলা করার জন্য পরামর্শ দিয়েছি।
অপরদিকে ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমি ভিকটিমের সাথে দেখা করে তাকে মামলা করার জন্য বলেছি। তিনি জানান, অভিযুক্ত রনি প্রকৃত পক্ষে একজন সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও রয়েছে। সে ইসলামপুরে টিকতে না পেরে গাঁ বাচানোর লক্ষ্যে কাউখালীর নাইল্যাছড়ির দিকে শশুর বাড়ি বানিয়েছে বলে আমি জেনেছি। চেয়ারম্যান জানান, অভিযুক্ত যেই হোক না কেন, তার শাস্তি চাই আমি।
ভিকটিমের ভাষ্যনুসারে উক্ত ঘটনার নেতৃত্বদানকারি এক নং ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার চিংনুমং মারমার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানিয়েছেন, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার, আগামী ইউপি নির্বাচন কেন্দ্র করে তার প্রতিদ্বন্ধীরা তার বিরুদ্ধে এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে। প্রাথমিক কথাবার্তায় মেম্বার জানিয়েছিলেন তিনি কাউকে চিনেন না। মুঠো ফোনে কথা বলার এক পর্যায়ে এক প্রশ্নের জবাবে চিংনুমং মারমা জানান, ঘটনার দিন রনি-নুরুন্নবি ও মঞ্জু আমার সাথেই ছিলো। তবে আমি ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানি না।
পোস্ট করেনন- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরোপ্রধান