নৃশংস জীবনাচার ও সন্ত্রাসী-অস্ত্রবাজীর পথ ধর্ম পছন্দ করে না -দীপংকর তালুকদার এমপি

376

॥ লংগদু প্রতিনিধি ॥
খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও রাঙামাটি আসনের সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার বলেছেন, জগৎ সংসারে নানান সমস্যা থাকবেই, আর সমস্যা যেমন আছে তা সমাধানের পথও আছে। সমস্যায় আছি বলেই আমি নৃশংস জীবনাচার, অস্ত্রবাজী, সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজীর পথ বেচে নিতে পারি না।

কারণ ধর্ম- হত্যা, নির্যাতন বা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সমর্থন করে না। ভগবান বুদ্ধ আমাদের শিখিয়েছেন মৈত্রী ভাবনায় জীবন যাপন করতে। তাই মৈত্রী ভাবনা করেই আমাদের পথ চলতে হবে। ধর্ম মন থেকে আসে, এটা প্রতিযোগীতার কাজ নয়। মন থেকে এসেছে বলেই আমি আগের তুলনায় এখন অনেক বেশি ধর্ম চর্চা করি।

মঙ্গলবার, (২৪ নভেম্বর), লংগদু উপজেলার ডানে আটারকছড়া আর্যগিরি বন বিহারে ২দিন ব্যাপী ৩য় দানোত্তম কঠিন চীবর দানোৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দীপংকর তালুকদার এমপি এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনাও একজন ধর্মপরায়ন মানুষ এবং তিনি সব ধর্মের ব্যাপারেই অত্যন্ত আন্তরিক। তিনি চান প্রত্যেক ধর্মের লোকেরা যাতে নির্বিঘ্নে তাদের ধর্ম পালন করতে পারে।

সোমবার সকালে পঞ্চশীল গ্রহণের মধ্যদিয়ে চীবর দান অনুষ্ঠান শুরু হয়। রাত ১টায় বেইন বুনা শুরু হয়। সংঘ দান, বুদ্ধমুর্তি দান, কল্পতরু দান, অষ্ট পরিষ্কার দান এবং বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পিন্ডু দান সহ নানাবিধ দান করা হয়।

মঙ্গলবার সকালে ১ম পর্বের অনুষ্ঠানে নানিয়ারচর তক্ষশীল বন বিহারের অধ্যক্ষ করুনা বর্ধন মহাস্থবীর এর সভাপতিত্বে ও স্বাগত বক্তব্য রাখেন। নাথোরাম চাকমা, দ্রুব চাকমা ও সুপ্তা চাকমার পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, লংগদু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বারেক সরকার। ধর্মীয় দেশনা দেন নানিয়ারচর বেনুবন অরণ্য কুঠির বনবিহারের অধ্যক্ষ পন্থক ভান্তে মহাস্থবীর।

বিশেষ অতিথির মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, লংগদু উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাইনুল আবেদীন, লংগদু উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ক্যাথোয়াই প্র“ মারমা, লংগদু উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ঝান্টু চৌধুরী, লংগদু থানা অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ মোহাম্মদ নুর, রাঙামাটি সদর আওয়ামী লীগের সভাপতি দীপক চাকমা, আটারকছড়া ইউপি চেয়ারম্যান মঙ্গল কান্তি চাকমা। এছড়া বিভিন্ন গন্যমান্য ব্যাক্তিগন এসময় উপস্থিত ছিলেন।

রাঙামাটি সাংসদ দীপংকর তালুকদার এমপি প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, এখানে ৩য় বারের মত কঠিন চীবর দান হচ্ছে। তাই দেশনাবল, ভোজনবল, অষ্টশীল প্রার্থনার ঘর লাগবে। তাই তার জন্য এই অর্থ বছরে ৭০ লক্ষ টাকার প্রকল্প বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে এবং ইতিমধ্যে টেন্ডারও হয়েছে। যদি কাজ অসম্পূর্ণ থাকে তাহলে পরবর্তীতে আরো বরাদ্ধ দেওয়া হবে। এতে এখানে ভালোভাবে একটি বনবিহার প্রতিষ্ঠিত হবে।

ধর্মীয় দেশনায় বক্তারা বলেন, পূণ্য লাভে বনভান্তের শাসন অনুশাসন ও আদর্শকে বুকে ধারণ করে চলতে চলতে হবে। এসময় বনবিহারে পূণ্য লাভের আশায় আগত বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা সাধু সাধু ধনি দেন।

শেষে বর্তমান দেশ ও জাতী করোনা প্রভাব থেকে যেন মুক্ত হতে পারে সেই প্রার্থনা করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যায় ডানে আটারকছড়া আর্য গিরি বনবিহারে হাজার বাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়।