পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের পথ সংগ্রামের মাধ্যমেই বের করতে হবে: সন্তু লারমা

252

॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥

পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও জনসংহতি সমিতি সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) বলেছেন তীব্র আন্দোন সংগ্রাম ছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন হবে না। তিনি বলেন, দীর্ঘ ২৫ বছরেও যখন পার্বত্য চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হয়নি, তখন ধরেই নেওয়া যায় এই চুক্তি বাস্তবায়নে কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা নেই। তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি- এই চুক্তি আর এমনি এমনি বাস্তবায়নের সম্ভাবনা নেই। কাজেই চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে তীব্র আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই; সংগ্রামের মাধ্যমেই চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের পথ সৃষ্টি করতে হবে।

শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৫ বছর বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জনসংহতি সমিতির সহযোগী ছাত্র সংগঠন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ আয়োজিত প্রবন্ধ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, প্রবন্ধ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক জিকো চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুমন মারমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম আদিবাসী লেখক ফোরামের সাবেক সভাপতি শিশির কুমার চাকমা, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনরে সাবেক সদস্য নিরূপা দেওয়ান প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে সন্তু লারমা আরো বলেন, নানান সংগ্রামের ও প্রতিকুল অবস্থার মধ্যদিয়ে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। পার্বত্য চুক্তি সাধারণ কোন দলিল নয়; এটি পার্বত্য এলাকার জুম্ম জনগণের অধিকারের সনদ। পাহাড়ের অধিকাংশ জুম্ম জনগণের পার্বত্য চুক্তি সম্পর্কে কোন জ্ঞান নাই। তারা এই বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের আগ্রহও প্রকাশ করেন না। পার্বত্য শান্তিচুক্তি’র বিষয়ে প্রত্যেকের জানা থাকা দরকার। শুধু চুক্তি নয় সংবিধানে মানবাধিকার বিষয় সম্পর্কেও জানা অতীব প্রয়োজন। পাশাপাশি চুক্তি বাস্তবায়নের সংগ্রামে সকল জুম্ম জনগনকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে করে সন্তু লারমা আরও বলেন, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ যে বিষয় নিয়ে প্রবন্ধ প্রতিযোগিতা করেছে আমি দেখেছি, যারা এই প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করেছে তাদের আরও এই বিষয় নিয়ে বেশী করে পড়ালেখা মনোনিবেশ করতে হবে। চুক্তি সম্পর্কে পার্বত্য এলাকা জুম্ম জনগণের আরও জানা দরকার। দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের মধ্যদিয়ে পার্বত্য এলাকার জুম্ম জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন হয়েছে। চুক্তির পূর্বেও যে পরিস্থিতি ছিলো এখনো তা বহাল হয়েছে। কোন পরিবর্তন হয়েছে বলে আমি মনে করি
না।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনরে সাবেক সদস্য নিরূপা দেওয়ান বলেন, ছাত্রদের নিজের অধিকার আদায়ের জন্য অবশ্যই রাজনীতি করার প্রয়োজন আছে। রাজনীতির পাশাপাশি অবশ্যই পড়ালেখায় মনোনিবেশ করতে হবে। আমাদের মধ্যে কয়জনে পার্বত্য চুক্তি সম্পর্কে জানে। এই বিষয়ে প্রত্যেকের জানা থাকা দরকার। শুধু চুক্তি নয়, সংবিধানে মানবাধিকার বিষয়েও জানা জরুরী।

আলোচনা সভা শেষে প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিবৃন্দ।