পাহাড়ে টেকসই উন্নয়নে কফি ও কাজু চাষ এবং ইকোট্যুরিজম গুরুত্ব দিতে হবে – উপদেষ্টা সুপ্রদীপ

6

\ সাইয়্যেদ মোঃ সাখাওয়াত ‍উল্লাহ \
পাহাড়ের উন্নয়নে নতুনত্ব আনার মানসে তিন পার্বত্য জেলায় কফি ও কাজুবাদাম চাষ জনপ্রিয় করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত সুপ্রদীপ চাকমা। তিনি বলেন পাহাড়ের তৃণমূল পর্যায়ে কফি ও কাজুবাদাম চাষের আগ্রহ ছড়িয়ে দিতে হবে। পাশাপাশি সরকার এ অঞ্চলে টেকসই উন্নয়নের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক কৃষি এবং ইকো-ট্যুরিজম খাতকে অগ্রাধিকার দিতে চায় বলে জানিয়েচেন তিনি। উপদেষ্টা বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের অনন্য প্রাকৃতিক সম্পদ ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে ঘিরেই একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত গড়ে তোলার বিশাল সুযোগ রয়েছে। আমরা এই সুযোগ অবশ্যই কাজে লাগাবো।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সকাল ১১টায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড এর মাইনী হলরুমে পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগীতায় বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাষ্ট এবং মোনঘরের ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও বৌদ্ধ সংস্কৃতি বিকাশে করণীয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সিলেটের মতো চা শিল্প না থাকলেও পার্বত্য অঞ্চল কফি ও কাজু বাদাম চাষের জন্য আদর্শ। তিন পার্বত্য জেলাকে কফির অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব।” উপদেষ্টা জানান, এরই মধ্যে মন্ত্রণালয় কফি ও কাজু বাদামের চাষ সম্প্রসারনে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে, যাতে এই অঞ্চল কৃষিভিত্তিক একটি লাভজনক খাতে রূপ নেয়।
একই সাথে কাপ্তাই হ্রদকে কেন্দ্র করে টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনার উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি। “এই হ্রদ শুধু একটি জলাশয় নয়, বরং এর মধ্যে লুকিয়ে আছে অপার সম্ভাবনা,” বলেন সুপ্রদীপ চাকমা। মাছ চাষ, ইকো-ট্যুরিজম, পরিবেশবান্ধব শিল্প স্থাপনসহ নানা উদ্যোগের মাধ্যমে কাপ্তাই হ্রদ জাতীয় অর্থনীতিতে নতুন গতি সঞ্চার করতে পারে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি আরও বলেন, “লেকে সোনা ফলবে—এটি কেবল একটি উপমা নয়, বরং বাস্তবায়নযোগ্য একটি অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি। আমাদের সঠিক পরিকল্পনা, স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্তি এবং আন্তরিক সহযোগিতার মাধ্যমে এ অঞ্চলকে উন্নয়নের রোল মডেল বানানো সম্ভব।” তিনি বলেন, সরকার ইতোমধ্যে এই অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য ৫৫০ কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ করেছে। এখন প্রয়োজন স্থানীয় সরকার, উন্নয়ন বোর্ড এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সমন্বিত পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন।


সেমিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন দেশের বিশিষ্ট বৌদ্ধ তত্ত¡বিদ অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া, মং সার্কেলের চিফ সাচিং প্রু চৌধুরী, সাবেক উপমন্ত্রী মণি স্বপন দেওয়ান, রাজীব কান্তি বড়ুয়া ও শ্যামল মিত্র চাকমাসহ আরও অনেকে। সেমিনারে অংশগ্রহণকারীদের বক্তব্যে উঠে আসে পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়নে ধর্মীয় স¤প্রীতি, শান্তি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষার গুরুত্ব।
সেমিনারে শান্তি, সমপ্রীতি এবং ধর্মীয় সহনশীলতার মাধ্যমে পার্বত্য অঞ্চলের সামাজিক স্থিতিশীলতা রক্ষা ও উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়।