আলমগীর মানিক- ১৩ জুন ২০১৮, দৈনিক রাঙামাটি: গত বছর পাহাড় ধসের ঘটনায় তিক্ত অভিজ্ঞতার পর এখনো রাঙামাটি সদরের প্রায় ১০ হাজার পরিবারসহ জেলায় অসংখ্য মানুষ ভূমি ধসের ঝুঁকিতে বসবাস করছে। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বিধ্বস্ত ও ঝুঁকিপূণ পাহাড়ি ভিটায় নতুন বসতি নির্মাণ করে বসবাস করছেন পরিবারগুলো। যদিও জেলা প্রশাসক বলছেন, অধিক সংখ্যক লোক বসবাস করায় উচ্ছেদ করা সম্ভব হচ্ছে না। অন্যদিকে সরকারি পুনর্বাসনের কথা কথা থাকলেও গত এক বছরে তার কার্যকর হয়নি।
ফের পাহাড় ধসে ও প্রাণহানির যে আশঙ্কা করা হচ্ছিল, বছর ঘুরতেনা ঘুরতেই মঙ্গলবার তা সত্য হয়ে নানিয়ারচরে ১১ জনের প্রাণহানি হয়। ধসে বিপর্যয় ঘটছে সড়ক যোগাযোগ। রাঙামাটি-চট্টগ্রাম এবং রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কে সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। গত কয়েক দিন ধরে ধসে বিপর্যস্ত রাঙামাটি-বান্দরবান সড়কেও যান চলাচল স্বাভাবিক করা যাচ্ছে না। ঝুঁকিপূর্ণ লোকজনকে নিরাপদে সরাতে আবারও হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রশাসনকে। এরই মধ্যে গত কয়েক দিনে ৫/৬’শ লোক আশ্রয় কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া প্রবল বর্ষণে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি ও লংগদু, বিলাইছড়ি, জুড়াছড়ি, নানিয়ারচর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে করে কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে।
জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ বলেন, জেলায় এখনও দর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও প্রবল বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং জনসাধারণের সহযোগিতায় দুর্যোগ মোকাবেলা ও উদ্ধার কার্যক্রম চলছে। জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও অন্যান্য সংস্থা ও বিভাগের সমন্বয়ে জরুরি সেবা ও দুর্গত লোকজনকে সহায়তা দেয়া হচ্ছে। শহরে ২১টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী মজুদ রয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানিয় প্রশাসন। তাঁবু গেড়ে অস্থায়ী জরুরি সেবা ও আশ্রয় কেন্দ্র খোলা রাখার পূর্ন প্রস্তুতি রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ লোকজনকে নিরাপদে চলে যেতে সার্বক্ষণিক মাইকিং করা হচ্ছে।
এদিকে নানিয়ারচরে পাহাড় ধসে নিহত ১১ জনের শেষকৃত্য বুধবার সম্পন্ন হয়েছে। আহতদের রাঙামাটি সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ বলেন, পাহাড় ধসে নিহতদের প্রত্যেককে ২০ হাজার করে টাকা আর্থিক সহায়তা ও নিহতের প্রতি পরিবারকে আপাতত ৩০ কেজি করে চাল দেয়া হয়েছে।
পোস্ট করেন- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরো প্রধান।