পুরনো গ্লানী ঝেড়ে ফেলতে জলোৎসবে মাতোয়ারা মারমা তরুণ-তরুণীরা

313

॥ মনু মার্মা ॥

বর্ষ বিদায়ের আনন্দে মাততে বর্ণিল সাজে জল উৎসবে মাতে মারমা তরুণ-তরুণীরা। একে অপরের গায়ে পানি ছিটিয়ে নিজেদের পরিশুদ্ধ করে নতুন বছরকে বরণ করেন। এই উৎসবে সব বয়সীরাই যোগ দেন।

শনিবার (১৬ এপ্রিল) সকালে রাঙামাটির বেতবুনিয়ার উচ্চ বিদ্যালয়ে মাঠে এক বর্ণিল ও জাঁকজমকপূর্ণ জল উৎসবের আয়োজন করে মারমা সংস্কৃতি সংস্থা (মাসস)।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আয়োজনটির উদ্বোধন করেন, খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং ২৯৯নং আসনের সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার এমপি। তিনি এসময় জীর্ণতা ঝেড়ে ফেলার পাশাপাশি অসাম্প্রদায়িক পার্বত্য চট্টগ্রাম গড়ে তুলতে সকলের প্রতি উদাত্ম আহ্বান জানিয়ে বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিঃসন্দেহে পাহাড়কে সমৃদ্ধ করবে।

মারমা সাংস্কৃতিক সংস্থার (মাসস) সভাপতি অংসুই প্রু চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন, রাঙামাটি বিজিবি’র সদর সেক্টর কমান্ডার উপ-মহাপরিচালক কর্ণেল মোঃ তরিকুল ইসলাম, রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, জেলা পুলিশ সুপার মীর মোদদাছছের হোসেন, রাঙামাটি সদর জোন কমান্ডার লেঃ কর্ণেল বিএম আশিকুর রহমান, আর্মি সিকিউরিটি ইউনিট রাঙামাটি শাখার ডেট কমান্ডার লেঃ কর্ণেল মেছবাহুল আলম সেলিম (পিএসসি), রাঙামাটি জেলা পরিষদের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য দেন মারমা সাংস্কৃতিক সংস্থার (মাসস) সাধারণ সম্পাদক মউসিং মারমা। জল উৎসব মারমা সম্প্রদায়ের সব চেয়ে বড় সামাজিক উৎসব। তবে গত দুই বছর করোনার কারণে এ উৎসব হয়নি।

জল উৎসব উপভোগ করতে তিন পার্বত্য জেলাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অগণিত মানুষের ঢল নামে। একদিকে জল উৎসব আর অন্যদিকে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতি অনুষ্ঠান উপভোগ করে সবাই। পারস্পরিক মৈত্রীর বন্ধন অটুট রাখা এবং পুরাতন বছরের গ্লানি মুছে ফেলায় এই উৎসবটি মূল উদ্দেশ্য।

একদিকে ঐতিহ্যবাহী লুঙ্গিতে মারমা তরুণ অন্যদিকে বর্ণিল সাজে মারমা তরুণী নিদিষ্ট দূর থেকে এই জল উৎসব খেলা খেলে থাকেন। অনেকে আবার এ সময় নিজের প্রিয় মানুষটিকে বেছে নেন। চারপাশে হাজারো মানুষের ভিড়। পর্যটক, অতিথি, সংবাদকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ। এমন দৃশ্য দেখতে এবং স্মরণীয় করে রাখতে সবাই মহা ব্যস্ত। এমন রঙিন খেলা বছরে একবারই আসে।