পাহাড়ের যোগাযোগ ব্যবস্থা আগের চেয়ে অনেক উন্নত হলেও, গ্রামীণ মানুষের মাঝে বিভিন্ন বিষয়ে আজও সে অর্থে জনসচেতনতা বাড়েনি।
এখনও প্রত্যন্ত অঞ্চলে নানা কুসংস্কার, অজ্ঞতা এবং কুপমুন্ডতা বিরাজমান থাকায় সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচির বাস্তবায়ন অগ্রগতি অন্য অনেক জেলার থেকে ধীরলয়ে এগুচ্ছে।
এ ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একনিষ্ঠতা এবং আন্তরিকতা বৃদ্ধি অত্যন্ত প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেছেন রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান।
তিনি বলেন, যোগযোগের অজুহাতে এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলের কারণ দেখিয়ে অনেক সরকারি বিভাগ তাদের উপর ন্যাস্ত দায়িত্বগুলো যথাযথভাবে পালন করে না। এতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার যে ভাবে কমা দরকার সে লক্ষ্য পুরণ হচ্ছে না। তিনি বলেন এখনও পাহাড়ের নারীরা কোনো প্রশিক্ষণ না থাকা ধাত্রীর হাতে সন্তান প্রসব করিয়ে জীবন ও জনসংখ্যাকে ঝুঁকির মুখে ফেলছে।
জেলা প্রশাসক বলেন, আমরা শঙ্কিত যে, পাহাড়ে বাল্য বিবাহের প্রবণতা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। বাল্য বিবাহ এবং অপ্রাপ্ত বয়সের কিশোর-কিশোরীদের অপরিকল্পিতভাবে সন্তান গ্রহণ একটি ভয়াবহ বিষয়। যে কারণে এই অঞ্চলে জনসংখ্যা বৃদ্দি পাচ্ছে। তিনি বলেন সামাজিক সচেতনতার মাধ্যমে বাল্য বিবাহ রোধ করা সম্ভব বলে তিনি মত ব্যক্ত করেন।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের আয়োজনে বিশ্ব জনসংখ্য দিবস পালন ঘিরে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য জেলা প্রশাসক এসব কথা বলেন।
এবারে দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘পরিবার পরিকল্পনা জনগণের ক্ষমতায়ন, জাতির উন্নয়ন’। ডিসি তার বক্তব্যে আরো বলেন, বাল্য বিবাহের প্রবণতা থেকে দেশে বৃহত্তর সমাজকে বের করে আনতে হলে দরকার শিক্ষা ও সচেতনতা বৃদ্ধি। জনসংখ্যা বৃদ্ধিরোধে পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণের বিষয়ে গুরুত্ব তুলে ধরেন তিনি। পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি সাধারণ মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে মাঠ কর্মীদের আন্তরিকতার সাথে কাজ করার আহ্বান জানান ডিসি মান্নান।
এর আগে এ দিবস উপলক্ষে জেলা শিল্পকলা একামেী প্রাঙ্গন থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভা যাত্রাটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা পরিষদ মিলনায়তনে গিয়ে শেষ হয়।
জেলা পরিষদ সদস্য সবির কুমার চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, সিভিল সার্জন ডা: শহীদ তালুকদার, জেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্যালয়ের উপ-পরিচালক বেগম শাহান ওয়াজ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, এফডব্লিউভিটিআই এর অধ্যক্ষ মোঃ ওবায়দুর রহমান সরদার, রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা পরিষদ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রীতা চাকমা’সহ বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা, সামাজিক, রাজনৈতিক নেতবৃন্দ। আলোচনা শেষে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে কাজের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখার জন্য জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তাদের পুরস্কৃত করা হয়।