আজগর আলী খান , ৬ ডিসেম্বর ২০১৫, দৈনিক রাঙামাটি : বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উদাসিনতার ফলে রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই পাল্পউড বাগান বিভাগের সহকারি বনসংরক্ষকসহ ৯টি রেঞ্জে ১৬৪ জন কর্মকর্তা কর্মচারীর স্থলে মাঠ পর্যায়ে রয়েছে মাত্র ৮২ জন। লোকবল কম ও দক্ষ কর্মকর্তার অভাবে মাঠ পর্যায়ে কর্মরত কর্মকর্তা কর্মচারীরা কাজ করতে হিমশিম খাচ্ছেন। বিভাগীয় কাজে নেমে এসেছে স্থবিরতা। ইতোমধ্যে কাপ্তাই পাল্পউড বাগান বিভাগের সহকারি বনসংরক্ষক মুস্তাফিজুর রহমান, প্রধান অফিস সহকারী মোয়াজ্জেম হোসেন খান ও রাজস্থলী সদর রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. শামসুদ্দোহা বদলী হয়েছেন। আরো ২ জন বিট অফিসার আবুল কাশেম ও আবদুল হাই সুন্দরবন এলাকায় বদলী হয়েও তদবিরের অপেক্ষায় আছে। গত ১লা নভেম্বর পাল্পউড বাগান বিভাগের পক্ষ থেকে বিদায়ী কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিদায় অনুষ্ঠান করা হয়।
সূত্র জানায়, কর্ণফুলী পেপার মিল লিমিটেডে কাঁচামাল (পাল্পউড) তথা নরম কাঠের যোগান দেওয়ার লক্ষ্যে রাঙামাটি সার্কেলের আওতায় কাপ্তাই পাল্পউড বাগান বিভাগ সৃষ্টি করা হয়। এই বিভাগের মোট ৯টি রেঞ্জ রয়েছে। রেঞ্জ কর্মকর্তা সঙ্কটের কারণে ৪টি রেঞ্জ পরিচালনা করছেন ১জন রেঞ্জ কর্মকর্তা। ৪টি রেঞ্জের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে রেঞ্জ কর্মকর্তা নানা বিড়ম্বনা পড়ছেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। একই অবস্থা বিরাজ করছে বিট অফিসগুলোতেও। এফজি, বনমালী, বোটম্যান দিয়ে কয়েক হাজার একরের সমৃদ্ধ বাগানে বিট কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে চলছে জগা খিচুড়ী।
অপরদিকে বাগান মালী দিয়ে জোত পারমিটের কাজ ও বাগান সৃজনের কাজ করানো হচ্ছে। লোকবল সঙ্কটের কারণে অনেক দুর্গম বিটে কোন কর্মকর্তা কর্মচারী কর্মস্থলে থাকেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। অল্প সংখ্যক কর্মকচারীর কারণে ভয় পেয়ে স্থানীয়ভাবে রাজনৈতিক পরিবেশ অনুকুল না থাকার অজুহাতে কর্মস্থলে ফাঁকি দিচ্ছেন অনেক কর্মচারী। কোন কোন বিটে ২ জন কর্মী দিয়ে হাজার হাজার একর বাগান পরিচালনা করা হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে বাগান সৃজন ও বাগান রক্ষা করতে গিয়ে একাধিক বর্নকর্মী নাজেহালসহ হামলার শিকার হয়েছেন বলে জানা গেছে।
বনবিভাগে লোকবল সঙ্কটের সুযোগ কাজে লাগিয়ে বনদুস্যূরা বেপরোয়া ভাবে সরকারি সংরক্ষিত উজাড় করার কাজে মেতেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সচেতন মহলের মতে লোকবল পুরন করা না গেলে বন উজাড় রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া দুরহ হয়ে পড়তে পারে। প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ করে বাগান রক্ষা করতে পারলে কর্ণফুলী পেপার মিলের বাৎসরিক লক্ষ্যমাত্রা পুরন করা সম্ভব হবে।
সম্পাদনা- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরোপ্রধান