বাংলা বর্ষ বরণে জেলাপ্রশাসনের আয়োজনে বর্ণিল মঙ্গল শোভাযাত্রা

69

॥ রাঙামাটি রিপোর্ট ॥

বাঙালির লোকজ ঐতিহ্যের অন্যতম প্রতীক মঙ্গল শোভাযাত্রা। বাংলা বছরের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখে নানা সাজে সজ্জিত হয়ে বের হওয়া নারী-পুরুষের এ যাত্রা যেন বাংলাদেশের জন্মের শেকড়ের দিকেই এক অভিযাত্রা। এই যাত্রা নিরন্তর অসীমের কাছে পৌঁছনোর সাহস। প্রকৃতির নিয়মে নদীর মতো প্রবহমান বাঙালির এক অনবদ্য বর্ণিল উপাখ্যান।

পাহাড়ি জেলা রাঙামাটি দেশের চিরায়ত ঐতিহ্য লোকজ শিল্প ও সংস্কৃতি উপস্থাপনের এ আয়োজন থেকে কখনই পিছপা হয় না। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি; বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ বরণ করে নিতে জেলাপ্রশাসনের বর্ণিল আয়োজনে রাঙামাটিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে মঙ্গল শোভাযাত্রা। রোববার (১৪ এপ্রিল) সকালে শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার এমপি।

শোভাযাত্রাটি রাঙামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গণ থেকে বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসনের কার্যালয় চত্ত্বরে গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান, পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ, রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেলসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা, শহরের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবর্গ, শিক্ষক শিক্ষিকা, ছাত্রছাত্রী এবং সর্বস্তরের মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

দিনটি ঘিরে রাঙামাটি জেলাপ্রশাসন মঙ্গল শোভাযাত্রা ছাড়াও লোকজ মেলার আয়োজন করে। মেলায় উদ্যোক্তারা রাঙামাটির বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী পোশাক, পণ্য সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসে। এরই ফাঁকে শহীদ আব্দুল আলী মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণের পর্ব। লোকজ মেলার উদ্বোধন করেন দীপংকর তালুকদার এমপি। দিনটি ঘিরে রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট ও রাঙামাটির জাদুঘর সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল।

শোভাযাত্রাকে আনন্দময় ও নান্দনিক করার জন্য ঢোল, করতাল, বাঁশি বাজিয়ে বাংলা নববর্ষ বরণ যেন আরো অর্থবহ করে তোলা হয়। আবাল বৃদ্ধা-বনিতাসহ সকল পেশা, বর্ণ ও ধর্মের মানুষ প্রাণের টানে মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করে। মঙ্গল শোভাযাত্রা ও নববর্ষকে বরণ করতে লোক সংস্কৃতি নানা উপকরণ তৈরী করে বাংলার হাজার বছরের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে জীবন্ত করে তোলা হয়। এ উপকরণগুলির মাঝে নানাভাবে এ অঞ্চলের সংস্কৃতি জীবন ঘনিষ্টভাবে জড়িত। এতে বাঙালির শাশ্বত লোকজ ঐতিহ্যসমৃদ্ধ শিল্পসামগ্রী যেমন- টেপা পুতুল, বাঘ, হাতি, ঘোড়া, প্যাঁচা, ময়ূর, মুখোশ, জোড়া মাছ, জোড়া পাখি, বৃক্ষলতা, গুল্ম এবং মানুষের অবয়ব তৈরি করে শোভাযাত্রাকে অনন্য রূপদান করে।