বান্দরবানের লামায় গ্যাসের সন্ধান

437

unnamed5

মো. নুরুল করিম আরমান- ৭  সেপ্টেম্বর ২০১৬, দৈনিক রাঙামাটি : বান্দরবানের লামা উপজেলায় কয়লা খনির সন্ধানের পর এবার প্রাকৃতিক জ্বালানি গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে। উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ইয়াংছা হেডম্যানপাড়া বৌদ্ধ বিহার ও আবদুস সালাম মেম্বারের দুটি টিউবওয়েলের পাইপ দিয়ে পানির পাশাপাশি অনবরত গ্যাস নির্গত হচ্ছে। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে এর অবস্থান। তবে দুই সপ্তাহেও সেখানে যায়নি কোন বিশেষজ্ঞদল।

ফলে জানা যাচ্ছেনা সেখানে আসলেই গ্যাসের কোন মজুদ আছে কিনা । গ্যাস পাওয়া গেছে এটি আনন্দের খবর হলেও এই গ্যাস কোন বিপদ ডেকে আনে কিনা সেই ব্যাপারে চিন্তিত এলাকার মানুষের। যেভাবে দিন দিন গ্যাস নির্গত হচ্ছে যদি এখন থেকে নিয়ন্ত্রন করা না তা হলে সিলেটের টেংরাছড়ির অবস্থা হতে পারে বলে মন্তব্য করেন স্থানীয়রা।

উপজেলার নলকূপের পাইপে গ্যাস নির্গমনের লক্ষণ গুলোর প্রেক্ষিতে আপাতত সম্ভাবনা উজ্জল বলা চলে।

মঙ্গলবার সকালে সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, স্থানীয় বাসিন্দাদের পানীয় জলের সংকট নিরসনের জন্য সাত বছর আগে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ইয়াংছা হেডম্যান পাড়াস্থ বৌদ্ধ বিহারে একটি ডিপ টিউবওয়েলটি স্থাপন করে। টিউবওয়েলটি স্থাপনের পর থেকেই পাইপ দিয়ে অনবরত পানি ঝরে পড়া শুরু হয়। কড়া লোনা স্বাদের কারনে এ পানি কেউ পান করেন না। গোসল করলেও গায়ে চুলকানি হয়। কেবলমাত্র হাত-পা ধোয়ার কাজে এ পানি ব্যবহৃত হয় মাত্র।

হেডম্যানপাড়া বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ উ: ওয়াইন্দাশিরি ভিক্ষু জানায়, গত ২৩ আগস্ট রাতে বিদ্যুৎ না থাকায় মোমবাতি নিয়ে পানি নিতে টিউবওয়েলের পাইপের পানির ধারে গেলে হঠাৎ পানির উপরিভাগে বাতির আগুন লাগা মাত্রই দাউ-দাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে। তাৎক্ষনিকভাবে বিষয়টি স্থানীয় হেডম্যান, ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ও চেয়ারম্যানকে অবহতি করি।  তিনি আরও জানান, পাশের আবদুল সালাম মেম্বারের বাড়ির টিউবওয়েলের পানির সাথেও একই ভাবে গ্যাস নির্গত হচ্ছে।

স্থানীয় মৌজা হেডম্যান নিংমং মার্মা ও ইউপি সদস্য আপ্রুচিং মার্মা বলেন, গ্যাস নির্গত হওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে আমরা দিয়াশলায়ের কাঠি দিয়ে আগুন লাগিয়ে দেখেছি টিউবওয়েলের পানির উপরে আগুন জ্বলছে। এতে বুঝা যায় সেখানে গ্যাস উঠছে। নির্গত গ্যাস সংরক্ষণে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ জরুরী।  এদিকে স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তিরা জানান, গ্যাস নির্গত হওয়ার দৃশ্যটি দেখে ধারণা হচ্ছে, পাহাড় জুড়ে কোথাও না কোথাও বিপুল পরিমাণ গ্যাস মাটির নিচে মজুদ রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাকের হোসেন মজুমদার জানায়, আমরা বিষয়টি ভুতাত্ত্বিক বিভাগকে অবহিত করেছি। যেসব গ্যাসের পকেট মুখ পাওয়া গেছে তার ভিত্তিতে পর্যাপ্ত অনুসন্ধান হলেই এখানে প্রাকৃতিক খনি রয়েছে কিনা তা সঠিকভাবে বলা যাবে। তিনি আরও বলেন, এই সব লক্ষণ গুলোর প্রেক্ষিতে আপাতত সম্ভাবনা উজ্জল বলা চলে।

ডিপ টিউবওয়েলের পাইপ দিয়ে পানির পাশাপাশি গ্যাস নির্গত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার খালেদ মাহ্মুদ জানান, টিউবওয়েলের পাইপ দিয়ে গ্যাস বের হওয়ার খবর শোনা গেছে। আমারা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি। এ ব্যাপারে পেট্রো বাংলা এবং খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয়কে জানানো হবে।

পোস্ট করেন- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরো প্রধান। সূত্র, অন্য মিডিয়া