নুরুল কবির , ৭ ডিসেম্বর ২০১৫, দৈনিক রাঙামাটি : বান্দরবানে বোমাং সার্কেলের জুম খাজনা আদায়ের ঐতিহ্যবাহী উৎসব রাজপুণ্যাহ শুরু হচ্ছে আগামী ১৮ ডিসেম্বর থেকে। এ উপলক্ষে সোমবার বোমাং সার্কেল কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে বংশপরস্পরায় ঐতিহ্যবাহী রাজপুণ্যার তারিখ ঘোষণা করেন ১৭তম বোমাং রাজা ইঞ্জিনিয়ার উ চ প্রু চৌধুরী। এ সময় ১৪তম ও ১৫তম রাজার রাজপুত্র, সংবাদকর্মী ও হেডম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।
বোমাং রাজা উ চ প্রু চৌধুরী জানান, জুম খাজনা আদায়ের ঐতিহ্যবাহী এই অনুষ্ঠান শত বছর ধরে হয়ে আসছে। প্রতিবছর এই মৌসুমে রাজপুণ্যাহ অনুষ্ঠান করা হয়। আগামী ১৮ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় আনুষ্ঠানিকভাবে রাজপুণ্যাহ মেলার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। এটি ১৩৮তম রাজপুণ্যাহ মেলা। ৩দিন ব্যাপী আয়োজিত এই মেলার প্রথম দিন ১০৯টি মৌজার জুমিয়াদের রাজস্ব আদায়ের অনুষ্ঠান, ২য়দিন হেডম্যান সম্মেলন এবং তৃতীয় দিন রাজ পরিবারের সদস্যদের সাথে কুশল বিনিময়। তিনি জানান, বংশপরস্পরায় বোমাং রাজার ঐতিহ্য থাকলেও স্থায়ী কোন বোমাং রাজপ্রাসাদ নেই। তবে পৌর শহরে রাজার নামে ৮ একর জমি সরকারী ভাবে লিজ রয়েছে, কিন্তু ডিমার্কেশন করা নেই। ফলে আধুনিক রাজপ্রাসাদ তৈরীর চিন্তা মাথায় থাকলেও জমি চিহ্নিত ও পরিমাপ না থাকায় সম্ভব হচ্ছে না। এ বিষয়ে তিনি জেলাপ্রশাসকের সাথে আলাপ করলে জেলা প্রশাসক সার্ভের সমস্যার কারণে জায়গার পরিমাপ করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে তিনি সাংবাদিকদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।
আসন্ন রাজমেলা পন্ড করে দেয়ার হুমকি সম্পর্কে অভিযোগ করে বলেন, কোন গোষ্ঠি রাজপুন্যাহ মেলাটি ভেঙ্গে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে গোয়েন্দা নজরদারী বাড়ানো প্রয়োজন মনে করা হচ্ছে।
রাজপুণ্যাহ মেলায় দেশী-বিদেশী হাজার হাজার মানুষের পদচারনায় প্রাণবন্ত হয়ে উঠে শত বছরের এই ঐতিহ্যবাহী মেলা। মেলায় রাজস্ব আদায় অনুষ্ঠানের পাশাপাশি থাকছে, যাত্রাপালা, পুতুল নাচ, মৃত্যুকুপ, সার্কাস, যাদুপ্রদর্শনীসহ বিভিন্ন খেলা-ধুলা।
সম্পাদনা- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরোপ্রধান