॥ বান্দরবান প্রতিনিধি ॥
মিয়নমারের যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বান্দরবানে ছড়িয়ে পড়া আতঙ্কের কারণে পরীক্ষা কেন্দ্র নিয়ে কোনো ধরণের বিভ্রান্তিেেত না পড়ার অনুরোধ জানিয়েছে প্রশাসন। আসছে ১৫ ফ্রেব্রুয়ারি অনষ্ঠেয় এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ের কেন্দ্রটি বহাল আছে। প্রয়োজনে পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়টি দীর্ঘদিন দিন ধরেই এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এবার এই কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষার্থী ৫০২ জন শিক্ষার্থী। ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রয়েছে ১৫৯ জন বাকিরা কক্সবাজারের বালুখালী ও কুতুপালংয়ের।
সম্প্রতি মিয়ানমারে সাময়িক জান্তার সঙ্গে বিদ্রোহীদের সংঘাতের প্রভাব পড়েছে দেশের সীমান্তবর্তী এসএসসি পরীক্ষার এই কেন্দ্র ও পরীক্ষার্থীদের মাঝে।বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মর্টারশেল এসে পড়েছে এবং রকজন বাংলাদেশী নারীসহ দুইজন মারা গেছে । ভয়ে তারা পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারছেন না। আতঙ্কিত অভিভাবক এবং পরীক্ষার্থীরা। সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা শেষ করা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এসএসসি পরীক্ষার্থীরা নিরাপদে বাড়িতে অবস্থান ও যাতায়াত নিয়ে রয়েছে শঙ্কায়। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছে, তাদের নিরাপত্তায় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ খায়রুল বশর বলেন,পরীক্ষার্থীদের যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য স্কুলের কমিটিসহ আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। তিনি বলেন গতকাল (১০ফেব্রুয়ারী) অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(শিক্ষা ও আইসিটি) উম্মে কুলসুম পরীক্ষা কেন্দ্রটি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। তারা পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে হিসেবে চিঠি দিয়ে জানাবেন বলে জানান তিনি। তিনি যোগ করেন উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে কেন্দ্র হিসেবে স্থাপনের বিকল্প উপায় হিসেবে বিবেচনা করছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে,পরীক্ষা যেহেতু নিতে হবে সেক্ষেত্রে প্রয়োজনে পরিস্থিতি বিবেচনায় উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে কেন্দ্র হিসেবে চালাব। এ বিষয়ে অনুমোদনের জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষার অনুমোদন প্রয়োজন। তাই তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (চলতি দায়িত্ব) শান্তনু কুমার দাশ বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি বর্ণনা করে শিক্ষা বোর্ডে চিঠি পাঠিয়েছেন, এখন পরবর্তী সিদ্ধান্ত শিক্ষা বোর্ড নেবে। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন পরীক্ষাকেন্দ্র বাতিল কিংবা বিকল্প কেন্দ্র করা হয়নি, আগের পরীক্ষা কেন্দ্র বহাল আছে তবে পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তীতে শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানান তিনি।
পরীক্ষার কেন্দ্র বদল হলেও তুমব্রু, কোনারপাড়া ও জলপাইতলীর শিক্ষার্থীদের নিয়ে রয়েছে আলাদা দুশ্চিন্তা। তাদের বাড়িতে অবস্থান ও যাতায়াতের নিরাপত্তা নেই বললেই চলে। তবে শিক্ষকেরা জানান, এসব পরীক্ষার্থীর জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলা প্রথম পত্রের মধ্য দিয়ে শুরু হবে এবারের এসএসসি পরীক্ষা। শেষ হবে আগামী ১২ মার্চ। ২০২২ সালে এসএসসি পরীক্ষার সময়ও সীমান্তে সংঘর্ষ হয়। সে সময় কেন্দ্রটি কক্সবাজার জেলার উখিয়া কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়েছিল। এদিকে ,গত দিন পর শনিবার রাত থেকে ওপারে গুলোগুলি শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছেন ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান একে এম জাহাঙ্গীর আজিজ।