বিজয়ের আনন্দ আরো মূর্ত করে তুলতে পাহাড় ঘেরা রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের স্বচ্ছ জলে অনুষ্ঠিত হয়েছে জমজমাট নৌকা-বাইচ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত নৌকা বাইচ দেখতে শত শত নারী-পুরুষের ঢল নামে। কেউ নৌকা, কেউ বা বোটে আবার কেউবা লঞ্চে করে কাপ্তাই হ্রদে নৌকা বাইচ উপভোগ করতে আসেন।
প্রতিযোগীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণকালে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান বলেন, নৌকা বাইচ গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য খেলা। যুগে যুগে গ্রাম বাংলায় এ নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। নৌকা বাইচ মানুষের জনপ্রিয় খেলা হিসেবে বিনোদন প্রদান করে। এ খেলাকে কেন্দ্র করে গ্রাম বাংলার সকল মানুষ একত্রে মিলিত হয়।
তিনি আরো বলেন, রাঙামাটির মতো একটি পাহাড়ি অঞ্চলে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় শুনে এবং এ অনুষ্ঠানে আসতে পেরে আমার খুবই ভাল লাগছে।
নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার আহবায়ক মুছা মাতব্বরের সভাপতিত্বে এসময় বিশেষ অথিতির বক্তব্য রাখেন, রাঙামাটি জেলার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক প্রকাশ কান্তি চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আবু শাহেদ চৌধুরী, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মো.শহিদুল্লাহ প্রমুখ।
নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতায় বড় নৌকা পুরুষ (১৯জন) প্রথম হয়েছে, মধ্যম আদম পাড়ার সাধন ত্রিপুরার দল, ২য় হয়েছেন, কেইল্যামুড়া এলাকার তাতু মণি ত্রিপুড়ার দল এবং ৩য় হয়েছেন,আমতলী এলাকার বাইজ্যা ত্রিপুড়ার দল।
মাঝারী নৌকা পুরুষ (১৫) প্রথম হয়েছে, কেইল্যামুড়া এলাকার বাইট্যা ত্রিপুড়ার দল, ২য় হয়েছে একই এলাকার শান্তি মণি ত্রিপুড়ার দল এবং তৃতীয় হয়েছেন, একই এলাকার সাধন ত্রিপুড়ার দল।
ছোট নৌকা পুরুষ (১১জন) প্রথম হয়েছে, সাওতাল পাড়ার আবু তাহেরের দল, দ্বিতীয় হয়েছে আমতলী এলাকার সুকুমার, তৃতীয় হয়েছে, পুরান পাড়া এলাকার মো. আমিন’র দল।
ছোট নৌকা মহিলা (১১জন) প্রথম হয়েছে কেইল্যামুড়া এলাকার রচনা ত্রিপুড়ার দল, দ্বিতীয় হয়েছে, একই এলাকার শান্তি রাণী ত্রিপুড়ার দল এবং তৃতীয় হয়েছে একই একার কল্পনা ত্রিপুড়ার দল।
সাম্পান বাইচ প্রতিযোগিতায় একক (পুরুষ) প্রথম হয়েছে পুরান পাড়া এলাকার মো. জামাল, দ্বিতীয় হয়েছে একই এলাকার আব্দুল মান্নান এবং তৃতীয় হয়েছে একই এলাকার মো. দিদার।
জেলাপ্রশাসক মানজারুল মান্নান নৌকা বাইচ প্রতিযোগিদের মাঝে পুরস্কার ও সনদপত্র বিতরণ করেন।
এসময় জেরা প্রশাসকআলো বলেন, রাঙামাটি একটি সমৃদ্ধসীল পর্যটন নগরী করা সম্ভব। যদি আমরা সকলে এ অঞ্চলের জন্য এক সাথে কাজ করি। আসুন রাঙামাটিকে পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য এক সাথে কাজ করি। আজকে যারা নৌকা বাইচ প্রতিযেগিতায় ১ম, ২য়, ৩য় হয়েছেন তাদের অভিবাদন জানাই এবং যারা জিততে পারেনি তাদেরও শুভেচ্ছো জানাই।
তিনি বলেন, আমি চাই বাংলার ঐতিহ্যর এ নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হোক। আর যারা অনেক কষ্ট করে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছেন তাদেরও অসংখ্য ধন্যবাদ ও সফলতা কামনা করছি এবং প্রতিবছর যেন নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করার মাধ্যমে বাংলার এ ঐতিহ্য শিল্পকে ঠিকিয়ে রাখে।