বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হলো দোছড়ি ও মুনলাই পাড়া; উদ্বোধন করলেন পার্বত্য মন্ত্রী

439

॥ নুরুল কবির ॥

বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্বের সর্বশেষ দোছড়ি ইউনিয়নটিও বিদ্যুতের আওতায় এসেছে। প্রায় ১১কিলোমিটার দূর থেকে সমতল এলাকা বিদ্যুত সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে দীর্ঘ ৫১বছর পর আলোকিত হয়েছে পাহাড়ের দুর্গম ইউনিয়ন। শনিবার দুপুরে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দোছড়ি কমিউনিটি ক্লিনিক সংলগ্ন মাঠে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন। তিন পার্বত্য জেলায় বিদ্যুত বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হয়েছে ২কোটি ৭০লাখ টাকা। দোছড়িতে বিদ্যুতায়নের মাধ্যমে উপজেলার পাচঁ ইউনিয়ন এখন বিদ্যুতের আলো পৌছাল।

পরে ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ ও পার্বত্য উন্নয়ন বোডের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন ও ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেন পাবত্যমন্ত্রী।

এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বীর বাহাদুর এমপি বলেছেন- পার্বত্য চট্টগ্রাম হলে শান্তিময় অঞ্চল। এই পার্বত্য বান্দরবান সম্প্রীতির বান্দরবান হিসেবে পরিচিত। এখানে সন্ত্রাস বা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কোনো স্থান নেই। যেকোনো সন্ত্রাসী কর্মকান্ডকে শক্তহাতে মোকাবেলা করতে সরকার বদ্ধ পরিকর। তিনি বলেন, নিরাপত্তা বাহিনী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং প্রশাসন যেকোনো সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসীদের কর্মকান্ডকে ছাড় দেবে না। তবে এ জন্য জনগণের সহযোগিতা প্রয়োজন। জনগণ সহযোগিতা করলে বান্দরবান শান্ত থাকবে, তাহলে এখানকার কাঙ্খিত উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। এসময় উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শেখ সাদেক, রাঙ্গামাটি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জল বড়ুয়া,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অশোক কুমার পাল, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য মোজাম্মেল হক বাহাদুর, লক্ষী পদ দাশ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)র নির্বাহী প্রকৌশলী মো: জিল্লুর রহমান, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বিন মো: ইয়াছির আরাফাত, জেলা আওয়ামীলীগ সদস্য আবু তাহের কোং, জেলা আওয়ামীলীগ সদস্য তসলিম ইকবাল চৌধুরী, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো: শফিউল্লাহ, ইউএনও সালমা ফেরদৌস, দোছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইমরান প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে ১৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকার বেশি ব্যয়ে ৬টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন পার্বত্যমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি। এসময় পার্বত্যমন্ত্রী বীর বাহাদুর দোছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এলজিইডি, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ বিতরণ প্রকল্পের আওতায় দোছড়িতে দুই কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রায় ১১ কিলোমিটার দূর থেকে বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫১ বছর পর দোছড়ি বিদ্যুতের আলোকিত আলোকিত হলো।
এর আগে সকালে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদরের রেস্ট হাউসে জেলা পরিষদের অর্থায়নে এমব্রয়ডারী মেশিন ও দলীয় নেতাদের অর্থায়নে কম্বল ও মাষ্ক বিতরণ করেন মন্ত্রী।

এদিকে শুত্রুবার বিকালে বান্দরবান এলজিইডি’র নির্বাহীপ্রকৌশলী নাজমুস সাদাত জিল্লুর রহমান জানান, এলজিডিইর তত্ত্বাবধানে ২২ কোটি ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৯টি প্রকল্প উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন পার্বত্যমন্ত্রী।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে ৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪টি প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়। বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে প্রায় তিন কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে ৮টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর এবংবিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে ৯৯ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড-রাঙামাটির প্রকল্প পরিচালক উজ্জ্বল বড়–য়া জানান, ৯৯ লাখ টাকা ব্যয়ে বিদ্যুৎ প্রকল্পের উদ্বোধনের মাধ্যমে রুমা উপজেলার মুনলাই পাড়ার ৬৫টি পরিবার বিদ্যুতের আওতায় আসবে।