স্টাফরিপোর্ট- ২৫ জুন ২০১৮, দৈনিক রাঙামাটি: বিদ্যুৎ ভোগান্তিতে নাকাল রাঙামাটির বরকল উপজেলাবাসী। সেখানে বিদ্যুতের সংযোগ দেয়া হয়েছে কিন্তু বিদ্যুৎ নেই। প্রায় সময় বিদ্যুৎহীন থাকে উপজেলা সদর। সপ্তাহে ৩-৪ দিন বিদ্যুৎ থাকে না। যখন বিদ্যুৎ থাকে তাও লো-ভল্টেজের। তাতেও আবার ঘনঘন লোডশেডিং। বিদ্যুতের সংযোগ দেয়া হলেও তা কেবল নামে। তা ছাড়া বিদ্যুৎ সরবরাহ না দিয়েও প্রতি মাসে দেয়া হয় ভুয়া বিল। ফলে বিদ্যুৎ নিয়ে ভোগান্তির শেষ নেই বরকলের গ্রাহকদের। তারা বিদ্যুৎ নিয়ে এসব সমস্যা ও সংকটের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের স্থানীয় কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা এবং নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ করে বলেছেন, অবিলম্বে দুর্নীতিগ্রস্ত এসব কর্মকর্তা কর্মচারীদের অপসারণসহ বরকলে সাবস্টেশন স্থাপন করে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবি করেন।
রোববার দুপুরে উপজেলা সদরে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে এসব কথা বলেন, সেখানকার বিক্ষুব্দ জনতা। বরকল উপজেলা মাঠ থেকে মিছিলটি বের করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হয়ে বরকল বাজার ঘুরে উপজেলা পরিষদ ভবনের সামনে গিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়। বরকল বিদ্যুৎ গ্রাহক উন্নয়ন কমিটির সভাপতি আবু বক্করের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বরকল উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি পুলিন বিহারী চাকমা, সাধারণ সম্পাদক বিহারী চাকমা, বরকল বৌদ্ধ বিহারের সভাপতি মংহ্লাচিং মারমা, উপজেলা হেডম্যান সমিতির সভাপতি নন্দ বিকাশ চাকমা ও শিক্ষক সমর বিকাশ চাকমা প্রমুখ। এ সময় বৃষ্টি উপেক্ষা করে এলাকার অগণিত নারী-পুরুষ সমবেত হন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ১৯৬০ সালে কাপ্তাইয়ে বাঁধ নির্মাণের দীর্ঘ প্রায় ৫৫ বছরের মাথায় ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে বরকলে বিদ্যুৎ লাইনের সংযোগ স্থাপন করা হয়। এরপরও বিদুৎ সুবিধাবঞ্চিত বরকলের মানুষ। তারা অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করা হয় কাপ্তাই হয়ে বিলাইছড়ি উপজেলা সদর থেকে। সেখানে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিকাশে টাকা পাঠানো হলে বিদ্যুৎ সরবরাহ দেয়া হয়। অন্যথায় সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়। বরকলে শুধু এক কর্মচারী কর্মরত। কিন্তু তিনি কর্মস্থলে থাকেন না, থাকেন রাঙ্গামাটি শহরে। সেখান থেকে ভুয়া ও গড়বিল তৈরি করে গ্রাহকদের মাঝে বিলি করেন।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন, বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে কাপ্তাইয়ে কর্মরত বিদ্যুতের আবাসিক প্রকৌশলী আবদুল মজিদ ও বিলাইছড়ির লাইনম্যান ফয়েজ বলেন, বিকাশে টাকা নেয়ার অভিযোগ অবান্তর। এলাকার ভৌগলিক অবস্থানের কারণে সংযোগ লাইনের দূরত্বতা ও যান্ত্রিক সমস্যার ফলে বরকলে নিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হয় না। কাপ্তাই থেকে বিলাইছড়ি ৯০ কিলোমিটার, বিলাইছড়ি থেকে জুরাছড়ি ৩০ কিলোমিটার এবং জুরাছড়ি থেকে বরকল ৩০ কিলোমিটার দূরে। এত দূরত্বে কোথাও সাবস্টেশন নেই। ফলে সরবরাহ দেয়া বিদ্যুতের ভল্টেজ লো হয়ে যায়।
বরকলে দায়িত্বে কর্মরত লাইনম্যান বিনোদ বিহারী চাকমা বলেন, সেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহ দেয়া হয় কাপ্তাই থেকে। এখানে তার কোনো হাত নেই। তা ছাড়া বরকলে তেমন কোনো কাজ না থাকায় যখন প্রয়োজন তখন বরকল যান তিনি।
পোস্ট করেন- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরো প্রধান।