বিধি-নিষেধ প্রত্যাহারের পর পেখম মেলতে শুরু করেছে রাঙামাটির পর্যটন কেন্দ্রগুলো

372

॥ মঈন উদ্দীন বাপ্পী ॥

দীর্ঘ চার মাস বন্ধ থাকার পর থেকে খুলে দেয়া হয়েছে রাঙামাটির সকল পর্যটন কেন্দ্র। ঝুলন্ত সেতু, সাজেক এবং রাঙামাটির দ্বীপ সাদৃশ্য ছোট ছোট পর্যটন কেন্দ্রসহ কাপ্তাই, বিলাইছড়ি, সুবলং, ধূপপানি, ও নকাটাছড়ার প্রাকৃতিক ঝর্ণাগুলো এখন ভ্রমণ পিপাসুদর জন্য উন্মক্ত। শুধু স্বাস্থ্যবিধি মেনেই স্পটগুলোতে যেতে হবে দর্শনার্থীদের।

বিধি-নিষেধ প্রত্যাহারে সরকারি ঘোষণার সাথে সাথে দর্শনার্থীরাও আসতে শুরু করেছে প্রকৃতির রাণী রাঙামাটিতে। আক্ষরিক অর্থে পর্যটন কেন্দ্রগুলো এখনও সরগরম হয়ে না উঠলেও আড়মোড়া ভেঙ্গে দাঁড়াবার চেষ্টা করছে।

গত বছরে ধকল কাটিয়ে এ বছরের শীতের শেষ দিকে যখন পাহাড়ের পর্যটন ব্যববসা ঘুরে দাঁড়ানো চেষ্ট করছিল। ঠিক তখন আবারো করোনার প্রকোপ বাড়তে শুরু করায় আবারও এপ্রিলে বন্ধ করে দেয়া হয় পর্যটন কেন্দ্রগুলোসহ রাঙামাটি শহরের সকল হোটেল। দীর্ঘ দিনের লকডাউন ও বিধি নিষেধে পর্যটন কেন্দ্রিক রাঙামাটির পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িরা। শুধু তাই নয়, আর্থিক সংকটে পড়ে কষ্টে দিন যাপনকরছিলো এইসব প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা।

গত চার মাসে জেলার হোটেল-মোটেল, বিনোদন কেন্দ্র, পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ থাকায় ২২ কোটি টাকার বেশি লোকসান হয়েছে বলে জানান পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। বৃহস্পতিবার ১৯ আগস্ট থেকে সীমিত পরিসরে খুলে দেওয়া হয়েছে পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র গুলো। যেখানে লোক সমাগম করা যাবে ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক। তবে দীর্ঘ ১২০ দিন বন্ধ থাকায় বেকার হয়ে গেছে পর্যটন ব্যবসার সাথে জড়িতরা।

রাঙামাটি পর্যটন ঘাটের ট্যুরিস্ট বোর্ড ইজারাদার মো. রমজান আলী বলেন,গত বছর থেকে বোর্ড মালিক ও চালকরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। পর্যটন ঘাটে প্রায় শতাধিক বোর্ড রয়েছে। পর্যটক কেন্দ্র বন্ধ থাকায় লোকসান হয়েছে
ব্যবসায়ীদের।

এদিকে রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশনসহ সাজেক ও কাপ্তাইসহ বিভিন্ন স্থানে পর্যটকদের ভ্রমণ চার মাস বন্ধ থাকায় পর্যটন খাতে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। রাঙামাটির অন্যতম আকর্ষণীয় বিনোদনকেন্দ্র শহরের পলওয়েল পার্কও পর্যটকদের পদচারণায় মুখর থাকে। কাপ্তাই হ্রদের পাশে এটির অবস্থান এবং ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে এখানে একটি ‘লাভ পয়েন্ট’ রয়েছে, যা দেখতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ভ্রমণ পিপাসুরা ভিড় করেন। পলওয়েল পার্কের কর্মীরা

জানান, প্রতি শুক্রবার ও বন্ধের দিনে পর্যটকদের ভিড় থাকে সবচেয়ে বেশি। প্রতি মাসে দুই থেকে আড়াই কোটি টাকা আয় হতো। সেই হিসাবে বন্ধ থাকায় গত ৫ মাসে ৯ থেকে ১০ কোটি টাকার ক্ষতির মুখে তারা।
রাঙামাটি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্স এর বাণিজ্যিক কর্মকর্তা মো. সোয়েব বলেন, ক্ষতি যা হওয়ার হয়েছে। সারাবিশশ্বের মানুষ ক্ষতির সন্মুখীন হয়েছে। এখন আমাদের একটা লক্ষ্য সকল ক্ষতি পুষিয়ে ঘুরে দাঁড়ানো। তিনি আরও বলেন, আমরা পুরোদমে পর্যটকদের আসতে দিচ্ছি না। ধারন ক্ষমতার অর্ধেক পর্যটক প্রবেশ করতে পারবে। তবে মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি।

দীর্ঘদিন পর পর্যটন কেন্দ্রিক রাঙামাটি জেলায় পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্রগুলো খোলে দেওয়ার ফলে করোনাকালে সৃষ্ট অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির লাগাম ধরা সম্ভব বলে মনে করেন স্থানীয় বিশিষ্টজনেরা।