সুপেয় পানির চরম সংকটে বিলাইছড়ির ২শত পরিবার

333

॥ রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি ॥

বিলাইছড়ি উপজেলার ৪নং বড়থলি ইউনিয়নে সুপেয় পানির অভাবে চরম সংকটে লেকের পাড়ে অন্তত ২শত পরিবার লোকজন। দ্রুত খাবার বা পান করার মতো পানি সংগ্রহ করতে স্থায়ী সমাধান চেয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দরা।

জানা গেছে, বড়থলির সমতল হতে প্রায় ১হাজার ২শত ফুট উচ্চতায় আয়তনে প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকা এই পুকুর পাড়। যেতে হলে বান্দরবানে রুমা হয়ে এবং বিলাইছড়িতে ফারুয়া হয়ে টানা ১দিন হাঁটলে পৌছা যায় এই নয়নাভিরাম রাইংখ্যং লেকে। এই দুই পাড়ে রয়েছে প্রাজং পাড়া ও পুকুর পাড়া এই দুই পাড়া, রয়েছে ১টি বড় সেনাক্যাম্পও।

কিন্তু নেই কোন বিশুদ্ধ পানির। বিশুদ্ধ খাবার বা পান করার মত পানি সংগ্রহ করতে হলে ২০-৩০ মিনিট হেঁটে গিয়ে ঝিঁড়ি হতে শুঁয়ে শুঁয়ে বোতলের মাধ্যমে সংগ্রহ করতে হয়। কলসি দিয়ে পানি সংগ্রহ করতে হলে সময় লাগে প্রায় ৩০- ৪০ মিনিট। এই জন্য দিনে ও রাত্রে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে পানি সংগ্রহ করতে হয় স্থানীয় এলাকার লোকজনকে।

সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে বিশাল এই রাংখ্যং লেকের পানি সবসময় পান করা যায়না। বছরেই কোন একসময় হঠাৎ এইসব পানি বিষাক্ত হয় বলে স্থানীয়রা জানান। এসময় লেকের পানি বিভিন্ন আকার ধারণ করে বলেও জানান তারা। তাই পাহাড়ি ঝিঁড়ির পানি একমাত্র ভরসা হয়ে উঠে। এখানকার সব গ্রামে পানি টেপের মাধ্যমে সংগ্রহ করতে হয়। কিন্তু পুকুর পাড়ের বাসিন্দাদের এই ধরণের ব্যবস্থা না থাকায় চরম সংকটে ভুগছেন এলাকায় জনগণ। তাই স্থানীয়দের দাবি সরকারি ভাবে কোন সহযোগিতা না পেলে ও এন,জি,ও এবং কোন দাতাগোষ্ঠী সহযোগিতা কামনা করছেন তারা।

এবিষয়ে ৪নং বড়থলি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতুমং মার্মার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি পানি সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, আমার ইউনিয়ন পরিষদ হতে বিশুদ্ধ পানি দেয়ার চেষ্ঠা করেছিলাম কিন্তু দিতে পারি নাই। সংশ্লিষ্টরা এটার খরচ দেয়া খুব বেশি প্রয়োজন। অনেক দূর থেকে বিশুদ্ধ পানির লাইন আনতে হবে। সেই রকম বাজেট না পেলে কিভাবে করবো। বিষয়ে আমি উপজেলা প্রশাসনের কাছে আমি আবেদন করেছি। কিন্তু এখনো পর্যন্ত এই বিষয়ে কোন কিছু আমার কাছে আসে নাই।

এই বিষয়ে বিলাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমানও পানি সংকটের কথা স্বীকার করে জানান, পানি সংকট নিরসনের উদ্যোগ গ্রহন করেছি এবং ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গেও কথা হয়েছে। তিনি সম্ভাব্যতা সম্পর্কে যাচাই-বাছাই করে অবহিত করবেন বলে ইঞ্জিনিয়ার জানিয়েছেন। জাপান ইণ্টারন্যাশনাল এজেন্সি (জাইকা)কে নিয়ে কাজ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। আর সময় ও সুযোগ পেলে বড় থলি পুকুর পাড়ের বাসিন্দাদের সঙ্গে দেখা করবেন এবং তাদের সুখ-দুঃখের কথা শুনবেন এবং দ্রুত এই বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।