ভাইস চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবি করে রাঙামাটি ছাত্রলীগের সংবাদ সম্মেলন

372

॥ সৌরভ দে ॥
রাঙামাটি সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন ইসলামের অপসারণ দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছে রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগ। নাসরিন ইসলাম সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন উল্লেখ করে যে বক্তব্য দেন তার প্রতিবাদে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, ছাত্রলীগকে জড়িয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে নাসরিন ইসলাম যে সকল মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন, তা তথ্য প্রযুক্তি আইনের সু-স্পষ্ট লঙ্ঘন। গণমাধ্যমকে ব্যবহার করে মানহানিকর মিথ্যা তথ্য প্রদান করায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুন্ন হয়েছে বলেও দাবি করেছে ছাত্রলীগ।

গত ২৯ আগস্ট ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন ইসলাম রাঙামাটি প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তার উপর অব্যাহত নির্যাতনের বিচার দাবি করেন। ওই সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে ছাত্রলীগ কে জড়িয়ে মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করা হয় বলে দাবি করেছে ছাত্রলীগ।

মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ চাকমা। এসময় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল জব্বার সুজন, সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান, সহ-সম্পাদক আনোয়ার হোসেন কায়সার, সহ-সম্পাদক ইমররুল হোসেনসহ ছাত্রলীগের অন্যান্য নেতাকর্মীরা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে দাবি করা হয়, ২০০৫ সালের ছাত্রদলের কমিটিতে ছিলেন রাঙামাটি সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন ইসলাম। এসময় তিনি দাবির স্বপক্ষে প্রমাণ হিসেবে ২০০৫ সালে গঠিত রাঙামাটি সরকারি কলেজ ছাত্রদলের পূর্নাঙ্গ কমিটির তালিকা উপস্থাপন করেন।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, দীর্ঘদিন যাবৎ নাসরিন ইসলামকে নির্যাতনের অভিযোগ করলেও তিনি আইনের আশ্রয় বা প্রশাসনকে অবহিত করেন নি কেন? তাকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ করলেও তিনি হাসপাতালে ভর্তি হলেন না কেন? তার বাসা থেকে বিভিন্ন জিনিষপত্র চুরি হওয়ার যে তথ্য তিনি দিয়েছেন তার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো তিনি থানা পুলিশকে কেন দিলেন না? ইতিমধ্যে তার বাসায় এহেন অনৈতিক কর্মকান্ডের বিষয়টি অবহিত হওয়ায় তাকে বাসা ছেড়ে দিতে বলেন বাসার মালিক মৃত নুরুল হুদার স্ত্রী। কিন্তু উক্ত ভদ্র মহিলাকেও নানা ধরণের হুমকি প্রদান করে বাসাটি দখল করে রেখেছে ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন ইসলাম।

এছাড়াও ঘটনার পরদিন থেকে নিজের মুঠোফোন নাম্বার ব্যবহার করে নাসরিন ইসলাম নিজেকে পুলিশ কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে ছাত্রলীগের বিভিন্ন নেতা কর্মী ও তাদের পরিবারকে হুমকি ধামকি প্রদান করে আসছে। যার অডিও ভয়েস রেকর্ডও সংরক্ষিত আছে। তিনি সংবাদ সম্মেলনে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতিকে জড়িয়ে যে মিথ্যা তথ্য প্রদান করেছেন, তা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তাকে সহ ছাত্রলীগকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য করা হয়েছে।

ছাত্রলীগ জানায় সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য বানোয়াট জেনেও আমরা একটি দায়িত্বশীল ছাত্র সংগঠন হিসেবে নাসরিন ইসলামের অভিযোগগুলো তদন্ত করে দেখেছি। তাতে পাওয়া তথ্য সুখকর নয়। তারা উল্লেখ করেন যে, নাসরিন ইসলাম রাঙামাটি সদর উপজেলা কৃষক লীগের সাথে জড়িত ছিলেন এবং বিতর্কিত কর্মকান্ডের জন্য বহিষ্কৃত হয়েছেন। পক্ষান্তরে তিনি নিজেকে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদিকা হিসেবে প্রেস ব্রিফিং-এ দাবী করেন যা সত্য নয়।