॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥
বাদী পক্ষকে ভয়ভীতি ও চাপ প্রয়োগ করে আপোষনামায় স্বাক্ষর করতে বাধ্য করায় বাঘাইছড়িরর ৩৭নং আমতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রাসেল চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন রাঙামাটি চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সি.আর) কগনিজেন্স আদালত আসাদ উদ্দীন মো. আসাদ।
রাঙামাটি চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সূত্রে প্রাপ্ত নির্দেশনা বলা হয়- ‘পিটিশন মামলা নং ১/১৯ দৃষ্টে দেখা যায় বিগত ০৮/০১/২০১৯ইং তারিখ বাদী মো. মোস্তফা ইসলাম সর্বমোট ২০ জন আসামীর বিরুদ্ধে একটি নালিশ দায়ের করেন। নথি দৃষ্টে দেখা যায় নালিশী মামলার একই ঘটনা নিয়ে অপর ব্যক্তি একটি জি.আর মামলা নং-১ তাং-০৩/০১/২০১৯ নং দায়ের করেন। যাহা বিগত ১৩/০৩/২০২০ইং তারিখ অফিসার ইনচার্জ, বাঘাইছড়ি উক্ত মামলায় চুরান্ত রিপোর্ট দাখিল করেছেন মর্মে বিজ্ঞ কগনিজেন্স (সি.আর) আদালতকে অবহিত করেন।
একই ঘটনা নিয়ে (সি.আর) কগনিজেন্স আদালতে দন্ডবিধি, ১৮৬০ এর ধারা
১৪৩/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩৮৫/৩৭৯/৫০৬ উল্লেখপূর্বক ০১/১৯নং মামলা চলমানাধীন। অত্র মামলার ঘটনার প্রেক্ষিতে মামলা চলমানাধীন থাকা অবস্থায় বিগত ১২/০২/২০২০ইং তারিখ বাদী মো. মোস্তফা ইসলাম অফিসার ইনচার্জ, বাঘাইছড়ি বরাবর একটি আবেদন দাখিল করে বলেন যে, বাদী এবং আসামীগণের সামাজিক নেতৃবৃন্দের মধ্যস্থতায় আপোষ মীমাংসা হয়ে গেছে যেখানে দেখা যাচ্ছে মো. রাসেল চৌধুরী, চেয়ারম্যান, ৩৭নং আমতলী ইউপি আবেদনের বাম পার্শ্বে লিখেছেন যে- “বাদীর আবেদনের আলোকে বিবাদীদের মামলা হইতে অব্যাহতি প্রদানের জন্য জোর সুপারিশ করছি।”
মো. রাসেল চৌধুরী, চেয়ারম্যান, ৩৭নং আমতলী ইউপি এর এমন সুপারিশ করার আইনগত কোন ক্ষমতা বা এখতিয়ার আছে কিনা আদালত প্রশ্ন উত্থাপন করে উক্ত ব্যক্তিকে কারণ প্রদর্শনের সুযোগ প্রদান করেন। কিন্তু তিনি আদালতে উপস্থিত হয়ে কোনরূপ জবাব দাখিল করেননি। পরবর্তীতে তার নিকট আদালত একই বিষয় নিয়ে পুনরায় জবাব প্রদানের জন্য সুযোগ প্রদান করেন।
মো. রাসেল চৌধুরী, চেয়ারম্যান, ৩৭নং আমতলী ইউপি, জবাব দাখিল করে আদালতের নিকট জবাব দাখিল করে ক্ষমা প্রার্থনা করে বলেন যে তিনি আইন সম্পর্কে না জানার কারণে আপোষনামায় আসামীদের মামলা হতে অব্যাহতির জোর সুপারিশ করেছেন। একই তারিখ ও সময়ে বাদী হাজির হয়ে আদালতে আলাদা জবানবন্দী প্রদান করে।
বাদীর বক্তব্য পাওয়ার পর আদালত মনে করে, ‘মোঃ রাসেল চৌধুরী, চেয়ারম্যান, ৩৭নং আমতলী ইউপি, রাঙামাটি দন্ডবিধি, ১৮৬০ এর অধীনে ৩২৩/৩৪২/৩৮৫/৫০৬ ধারায় অপরাধ সংগঠন করেছেন। বাদীর জবানবন্দীতে সহযোগী আসামীদের বিরুদ্ধেও সুস্পষ্ট বক্তব্য প্রদান করে।
এই প্রেক্ষিতে আদালত চেয়ারম্যান রাসেল চৌধুরীর বিরুদ্ধে- আদালতের নিকট বাদীর জবানবন্দিকে এফআইআর হিসেবে গণ্য করার জন্য এবং একই সাথে আগামী ২৪/০২/২০২১ইং তারিখ উক্ত অপরাধ এফআইআর হিসেবে গণ্য করার প্রতিবেদন দাখিলের জন্য অফিসার ইনচার্জ, বাঘাইছড়িকে নির্দেশ প্রদান করেন। কারণ তিনি বাদীকে তার অফিসে ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক ভয়ভীতি দেখিয়ে মামলার আপোষনামায় স্বাক্ষর গ্রহণ করে বাদীর বিচার প্রার্থনা করার অধিকার নিয়ন্ত্রিত এবং বিলুপ্তি করার অপরাধ করেছেন।