মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিদর্শকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তির সুপারিশ

1071

॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর রাঙাামটির উপ-পরিদর্শক মো. জসীম উদ্দীনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তির সুপারিশ করেছেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আসাদ উদ্দীন মো. আসিফ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেঞ্চ সহকারি মো. আশরাফুল হক।

জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সূত্র জানিয়েছে- বিগত ০২/০২/২১ইং তারিখ অত্র মামলাটি সাক্ষ্যর জন্য দিন ধার্য্য ছিলো। আসামী হাজিরা প্রদান করেছেন অত্র মামলার সর্বমোট ০৬ জন সাক্ষীর মধ্যে দুই (০২)  জন সাক্ষীর জবানবন্দী এবং জেরা গ্রহণ করা হয়েছে। অত্র মামলায় বাদী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর রাঙাামটির উপ-পরিদর্শক মো. জসীম উদ্দীন সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। সাক্ষ্য প্রদান শেষে আদালত বাদীকে অপরাপর সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রদানের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি প্রতি উত্তরে জানান যে “ আদালতের বিচারকগণ আমাদের নাকে খড় দিয়ে বেড়াচ্ছে, আমরা এত সাক্ষী কিভাবে দিব, আমরা অন্যান্য কাজে অত্যান্ত ব্যস্ত।

আদালত রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের এমন একজন সরকারী কর্মকর্তার মন্তব্য কেন আদালত অবমাননা হবেনা এবং তাঁর বিরুদ্ধে কেন বিভাগীয় ব্যবস্থার সুপারিশ করা হবে না মর্মে কারণ প্রদর্শনের সুযোগ প্রদান করেন। অদ্য ধার্য তারিখে জসীম উদ্দিন উপপরিদর্শক, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর,রাঙামাটি জবাব দাখিল করে বলেন যে তিনি ভুলবশতঃ আদালতের সাথে অন্যায় আচরণ করেছেন এবং তাহার এমন আচরনের দরুন তিনি ক্ষমাপ্রার্থী।

ফৌজদারী বিচার ব্যবস্থায় সাক্ষী হল মামলার প্রাণ। বাদীকেই সাক্ষী দ্বারা আদালতে আসামীর অপরাধ প্রমাণ করতে হবে। অথচ বাদী সাক্ষীর উপস্থিতি নিয়ে আদালতের প্রতি এমনভাবে তীর্যক সন্তব্য করেছেন যাহা আদালত অবমাননাসহ সমগ্র বিচার ব্যবস্থার উপর একটি বড় আঘাত। আদালত সরকারী একজন কর্মকর্তার নিকট হতে এরূপ আচরণ কোনরূপ আশা করে না।

আদালতকে এভাবে কটাক্ষ করে কথা বলার অর্থ আদালতকে অসম্মান এবং অবজ্ঞা করা। আদালতকে অসম্মান করা হলে বিচার ব্যবস্থার ভীত নড়বড়ে হয়ে যায় তথাপি আদালত এবং বিচার ব্যবস্থার উপরে জনগণের মধ্যে আস্থাহীনতা সৃষ্টি হয়। বাদীর এমন অশালীন আচরণে আদালতের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। এরুপ অবস্থায় আদালতের প্রতি তীর্যক মন্তব্য এবং ভাবমুর্তি ক্ষুন্নকারী ব্যক্তিকে ক্ষমা করলে ভিন্ন নজীর স্থাপন হবে। পরবর্তীতে রাষ্ট্রের কোন কর্মকর্তা এবং কর্মচারীর যেন আদালতের প্রতি এমন অসদাচরন করার মানসিকতা সৃষ্টি না হয় সেজন্য আবেদনকারীকে ক্ষমা করার কোন সুযোগ বিদ্যমান নেই।

সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর রাঙাামটির উপ-পরিদর্শক মো. জসীম উদ্দীন রাঙামাটি এর বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তির সুপারিশ করা হল।

উপ-পরিদর্শক, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্ত, রাঙামাটিকে অত্র আদেশের কার্যকারিতা বিষয়ে আগামী ১৫/০৩/২০২১ইং তারিখ লিখিত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দশ প্রদান করা হল।