আল মামুন- খাগড়াছড়ি , ২৬ জানুয়ারি ২০১৬, দৈনিক রাঙামাটি : খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি উপজেলার একমাত্র ১০ শয্যার হাসপাতালটি এখন সমস্যার আবর্তে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। ইঞ্জিন বিকল হওয়ায় দীর্ঘ ৫ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে এম্বুলেন্স সার্ভিস। এতে করে জরুরি চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত ৬০ হাজার মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খাগড়াছড়ির প্রত্যন্ত জনপদ মানিকছড়ি উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের ৬০ হাজার মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র ১০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটি চলছে জরাজীর্ণ টিনসেড ভবনে। খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন এ হাসপাতালটিতে উপজেলার সীমান্তবর্তী রামগড়, লক্ষীছড়ি উপজেলার প্রত্যান্তাঞ্চলের চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত রোগীরা যাতায়াত সুবিধার কারণে এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে ভিড় জমায়। দৈনিক ৫’শ থেকে ৬’শ রোগীর চিকিৎসা দিতে গিয়ে ৪জন এম.বি.বি.এস ও ২জন উপ- কমিউনিটি ডাক্তারকে চরম বেগ পেতে হয়। কারণ হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের জন্য মাত্র ১০টি বেড থাকার কারণে প্রতিদিন অসংখ্য রোগীকে মেঝেতে শুয়ে কিংবা সুদূর চট্টগ্রাম গিয়ে চিকিৎসা নিতে হয়।
এছাড়াও প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনা, পারিবারিক বিরোধ, রাজনৈতিক সংঘাতের কারণে হাসপাতালে আসা জরুরি রোগীদের চরম দুর্ভোগের স্বীকার হয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় ৬৫ কি.মি. পথ পাড়ি দিয়ে চট্টগ্রাম যেতে পথেই অনেকের মৃত্যু ঘটে। গত ৫ মাস ধরে একমাত্র এ্যাম্বুলেন্সটি বিকল থাকায় জরুরি সেবা বঞ্চিত উপজেলার ৬০ হাজার মানুষ। হাসপাতালে উন্নতমানের এক্সরে মেশিনটি দীর্ঘ ৯ বছর ধরে অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ফলে রোগীরা বাইরে গিয়ে নিম্নমানের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা-নিরিক্ষা করে হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
উপজেলার লেমুয়া এলাকা থেকে ডেলিভারী রোগী নিয়ে আসা মো. সোহাগ জানান, তার স্ত্রীর অবস্থা আশংকাজনক ডাক্তাররা তাকে খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু হাসপাতালের এ্যম্বুলেন্সটি বিকল থাকায় মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে বিকল্প পরিবহনে নিতে হয়েছে। এ্যাম্বুলেন্স চালক মো. জহির জানান, গত ১৭ আগস্ট ২০১৫ইং তারিখ থেকে এ্যম্বুলেন্সটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে গ্যারেজে পড়ে আছে। আনুমানিক দুই লক্ষ টাকার প্রয়োজনীয় মালামাল আসলে এ্যম্বুলেন্স সচল হবে। মানিকছড়ি স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মহিউদ্দিন জানান, এ্যাম্বুলেন্সটি বিকল থাকায় জরুরি রোগী নিয়ে নিয়মিত বিপাকে পড়তে হয়। বিষয়টি সংশ্লি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, আশা করি দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পোস্ট- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরোপ্রধান