যাতায়াতের চরম ভোগান্তিতে বিলাইছড়িবাসী ॥ খাল খননের দাবি

426

॥ বিলাইছড়ি প্রতিনিধি ॥

রাঙামাটি বিলাইছড়ি উপজেলা একটি দূর্গম উপজেলা। যার আয়তন ৭৪৫.৯২ বর্গ কি.মি.। ভারত ও মায়ানমার দুটি দেশের সীমানা রয়েছে এ উপজেলায়। ৪ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই উপজেলা।জেলা সদর হতে একমাত্র যোগাযোগ সুবিধা হলো নৌপথ বা জলপথ। যার দূরত্ব প্রায় ৬০ কি.মি.। তাই এবছর অনাবৃষ্টির ফলে রাঙ্গামাটি কাপ্তাই লেকের পানি শুকিয়ে যাওয়ার ফলে বিভিন্ন স্থানে জেগে উঠেছে ডুবো চর। সেই সাথে শুকিয়ে গেছে বিলাইছড়ির রাইংখ্যং নদীর পানি। শুকিয়ে গেছে খালটিও। যার ফলে যাতায়াতের চরম ভোগান্তিতে ভুগছেন বিলাইছড়িবাসী।বিপাকে পড়েছে সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, ব্যাবসায়ী, ক্রেতা-বিক্রতা, বোট মালিক। সবচেয়ে বেশী দূর্ভোগে ভূগছেন সাধারণ নীরিহ লোকজন। এজন্য যাতায়াতের বেশি সময় লাগছে আর ভাড়া দিতে হচ্ছেও বেশী।

এ ব্যাপারে রাঙামাটিগামী কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কাপ্তাই হ্রদের পানি শুকিয়ে যাওয়ার কারণে যাতায়াতে অনেক দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অনেক সময় ইঞ্চিন চালিত বোটগুলি হ্রদের ডুবো চরে আটকে যায়। ফলে এই ডুবোচর থেকে সরাতে গিয়ে অনেকক্ষণ প্রখর রোদে থাকতে হয়। আর অনেক সময় বোট পাওয়া যায় না।বোটের যাত্রী চান কুমার তঞ্চঙ্গ্যা নামক এক ব্যক্তি জানান, তিনি আগে ৭০ টাকা দিয়ে রাঙ্গামাটিতে যেতেন, কিন্তু এখন দিতে হয় ১২০ টাকা দিতে হয়। অনেক সময় বোট চালকরা আসতে চায় না। অনেক বুঝিয়ে সুজিয়ে তাদের মানতে হয়।

এ বিষয়ে বিলাইছড়ি লাইন্সম্যান সাগর জ্যোতি চাকমা সঙ্গে সরাসরি কথা বললে তিনি জানান, এটা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত প্রতিবছর ভরা মৌসুমে সরাসরি বিলাইছড়ি হতে রাঙ্গামাটি যাওয়া যায়। কিন্তু এখন যাওয়া যায়না, ছোট বোটে করে বিলাইছড়ি হতে এজবেন্ড নামক স্থানে, সেখান হতে হেটে গিয়ে লঞ্চে উঠে আবার রাঙ্গামাটি যাওয়া হয়, এজন্য ভাড়া একটু বেশী। তাছাড়া করোনা মহামারী কারণে কম যাত্রী নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দূরত্ব বজায় রেখে বোট মালিকদের যেতে হয়। যা সময়ও বেশি লাগে, লাগে বেশি জ্বালানি তেল ডিজেলও।অন্যদিকে, কাপ্তাই হতে নৌপথে বিলাইছড়ি আসা যাওয়া নিয়েও একইভাবে চরম ভোগান্তিতে ভুগছেন যাত্রী ও ব্যবসায়ীরা। যথাসময়ে বোট না পাওয়া, কয়েকজন নিয়ে বোট না ছাড়া, ইত্যাদি ইত্যাদি।

এবিষয়ে, বিলাইছড়িতে বাসু নামে এক ব্যবসায়ী জানান, বিলাইছড়ি-হতে কাপ্তাইয়ের আসা-যাওয়া আগে ৫৫ টাকা বর্তমানে ৮০ টাকা। কিন্তু কাপ্তাই হতে বিলাইছড়িতে আসা নিয়ে যতসব বেশি সমস্যা, যাত্রী না থাকার কারণে কয়েকজনে আসতে চাইনা। বোটটি পরে আমরা ৪ জনে ১৬০০ টাকা দিয়ে রির্জাভ ভাড়া দিয়ে এসেছি।

এ বিষয়ে ১নং বিলাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি দেওয়ান জানান, হ্রদের পানি শুকিয়ে যাওয়া, তলদেশ ভরাট হওয়া, তীব্র তাপদাহ এবং অনাবৃষ্টির ফলে যাতায়াতের এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরও জানান, বিগত সময়ে খাল খননের জন্য বেশ কয়েকবার জরিপের এসেছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় এখনো করা হয়নি বিভিন্ন কারণে। যদি খালটি খনন করা হয় তাহলে শুকনো মৌসুমে চরম দূর্ভোগ হতে মুক্তি পাবে বিলাইছড়িবাসী।তাই তিনি নৌ-পরিবহন মন্ত্রনালয় বা নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেন। প্রতি বছর জানুয়ারি থেকে মে-জুন পর্যন্ত শুকনো অবস্থায় থাকে রাইংখ্যং নদীর পানি। ফলে শুকিয়ে যায় খালটিও। যোগাযোগে অনুপযোগী হয়ে উঠে এলাকাবাসীসহ অন্যান্য কর্মরত কর্মচারীরা। এজন্য নৌ-পরিবহন মন্ত্রনায় বা নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে জানান ভুক্তভোগীরা।