॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥
রাঙামাটিতে যথাযোগ্য মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে বৈশাখী পুর্ণিমা (বৌদ্ধ পূর্ণিমা) পালন করছে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা। গৌতম বুদ্ধের জন্মতিথি, বুদ্ধত্ব লাভ ও পরিনির্বাণ লাভ উপলক্ষে বুধবার (২২ মে) সকালে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানের সুচনা করা হয়। রাঙামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গন থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে রাঙ্গামাটি মৈত্রী বিহারে গিয়ে শেষ হয়।
এদিকে রাজবন বিহার প্রাঙ্গনে মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে অনুষ্ঠান উদ্ধোধন করেন, বনভান্তের শিষ্য সংঘের প্রধান ও রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারের আবাসিক প্রধান শ্রীমৎ প্রজ্ঞালঙ্কার মহাস্থবির। অনুষ্ঠানসূচির মধ্যে ছিল জীবিত মাছ অবমুক্তকরণ, র্যালী, উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন, পঞ্চশীল গ্রহন, সকল প্রাণীর হিতসুখ মঙ্গল কামনায় মৈত্রী ভাবনা, দানোৎস্বর্গ, বিশেষ প্রার্থনা, স্বাগত বক্তব্য ও ধর্মদেশনা প্রদান।
ভিক্ষুসংঘের মধ্যে ধর্ম দেশনা প্রদান করেন বনভান্তের শিষ্য সংঘের প্রধান ও রাজ বন বিহারের আবাসিক প্রধান শ্রীমৎ প্রজ্ঞালঙ্কার মহাস্থবির, তপোবন অরণ্যে কুঠিরের অধ্যক্ষ জিনপ্রিয় মহাস্থবির, রাজ বন বিহারের আবাসিক ভিক্ষু দেবধাম্মা মহাস্থবির প্রমুখ।
ধর্ম দেশনায় শ্রীমৎ প্রজ্ঞালঙ্কার মহাস্থবির বলেন, বুদ্ধের শিক্ষা মেনে চলে লোভ, হিংসা, অজ্ঞানতা ত্যাগ করে জ্ঞান বুদ্ধি কৌশল নিয়ে জীবনযাপন করতে পারলে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, দেশ ও জাতি উন্নতি হবে। তাই সকল প্রাণীর হিতসুখ মঙ্গল কামনায় বুদ্ধের বানী মেনে চলার আহবান জানান তিনি।
এদিকে, রাঙ্গামাটি শহরের মৈত্রী বিহার, আনন্দ বিহারসহ বুদ্ধ বিহারগুলোতে গৌতম বুদ্ধের মুর্তি স্নান, শহরে বৌদ্ধ ধাতু প্রদর্শন, পঞ্চশীল গ্রহণ, বুদ্ধ মুর্তি দান, সংঘদান, অষ্ট পরিস্কার দান, ধর্মীয় আলোচনা সভাসহ দিনব্যাপী নানান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সন্ধ্যায় ফানুষ উড়ানোর মধ্যদিয়ে বৈশাখী পূর্ণিমার সমাপ্তি ঘটবে।
এছাড়া জেলার অন্যান্য বৌদ্ধ বিহারে যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় বুদ্ধ পূর্নিমা পালন করা হচ্ছে। এসব ধর্মীয় অনুষ্ঠানে দেশের সকল অশুভ শক্তিকে দুর করে শান্তি ও মঙ্গল কামনা করা হয়।
এই বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে ভগবান তথাগত সম্যক সম্বুদ্ধ তৎকালীন কপিলাবস্তুর রাজ্যের রাজা শুদ্ধোধন ও রাণী মহামায়ার কোল আলোকিত করে নেপালের তরাই অঞ্চলে লুম্বিনী কাননে জন্ম গ্রহন করেন। আজকের এই দিনে দীর্ঘ ছয় বছর ধ্যান সাধনা করে নৈরঞ্জনা নদীর তীরে অশ্বত্থ বৃক্ষের নিচে সিদ্ধিলাভ করে বুদ্ধত্বলাভ করেন। পাশাপাশি আজকের এই দিনে ভগবান বুদ্ধ কুশী নগরের শালবৃক্ষের নিচে মহা পরিনির্বাণ লাভ করেন। এ তিনটি স্মৃতি বিজরিত হিসেবে বৌদ্ধদের কাছে দিনটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ।