রাঙামাটিতে ধর্ষণ মামলার ৩১ বছর পর রায়! ২ ধর্ষকের ১৪ বছর সশ্রম কারাদন্ড

122

॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥

কাপ্তাই হ্রদে রিজার্ভ বাজার এলাকায় সাম্পানের মধ্যে জোরপূর্বক ৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় অভিযুক্ত দুই ধর্ষককে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদন্ডসহ ২০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছে বিজ্ঞ আদালত। দীর্ঘ ৩১ বছর মামলা শুনানীর পর এই আদেশ জারি করেন আদালত।

আসামীরা হলো, রাঙামাটি শহরের রিজার্ভ বাজারের পুরানবস্তি এলাকার বাসিন্দা মোঃ ইউছুপ ও লংগদু’র গুলশাখালীর বাসিন্দা ছিদ্দিক মিয়া। মামলা দায়েরের দীর্ঘ ৩১ বছর পর এই মামলার রায় ঘোষণা করা হলো।

সোমবার (১৭ জুলাই) দুপুরে রাঙামাটির সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ সহিদুল ইসলাম এর আদালত আসামীদের অনুপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী মোঃ কামরুল ইসলাম। তিনি জানিয়েছেন, আসামীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, সাক্ষী প্রমাণসহ যাবতীয় সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মাননীয় বিচারক আজ আসামীদের বিরুদ্ধে দন্ড বিধি ৩৭৬সহ ১৯৮৩ সনের নারী নির্যাতন(নিবর্তক শাস্তি) অধ্যাদেশ এর ৪(গ) ধারায় অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আসামীদের প্রত্যেককে উক্ত ধারায় দোষী সাব্যস্তক্রমে ১৪ বছর সশ্রম কারাদন্ড ভোগের আদেশ প্রদান করেন। সেই সঙ্গে আসামীদ্বয় প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছর কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

এদিকে এই রায়ের বিরুদ্ধে আসামীপক্ষ ক্ষুব্ধ মন্তব্য করে আসামীদের স্বজনদের সাথে আলাপ আলোচনা করে উচ্চ আদালতে আপীল করার কথা জানিয়েছে আসামী পক্ষের আইনজীবি।
মামলার এজাহারে ঘটনা সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়, বিগত ১৯৯১ সালের ২০শে নভেম্বর বুধবার রানী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীতে পড়–য়া এক শিক্ষার্থী রাঙামাটি শহরের রিজার্ভ বাজারের লঞ্চ ঘাট থেকে একটি সাম্পান ভাড়া করে কাপ্তাই হ্রদ দিয়ে চক্রপাড়ার বাসায় যাওয়ার নদীর মাঝপথে সাম্পানটি আটকিয়ে উক্ত শিক্ষার্থীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে ইউছুপ ও ছিদ্দিক। এসময় এই ঘটনাটি কাউকে না জানানোর জন্য সাম্পানের শিশু চালক ও উক্ত ভিকটিমকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়।

পরবর্তী উক্ত সাম্পান চালক শিশুটির মাধ্যমে ধর্ষকদের পরিচয় নিশ্চিত হয় ভিকটিম ও তার পরিবার। এরপর ইউছুপ ও ছিদ্দিকের নামোল্লেখ করে এসআই সৈয়দ রোকন উদ্দিনের মাধ্যমে রাঙামাটি কোতয়ালী থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলা দায়েরের পর থানার এসআই রবীন্দ্র প্রামাণিক কর্তৃক ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে সাম্পানসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র জব্দ করা হয়। সেসময় এই ঘটনার সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত থেকে জব্দ তালিকায় স্বাক্ষর করেন পুরানবস্তির বাসিন্দা ও ততকালীন ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা (বর্তমানে প্রয়াত) মোজাফ্ফর আহাম্মেদ তালুকদার ও আব্দুল মালেক।