রাঙামাটিতে পরিবার কল্যাণ সেবা সপ্তাহ ঘিরে এ্যাডভোকেসি সভা

11

॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥
প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও সারাদেশে পালিত হতে যাচ্ছে পরিবার কল্যাণ সেবা ও প্রচার সপ্তাহ। ৬- থেকে ১১ ডিসেম্বর সারাদেশে এই সেবা সপ্তাহ পালিত হবে। সপ্তাহের কার্যক্রম শুরুর আগেই মাঠ পার্যায়ে কাজ করা কর্মীদের- তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন করা ও নাগরিক সমাজের মধ্যে দিবসটি সম্পর্কে আগ্রহ তৈরীর প্রস্তুতি হিসেবে রাঙামাটিতে এ্যাডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
‘পরিকল্পিত পরিবার- নিরাপদ মাতৃত্বের অঙ্গীকার’ এ শ্লোগান সামনে রেখে জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের আয়োজনে বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বরর) জেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে (এনএক্স ভবন) এই এ্যাডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য ও পরিষদের পরিকল্পনা বিষয়ক কমিটির আহ্বায়ক মিনাজ মুরশিদ এর সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পরিষদের সদস্য ও কৃষি বিষয়ক আহ্বায়ক নাইও প্রু মারমা নেলি এবং রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সভাপতি আনোয়ার আল হক।
ডা: বেবী ত্রিপুরার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখার পাশাপাশি সপ্তাহের কর্মসূচি ঘিরে পরিকল্পনা এবং দেশে মাতৃমৃত্যুর বর্তমান অবস্থা, পাহাড়ে মাতৃসেবা ও প্রসূতি সচেতনতা পরিস্থিতির উপর পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে মূল প্রবণ্ধ তুলে ধরেন জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপপরিচালক সোহাগময় চাকমা।
সোহাগময় চাকমা তার পেজেন্টশনের জানান, পরিবার পরিকল্পনা শুধু জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের বিষয় নয়, এটি নারীর অধিকার, মায়ের সুরক্ষা, শিশুর বৃদ্ধি ও পরিবারের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে। অনিয়ন্ত্রিত জনসংখ্যা বৃদ্ধি আমাদের কারও কাম্য নয় এতে দারিদ্রতা যেমন বৃদ্ধি পায় তেমনি নাগরিকদের সঠিক অধিকার প্রাপ্তিতে বাড়তি চাপ তৈরী করে।
ডিডি জানান, আমাদের দেশে বর্তমানে প্রতি লাখ জীবিত জন্মে ১৫৩ জন মা মারা যান। তবে আশার কথা হলো প্রতি বছর এই হারে অগ্রগতি সাধিত হচ্ছে। যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা অর্জনের পথে ইতিবাচক।
বিশেষ অতিথিগণ তাদের বক্তব্যে বলেন, দেশে মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার আগের তুলনায় অনেক কমেছে। এ বিষয়ে বর্তমান সরকার কাজ করছেন। জনগণকে সচেতন করে মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার আরো কমিয়ে আনতে হবে। প্রতিটি সন্তান দেশের জন্য সম্পদ। সন্তানদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন সরকার। বাংলাদেশে মায়ের মৃত্যুর হার কমিয়ে আনা সম্ভব কিন্তু তা হচ্ছে না অসেচতনতা ও অনিয়মের কারণে। প্রতিটি মাকে সঠিক স্বাস্থ্যসেবা দেয়া সম্ভব হবে যদি প্রত্যেকে সচেতনতার মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে।
তারা বলেন, সন্তানের সুস্থতা ও জাতির ভবিষ্যৎ নির্মাণে সুস্থ মায়ের কোনো বিকল্প নেই। দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। নারীদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে পারলে মাতৃ মৃত্যু ও শিশু মৃত্যুহার অনেকাংশে হ্রাস করা সম্ভব।
এসময় উপজেলা পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তাগণ তাদের বক্তব্যে বলেন, পরিবার কল্যাণ ‘সেবা ও প্রচার সপ্তাহ’ উদ্যাপনের মূল লক্ষ্য হলো পরিবার পরিকল্পনা, মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা, পুষ্টি এবং নিরাপদ মাতৃত্ব সম্পর্কে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা।
সভায় জেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের মাঠ পর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মী, সেবিকা ও চিকিৎসকগণ উপস্থিত ছিলেন।