রাঙামাটিতে প্রথমবারের মতো তিনদিনের ঐতিহ্যবাহী খাদ্য ও সংস্কৃতি মেলা

88

॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥

আজ থেকে রাঙামাটিতে শুরু হচ্ছে ফুড এন্ড কালচারাল ফেস্টিভ্যাল। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের আয়োজনে প্রথমবারের মতো পার্বত্য তিন জেলার ১৬ সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী বাহারি খাবার নিয়ে এটি হবে এক অনন্য আয়োজন। শনিবার পর্যন্ত তিনদিন এ মেলা চলবে। খাদ্য সামগ্রী প্রদর্শন ও বিক্রয়ের পাশাপাশি মেলায় থাকবে বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ঐতিহ্যমন্ডিত মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। নতুন উদ্যোগের তিনদিনব্যপী এ মেলা উদ্বোধন করবেন নতুন পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি।

আজ বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় রাঙামাটি জেলার চিং হ্লা মং চৌধুরী মারী স্টেডিয়ামে এ মেলা শুরু হবে এবং আগামী শনিবার পর্যন্ত প্রতিদিন বিকাল ০৩.০০ টা থেকে রাত ০৮.০০ টা পযন্ত মেলা উন্মুক্ত থাকবে।

অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত থাকবে ২৯৯ রাঙামাটি সংসদীয় আসন থেকে ৫মবারের মতো নির্বাচিত জাতীয় সংসদ ও সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার। এতে বিশেষ অতিথি থাকছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মশিউর রহমান এনডিসি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বসহ সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত (অব.) সুপ্রদীপ চাকমা।

মেরায় পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, ম্রো, তঞ্চগ্যা, বাঙ্গালি, অহমিয়া, খেয়াং, খুমি, গুর্খা, চাক, পাংখোয়া, বম, লুসাই, রাখাইন এবং সাঁওতালসহ ১৬টি সম্প্রদায় তাদের ঐতিহ্যবাহী খাবার সামগ্রী প্রদর্শন ও বিক্রয় করবে। এই মেলার মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের ঐতিহ্য নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা ছাড়া জাতির সামনে এখানকার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যর স্বাতন্ত্রতা তুলে ধরা হবে।

রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান এই তিন জেলা নিয়ে দেশের এক দশমাংশ অঞ্চলের অন্যতম পর্যটন এলাকা পার্বত্য চট্টগ্রাম। বাংলাদেশের ফেস্টিভাল অঞ্চল হিসেবে খ্যাত পার্বত্য চট্টগ্রাম। এ অঞ্চলের ঐতিহ্য ও ফেস্টিভ্যাল আয়োজনের মাধ্যমে পার্বত্যাঞ্চলে বসবাসকারী সকল সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী বাহারি খাবারের সমাহার, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি দেশ-বিদেশের পর্যটকদের আকর্ষণ করবে। এ অঞ্চলে বসবাসরত সকল সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী খাবারসহ কৃষ্টি ও সংস্কৃতির প্রতিফলন ঘটবে এবং বাংলাদেশের অর্থনীতি উন্নয়নে এক নতুন মাত্রা যোগ হবে। পাশাপাশি এ ফেস্টিভ্যালের মাধ্যমে দেশের পর্যটন সম্পদের সম্ভাবনা আগের চেয়ে অধিকতর প্রসারিত ও বিকশিত হবে। এছাড়া এ কার্যক্রমের মাধ্যমে পার্বত্যাঞ্চলে বসবাসকারী সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ বন্ধন আরও সুদৃঢ় হবে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের এ বর্ণিল আয়োজনের গুরুত্ব ও তাৎপর্যকে তুলে ধরার লক্ষ্যে গণমাধ্যম তথা প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া, ফেইসবুক, টুইটার, লিংকডইন, ইউটিউবসহ সকল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার ও প্রচারণার বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার মেলাটি সুচারুভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে এক প্রস্ততি সভা অনুষ্ঠিত হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের কর্ণফুলী সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় রাঙামাটি সকল বিভাগ/দপ্তর/সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন বোর্ডের সম্মানিত ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ (যুগ্মসচিব)। প্রস্তুতি সভায় আয়োজনের বিভিন্ন দিক অনুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করা হয়।

এসময় বোর্ডের সদস্য প্রশাসন মোঃ জসীম উদ্দিন (উপসচিব), জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ সাইফুল ইসলাম, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ জাহেদুল ইসলাম, নির্বাহী প্রকৌশলী খাগড়াছড়ি মোঃ মুজিবুল আলম, নির্বাহী প্রকৌশলী বান্দরবান মোঃ আবু বিন মোহাম্মদ ইয়াছির আরাফাত ও নির্বাহী প্রকৌশলী রাঙামাটি তুষিত চাকমা, রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার আল হক, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মোঃ শফিউল আজম, রাঙ্গামাটি সিভিল ডিফেন্স এন্ড ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধি গিয়াস উদ্দীন (লিডার), জেলা রোভার স্কাউট সম্পাদক নুরুল আবছারসহ বোর্ডের কর্মকর্তা/কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।