রাঙামাটিতে বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ ঘিরে অবহিতকরন কর্মশালা

102

॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥

মায়ের দুধ সর্বোত্তম, এর কোন বিকল্প নেই। শিশু বেড়ে উঠার যা যা পুষ্টির দরকার সবকিছুই মায়ের দুধে রয়েছে বলে জানালেন চিকিৎসকরা। তারা বলেন, মায়ের দুধ মহান আল্লাহর দান। এর বিকল্প বা পরিপূরক কোন কিছুই নেই। শাল দুধ একটি শিশুর জন্য প্রথম টিকা যা তার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। নবজাতককে পুরোপুরি ৬ মাস মায়ের দুধ খাওয়ানোর উপর জোর দিয়েছি আমরা। ৬ মাসের পর থেকেই শিশুকে অন্যান্য খাবারে অভ্যস্ত করা উচিত।

বুধবার (৪ অক্টোবর) সকালে রাঙামাটি সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত মাতৃগ্ধের গুরুত্ব, উপকারিতা এবং মাতৃদুগ্ধ বিকল্প আইন ২০১৩ ও বিধি ২০১৭ বিষয়ক অবহিতকরন কর্মশালায় এইসব কথা বলেন চিকিৎসকরা।

দিনব্যাপী কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন, জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্টানের এপ্লাইড নিউট্রিশনিস্ট ডা. দেবাশীষ রায়, জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্টানের ডিভিশনের (ফিল্ড) মাহাবুব আরেফিন রেজানুর, রাঙামাটি সদর হাসপাতালের আর এম ও ডা. শওকত আকবর, কাউখালী উপজেলা স্বাস্হ্য কর্মকর্তা ডা. সুইমিংপ্রু রোয়াজা প্রমুখ।

সভায় চিকিৎসকরা বলেন, কর্মব্যস্থতা, অজ্ঞতা এবং শিশুকে বেশী খাওয়ানো প্রবণতাসহ বিভিন্ন কারনে কৌটাবন্দি দুধের উপর অভিভাবকদের নির্ভরশীলতা বাড়ছে। যা শিশুর স্বাস্হ্যের উপর মারাত্মক বিপদ ডেকে আনছে। এতে করে প্রতি বছর প্রায় ৮ লক্ষ ২০ হাজার শিশু মৃত্যুবরণ করে। তাই কৌটাবন্দি দুধ পরিহার করে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর ব্যাপারে সবাইকে একযোগে এগিয়ে আসার আহবান জানান চিকিৎসকরা।

মাতৃদুগ্ধ বিকল্প আইন ২০১৩ ও বিধি ২০১৭ বিষয় নিয়ে চিকিৎসকরা আরো বলেন, সংশোধিত আইন অনুযায়ী মাতৃদুগ্ধ বিকল্প, শিশুখাদ্য, বাণিজ্যিকভাবে প্রস্তুতকৃত শিশুর বাড়তি খাদ্য বা উহা ব্যবহারের সরঞ্জামাদি উপরেল্লিখিত ৪ টি পণ্য আমদানী, স্থানীয়ভাবে উৎপাদন, বিপনন, প্রচার বা প্রকাশ করা যাবেনা বা এই ধরনের কাজে নিয়োজিত থাকা যাবেনা।

সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান কোন ধরনের উপহার, ডিসকাউন্ট, মূল্যহ্রাস, বিনামূল্য বা প্রলোভন দেয়া যাবেনা। কোন ব্যাক্তি এই আইনের কোন বিধান লঙ্ঘন করলে ৩ বছরের কারাদন্ড বা ৫ লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হবেন।

চিকিৎসকরা আরো বলেন, মাতৃদুগ্ধ বিকল্প, শিশুখাদ্য, বাণিজ্যিকভাবে প্রস্তুতকৃত শিশুর বাড়তি খাদ্য বা উহা ব্যবহারের সরঞ্জামাদির কারণে কোন শিশু অসুস্থ হলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানীর মালিকপক্ষকে ১০ বছর কারাদন্ড বা ৫০ লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হবেন এবং অর্থদন্ড ক্ষতিপূরণ হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত শিশুর পরিবারকে নির্ধারিত পদ্ধতিতে প্রদান করা হবে।

অবহিতকরণ কর্মশালায় ৯ উপজেলার মেডিকেল অফিসার ও সিনিয়ারা নার্স অংশ নেন। এ কর্মশালায় মাতৃদুগ্ধের গুরুত্ব, উপকারিতা এবং মাতৃদুগ্ধ বিকল্প আইন-২০১৩ ও বিধি ২০১৭ বিষয় আলোচনা করা হয়।