॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥
পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটি জেলায় ভূমি বিরোধ মীমাংসার জন্য জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার কর্তৃক নালিশী জমি সরেজমিন পরিদর্শন করে মীমাংসা করার অভিনব কৌশলে রাঙামাটির বিচার প্রার্থীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।
পাহাড়ি জমির জেলা রাঙামাটিতে বেশীরভাগ খাস এবং বন্দোবস্তি জমি হওয়ায় এবং ইতোপূর্বে ভূমি জরিপ না হওয়ায় এখানকার বেশীরভাগ মামলা মোকদ্দমার মূল কারণ জমির বেআইনী / জোরপূর্বক দখল- বেদখল। জেলার বেশীরভাগ ফৌজদারী মামলাগুলোর ও মূল কারন এটিই।
১৯৯৭ সালে শান্তিচুক্তির পর পর্যটন, জনসংখ্যা ও নিরাপত্তা বৃদ্ধি সহ বিভিন্ন কারনে জমির দাম বহুগুন বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে প্রভাবশালীরা খাস / বন্দোবস্তি জমিতে দীর্ঘদিন ধরে বসবসরাত গরীব লোকজনকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করে সেখানে হোটেল সহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মান করে লাভজনক ব্যবসা করে আসছে। আর দখলে থাকা পক্ষ জমি ছাড়তে অস্বীকার করলেই মিথ্যা মামলা দায়ের করা ঘায়েল করা!!!
জেলা লিগ্যাল এইড অফিসে আসা বেশীরভাগ অভিযোগ এবং আদালত থেকে মীমাংসার জন্য পাঠানো বেশীরভাগ মামলার প্রকৃতি দেখে রাঙ্গামাটিতে সদ্য যোগদানকৃত জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার জনাব মোঃ জুনাইদ ( সিনিয়র সহকারী জজ) জমির স্বত্ব – দখল নিয়ে স্থানীয় বাস্তব আইনগত জটিল সমস্যা উপলব্ধি করে পক্ষগনের দখল নিয়ে বিরোধ আপোষে মীমাংসার জন্য আইনগত সহায়তা প্রদান বিধিমালা ২০১৫ এর ০৫ বিধিতে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে নালিশী জমি সরেজমিন পরিদর্শনপূর্বক মীমাংসা সভা করা শুরু করেন। এতে নালিশী জমির দখল নিয়ে পক্ষগনের মিথ্যা দাবী করা বন্ধ হয়েছে এবং জটিল ভূমি সমস্যা তাৎক্ষনিকভাবে আপোষে মীমাংসা হয়ে যাচ্ছে।
রাঙামাটির সদরের রিজার্ভ বাজার, তবলছড়ি, ভেদভেদী, কলেজ গেইট, আসাম বস্তি, কাঠালতলী, বনরূপা সহ ৬৫ কিলোমিটার দূরের লংগদু উপজেলার আটারকছড়া ইউনিয়েেন নালিশী জমিতে গিয়ে গত তিন মাসে ১৫-২০ টি মীমাংসা সভা হয়েছে যাতে বেশীরভাগ পক্ষগনের বিরোধ মিটে গেছে,যা আনুষ্ঠানিক কোর্টে নিস্পত্তি হতে সাধারনত ১০-১৫ বছর সময় লাগার সম্ভাবনা ছিলো।
লিগ্যাল এইড অফিস রাঙামাটির সূত্রে জানা গেছে, গত তিন মাসে সফল হওয়ায় এডিআর গুলোর বেশীরভাগই হলো সিভিল মামলা, ( সফল হওয়া ৫৭ টি প্রি কেসের মধ্যে ২০ টি সিভিল বিরোধ) যা অন্য জেলার তুলনায় ব্যতিক্রমী ঘটনা বটে।
নালিশী জমিতে মীমাংসা সভা করে বিরোধ মীমাংসার এই অভিনব সৃষ্টিশীল কৌশলে আগ্রহী হয়ে রাঙামাটির আদালতে বিচারাধীন অনেক মামলায় ও পক্ষগনও এখন নিজেরা স্বপ্রনোদিত হয়ে বিচারাধীন মামলাটি আপোষে মীমাংসার জন্য আদালতের কাছে আবেদন করছেন মর্মে জানিয়েছেন জেলার আইনজীবীরা।