রাঙামাটিতে ৮২ হাজার শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়াবে স্বাস্থ্য বিভাগ

564

॥ আলমগীর মানিক ॥

আগামী ৫ আগষ্ঠ জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন রাঙামাটির ৬ মাস থেকে ৫৯ মাস বয়েসী ৮২ হাজার ১২৩ জন শিশুকে ভিটামিন ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এর মধ্যে ৬ থেকে ১১ মাস বয়েসী ৯৪৭৭ জন শিশুকে একটি করে নীল রঙের ভিটামিন এ ক্যাপসুল এবং ১২ মাস থেকে ৫৯ মাস বয়েসী শিমদের একটি করে লাল রঙের ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। জেলার ১০ টি উপজেলা এবং ২ টি পৌরসভার ১৩২৫ টি টিকাদান কেন্দ্রে ৩৫৪৬ জন স্বেচ্ছাসেবী  শিশুদের ভিটামিন  এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।

পাশাপাশি জেলা এবং উপজেলায় একাধিক ভ্রাম্যমান টিকাদান কেন্দ্রের মাধ্যমেও ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনের দিন ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। পর্বত্য জেলা রাঙামাটির প্রত্যন্ত এলাকার উদ্দিস্ট প্রতিটি শিশু যাতে এই ক্যাম্পেইনের আওতায় আসে সেজন্য বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস  ক্যাম্পেইন উপলক্ষে রবিবার রাঙামাটি সিভির সার্জন কারযালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা পরযায়ের অবহিত করন ও কর্মপরিকল্পনা সভায় স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে এই তথ্য জােনানো হয়। রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা সভায় প্রধান অতিথিছিলেন।

সিভিল সার্জন ডাঃ শহিদ তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মপরিকল্পনা সভায় বক্তব্য রাখেন রাঙামাটি জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক বেগম শাহানওয়াজ, সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মনসুর আহমেদ, রাঙামাটি সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ বিনোদ শেখর চাকমা। কর্মপরিকল্পনা সভায় রাঙামাটি জেলায় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন উপলক্ষে গৃহিত কর্মসূচী এবং কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেন ইউনিসেফের পুষ্টি বিষয়ক প্রতিনিধি মোঃ মাজহারুল রিফাত।

রাঙামাটি জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ আয়োজিত এবং জনস্বাস্থ্য ও পুষ্ঠি প্রতিষ্ঠান ও জাতীয় পুষ্টি সেবা এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহায়তায় অনুষ্ঠিত এই অবহিতকরন ও কর্ম পরিকল্পনা সভায় রাঙামাটি জেলার সকল উপজেলার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা,  ইপি আই সুপার ভাইজার, বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের প্রতিনিধি, এনজিও কর্মী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবি মহলের প্রতিনিধিগন অংশ নেন।

অবহিতকরন সভায় জানানো হয় বাংলাদেশের শতকরা ২৩ভাগ জনগনের শরীরে সঠিক পরিমানে ভিটামিন এ রয়েছে এবং শতকরা ৭৭জনের শরীরে এইট পরিপূর্ণ অবস্থায় নেই। বাংলাদেশের শতকরা ২০ভাগ লোকের শরীরে ভিটামিন “এ” এর অভাব রয়েছে এবং প্রতি ২০০ জনে ১ জন মারাতœক ভিটামিন এ সংকটে ভূগছে। ভিটামিন এ”এর অভাবজনিত কারনে সবচাইতে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে ৫ বছরের কম বয়েসী শিশু, পুষ্টিহীনতায় আক্রান্ত শিশু এবং গর্ভবতী মায়েরা। কম ওজন নিয়ে জন্মানো শিশু এবং অপরিনত বয়সে জন্ম নেয়া শিশুরাও এই ঝুঁকিতে রয়েছে। সভায় জানানো হয়, ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন এ শিশুদের যেসব ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে সেগুলো সম্পূর্ণ নিরাপদ। তবে ৬ মাসের কম বয়েসী শিশু এবং ৫৯ মাসের বেশী বয়েসী শিশুসহ মারাতœক অসুস্থ শিশুদের এই ভিটামিন খাওয়ানো যাবেনা।

সভায় উদ্দিষ্ট প্রতিটি শিশুকে ভিটামিন  এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর পাশাপাশি প্রতিটি শিশুকে যাতে জন্মের পরবর্তী ৬ মাস শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধ এবং ২ বছর পর্যন্ত অন্যান্য সুষম খাবারের পাশাপাশি মায়ের বুক দুধ খাওয়ানো হয় এবং শিশুদের জন্য নির্ধারিত প্রতিটি টিকা যাতে নিশ্চিত করা হয় সে দিকে সজাগ থাকার জন্য সবার প্রতি আহবান জানানো হয়।