১৩ জুন প্রবল ভারী বর্ষনে ও পাহাড় ধসে ধ্বংস হয়ে যাওয়া রাঙামাটি-মহালছড়ি-খাগড়াছড়ি সড়ক চালুর ৭ দিনের মাথায় আবারো ধসে গেছে। রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কের সাপছড়ির খামারপাড়া, ও কুতুকছড়ির কেসিং এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা গেছে আবরো ভাঙনের কারনে এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার করুন অবস্থা ও মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
রাঙামাটি-মহালছড়ি-খাগড়াছড়ি সড়কের ৬৪ কি:মি:দীর্ঘ সড়কের রাঙামাটির সাপছড়ি এলাকার খামারপাড়া ও কুতুকছড়ির কেসিং এলাকা সড়ক পথ প্রবল বর্ষনের কারনে ধসে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কের ৬ কি:মি: এলাকার সাপছড়ির খামারপাড়ায় ২০ মিটার দীর্ঘ রাস্তা প্রবল বর্ষনে আবারও ধসে গেছে। অপরদিকে এ সড়কের ৮ কি:মি: এলাকায় কুতুকছড়ির কেসিং এলকায় মাটির ভরাট করে সচল করা ৩৫ মিটার রাস্তার দুই পাশ থেকে মাটি ধসে পড়েছে।এতে করে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ মুল সড়কের মাটি ভরাট করে দুটি স্পটে পুরোপুরি ধসে যাওয়া সড়ক পুনরায় চালুর চেষ্টা করছেন সড়ক বিভাগের কর্মীরা।
এদিকে, চাকরীজীবি বিদুৎ ত্রিপুরা বলেন, আমাদের এখানকার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা এত বেশি করুন অবস্থা তা ভাষায় প্রকাশ করার মত না। সরকারের প্রতি বিশেষ অনুরোধ স্থায়ীভাবে যোগাযোগ ব্যবস্থাটা তৈরী করে দিলে অন্তত এ মানুষগুলো দু:খ থেকে বাচঁবে। অপরদিকে, সিএনজি অটোরিক্সা চালক স¤্রাট চাকমা বলেন, রাস্তাটি মেরামতের এক সপ্তাহের পার না হতেই আবার ভেঙে গেল।এতে করে আমাদের গাড়ী চালাতে যেমন সমস্যা হচ্ছে এর পাশাপাশি যাত্রীদেরও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। মানিকছড়ির আক্কাস জানান, একমাত্র নালার কারনে পানি যেতে না পারায় সড়কটি আবারও ভেঙ্গে গেছে।আমাদের এখন যাতায়াত করতে খুবই কষ্ট হচ্ছে।
এদিকে, কুতুকছড়ি এলাকার দীপা চাকমা বলেন, আমি প্রায় এক ঘন্টা ধরে হাটতেছি।রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়ার কারনে পায়ে হেটে রাঙামাটি যেতে হচ্ছে। নানিয়াচর এলাকার মোটর সাইকেল চালক কুদ্দুস বলেন, সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকার ফলে আমাদের সীমাহিন দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। আরেক সিএনজি চালক দীপক বলেন, এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই সড়কের আবারো বেহাল অবস্থা আমরা ঠিকভাবে গাড়ী চালাতে পারছিনা।আমাদের দাবী হচ্ছে অতি দ্রুত গাড়ী চলাচল শুরু হোক।
সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন থাকায় মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। জীবন-জীবিকার তাগিদে অনেকে জীবনের ঝুকি নিয়ে ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে প্রায় ৮ কিলোমিটার সড়ক কিছুদুর পায়ে হেটে আবার আবার কিছুদুর সিএনজি অটোরিক্সা করে নিজ গন্তব্যে পৌছানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। অনেকে আবার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকায় উৎপাদিত কৃষিপন্য নষ্ট হচ্ছে বলে জানান। এলাকাবাসীর দাবী অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কটির পুরো কাজ সম্পন্ন করে চালু করা হোক।
এ প্রসঙ্গে রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: এমদাদ হোসেন বলেন, প্রবল ভারী বর্ষনের কারনে সড়কটির দুটি জায়গায় প্রচুর বালি ও পলি ও কাঁদা এসে রাস্তাটির ড্রেনেজ ব্যবস্থা পুরোপুরি অচল হয়ে যাওয়ায় পানি এসে রাস্তাটি ধসে গেছে। তিনি বলেন, কেসিং এর রাস্তাটির কাজ পুরোপুরি শেষ করার আগেই বৃষ্টিতে রাস্তার দুপাশের মাটি ধসে গেছে।এমদাদ হোসেন আরো বলেন , এটি সচল করার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আশা করছি খুব শীঘ্রই এ সড়কে যান চলাচল করতে পারবে।
উল্লেখ্য, গত ১৩ জুন পাহাড় ধসে রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কের বিভিন্ন জায়গায় প্রবল বর্ষনে সড়ক ধসে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার ৩৪ দিন পর সড়কটি চালু হওয়ার ৭দিন পর আবারো মুল সড়কের দুটি স্থানে ধসে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছন্ন হয়ে যায়।