রাঙামাটি পৌরসভার আসন্ন নির্বাচনে ২নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর নির্বাচনে আগ্রহীরা

462

॥ গোলাম মোস্তফা ॥
আসন্ন রাঙামাটি পৌরসভা নির্বাচনে ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে সম্ভাব্য প্রার্থীরা ইতিমধ্যে প্রচার প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন। ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হতে আগ্রহীরা হলেন- বর্তমান কাউন্সিলর মো. করিম আকবর, সাবেক কাউন্সিলর মো. আব্দুল মালেক, সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল হামিদ, ২নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোসলেহ উদ্দীন ইমন, যুবলীগ নেতা অনন্ত চক্রবর্তী, ২নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আবু তৈয়ব, যুবদল নেতা মো. আবু তৈয়ব, ছাত্রলীগ নেতা মো. ইউনুছ চৌধুরী রকি।

মো. করিম আকবরঃ
২নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মো. করিম আকবরের সাথে আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে অংশগ্রহণ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিরি বলেন, জনগণের পাশে ছিলাম এখনও আছি, ৫ বছরে যতটুকু পেরেছি জনগণকে সেবা দিয়েছি। আমি আগামীতে জনগণের সেবা করার জন্য ভোট চাইতে ২নং ওয়ার্ডের সকল বাসিন্দার দুয়ারে-দুয়ারে যাব। বিগত দিনে যতটুকু সেবা করেছি তার চেয়ে বেশি সেবা করার জন্য এবং আমার যা ভুলত্রুটি হয়েছে তা শুধরে নেওয়ার জন্য আরেকটি সুযোগ পেতে জনগণের কাছে ভোট ভিক্ষা চাইব। আর জনগণ আমাকে আরেকবার সুযোগ দিলে উন্নয়নের সামান্য যে অসম্পূর্ণ কাজ আছে তা আমি সম্পূর্ণ করবো। আর ২নং ওয়ার্ড যেহেতু ঘনবসতি পূর্ণ এলাকা এবং সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের অবস্থানও এই ওয়ার্ডে তাই পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে আরো গুরুত্বারোপ করবো।

তিনি বর্তমানে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। পূর্বে তিনি ওয়ার্ড যুবলীগের অর্থ-সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
মো. আব্দুল মালেকঃ
এবিষয়ে সাবেক কাউন্সিলর মো. আব্দুল মালেক বলেন, আমি জনগণের প্রার্থী, জনগণকে নিয়ে আমি কাজ করব। আমার ওয়ার্ডের বেশিরভাগ মানুষই শ্রমজীবি তাই তাদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে আমি পূর্বে দায়িত্ব পালনকালে ২নং ওয়ার্ডে লাইটিং ব্যবস্থা, পরিস্কার-পরিচ্ছনতা, প্রতি ১০ পরিবারের জন্য ১টি করে ডিপ টিউবয়েল স্থাপন, পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নত করতে পাকা শৌচাগার স্থাপন, ফুটপাত ও সিঁড়ি নির্মাণ, বিধবা, বয়স্ক, মাতৃত্ব, পঙ্গু, প্রতিবন্ধী, ও অসহায় ভাতা যোগ্যতা অনুসারে সঠিক ব্যক্তির প্রাপ্তি নিশ্চিত করেছি।

আসন্ন নির্বাচনে জনগণ আমাকে নির্বাচিত করলে আমার ওয়ার্ডের পিছিয়ে পড়া এলাকা গুলোকে দ্রুত আধুনিক সুবিধার আওতায় আনার ব্যবস্থা করব। দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত মডেল ওয়ার্ড হিসেবে গড়ে তুলব। তিনি আরো বলেন, আমি পূর্বে যেভাবে ওয়ার্ডের উন্নয়নের কাজ ও জনগণের সেবা করেছি তা অব্যহত রাখব।

আব্দুল হামিদঃ
সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল হামিদ জানান, ঘনবসতি পূর্ণ ও দরিদ্র জনগণের বসবাস ২নং ওয়ার্ডে সবচেয়ে বেশি। আমি পূর্বে ওয়ার্ড কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে জনগণের সর্বোচ্চ নাগরিক চাহিদা নিশ্চিতে কাজ করে গিয়েছি। এবার আওয়ামীলীগ কর্তৃক যদি আমি সমর্থন পাই তাহলে নির্বাচনে অংশ নিব। দলের সমর্থন ও জনগণের ভোটে আমি নির্বাচিত হলে ওয়ার্ডবাসীর নাগরিক সেবা নিশ্চিত করবো।
তিনি ১৯৮১ সালে যুবলীগের সদস্য হওয়ার মাধ্যমে আওয়ামীলীগের রাজনীতি শুরু করেন। এরপর পৌর আওয়ামীলীগের সদস্য হন বর্তমানে ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

এছাড়াও তিনি চট্টগ্রাম-রাঙামাটি বাস মালিক সমিতির সিনিয়র লাইন ম্যানেজার ও আবহানী স্পোর্টিং ক্লাবের সদস্য।

মোসলেহ উদ্দীন ইমনঃ
ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের নেতা মোসলেহ উদ্দীন ইমনের সাথে এবিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার নেত্রী সব সময় একটি কথা বলেন সুখে, দুঃখে জনগণের পাশে থাকতে হবে, নেত্রীর এই কথাকে মনে প্রাণে ধারণ করে আমি ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করার জন্য অগ্রসর হচ্ছি। দল যদি সমর্থন দেয় তাহলে আমি নির্বাচন করবো এবং আমি আশাবাদী যে দল আমাকে সমর্থন দিবে। তিনি আরো বলেন, জনগণের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হলে সর্বপ্রথম ওয়ার্ডকে মাদকমুক্ত করার বিষয়ে আমি কাজ করবো। রাস্তা ঘাটের যে সকল কাজ অসম্পূর্ণ আছে সেগুলো সম্পূর্ণ করবো এবং ২নং ওয়ার্ডের প্রতিটি এলাকা পরিস্কার-পরিছন্ন রাখার বিষয়ে কাজ করবো।

আওয়ামীলীগ পরিবারের সন্তান মোসলেহ উদ্দীন ইমন ১৯৯৬ সালে কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য হন এরপর ধাপে ধাপে শহর ও জেলা ছাত্রলীগে দায়িত্ব পালনের পর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগে ৯বছর সদস্য ছিলেন। বর্তমানে তিনি ২নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী কার্মান্ডের সাথে জড়িত আছেন।

অনন্ত চক্রবর্তীঃ
যুলীগ নেতা অনন্ত চক্রবর্তীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জনগণের ভোটের মাধ্যমে আমি নির্বাচিত হলে সর্বপ্রথম আমি ২নং ওয়ার্ডকে মাদকমুক্ত করবো, পর্যটন শহর হিসেবে পরিস্কার-পরিছন্নতার বিষয়ে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো, রাস্তাঘাট সংস্কারসহ গরিব সাধারণ মানুষের পাশে থাকব।

তিনি ১৯৯২ সালে ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সদস্য হওয়ার মাধ্যমে রাজনীতি শুরু করেন এরপর ধাপে ধাপে বর্তমানের পৌর যুবলীগের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এরপাশাপাশি পুরাতন হাসপাতাল এলাকার শ্রী শ্রী মগদস্বরী মাতৃ মন্দির পরিচালনা কমিটিরি সাধারণ সম্পাদক ও ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।

আবু তৈয়বঃ
২নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আবু তৈয়বের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ২নং ওয়ার্ডবাসীর সেবা করার লক্ষ্যে আমি আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে অংশ নিব। জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে আমাকে নির্বাচিত করলে, আমি ওয়ার্ড থেকে মাদক নির্মূল করবো, লাইটিং ব্যবস্থা আরো শক্তিশালী করব, জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, সরকারি সাহায্য সহযোগিতা শতভাগ যোগ্য ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দেওয়া, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ চলমান উন্নয়ন অব্যহত রাখব।
তিনি ১৯৯৪ সালে বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত অবস্থায় ছাত্রলীগের স্কুল কমিটিতে সদস্য হন, ওয়ার্ড ছাত্রলেিগর আহ্বায়ক কমিটির সদস্য, শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক, ইউনিট যুবলীগের সদস্য, ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে বর্তমানে ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও তিনি ব্যক্তিগতভাবে সামাজিক কাজে নিয়োজিত আছেন।

মো. আবু তৈয়বঃ
জেলা যুবদলের সদস্য মো. আবু তৈয়ব বলেন, ২নং ওয়ার্ডের জনগণ যদি আমাকে আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে জয়ী করে তাহলে আমি, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে অসহায় জনতার পাশে পূর্বের ন্যায় দাঁড়ানোর পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মকে মাদকের ভয়াল গ্রাস থেকে রক্ষা করার লক্ষ্যে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব, তাদের শিক্ষা ও ক্রীড়ার পাশাপাশি জনগণের উন্নয়নে যুগপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করাই হবে আমার প্রধান লক্ষ্য। এরপাশাপাশি জনগণের নায্য পাওনা ঘরেঘরে পৌঁছে দিব ও তাদের পাশে থাকবো। রাস্তা-ঘাটের বেহাল দশার ফলে জনসাধারণ যে দূর্ভোগ পোহাচ্ছে তা থেকে ওয়ার্ড বাসীকে মুক্ত করার জন্য যা যা করা প্রয়োজন তাই করবো।

তিনি বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত অবস্থায় ছাত্রদলের স্কুল কমিটিতে দপ্তর-সম্পাদক, যুগ্ম সম্পাদক ও সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপর ধাপে ধাপে ২নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক, নগর যুবদলের সহ-প্রচার সম্পাদক, বর্তমানে রাঙামাটি জেলা যুবদলের সদস্য হিসেবে আছেন।

রাজনীতির পাশাপাশি তিনি রিজার্ভ বাজার মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য, ২০০৯-১০ইং তরুণ সামাজিক সংগঠন আলোর ফুল’র কার্যকারী পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক, ২০১১-১২ইং সাধারণ সম্পাদক ২০১৩-১৫ইং সিনিয়র সহ-সভাপতি ও বর্তমানে পরিচালনা পরিষদের সহ-পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

মো. ইউনুছ চৌধুরী রকিঃ
২নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইউনুছ চৌধুরী রকি এবিষয়ে বলেন, আমি ২নং ওয়ার্ডবাসীর সেবা করার লক্ষ্যে আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে অংশ নিব। আর এলাকাবসী আমাকে নির্বাচিত করলে আমি জনসাধারণের জন্য সরকার কর্তৃক পৌরসভার মাধ্যমে আসা সাহায্য-সহযোগিতা সঠিকভাবে শতভাগ বন্টন নিশ্চিত করব। প্রয়োজনে আমি নিজে বাড়ি বাড়ি গিয়ে যারা প্রাপ্য তাদের হাতে পৌঁছে দিয়ে আসব। এক্ষেত্রে দলীয়করণ বা জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে যারা এ সহযোগিতা পাওয়ার যোগ্য তাদের কাছে আমি সহযোগিতা পৌঁছে দিব। তিনি আরো বলেন, পর্যটন নগরী হিসেবে ২নং ওয়ার্ডকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রেখে পর্যটক বান্ধব ওয়ার্ড হিসেবে গড়ে তুলব, মাদক, কিশোর গ্যাং, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সহিংসতা মুক্ত ওয়ার্ড হিসেবে গড়ে তুলব।

মো. ইউনুছ চৌধুরী রকি আওয়ামীলীগ পরিবারের সন্তান এবং সে বর্তমানে ২নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী কাজের সাথে জড়িত আছেন।