রাঙামাটি শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে কাজে গাফেলকির অভিযোগ : শঙ্খুব্ধ সাংসদ ফিরোজা বেগম চিনু

450

OLYMPUS DIGITAL CAMERA

 
স্টাফ রিপোর্টার, ৮ ডিসেম্বর ২০১৫, দৈনিক রাঙামাটি : ৮ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে আকস্মিকভাবে রাঙামাটি সরকারি মহিলা কলেজ পরিদর্শনে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময়ের পর কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও উদাসীনতায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাতীয় সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু। এ সময় তিনি কলেজের প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের আশ^াস দিয়ে বলেন, এই কলেজের বিরাজমান সমস্যাগুলো সমাধানে একজন সংসদ সদস্য হিসেবে আমার পক্ষে করণীয় সব কিছুই করবো। শিক্ষক সঙ্কট, যানবাহন সঙ্কট, যন্ত্রপাতির অপ্রতুলতা, যাতায়াত পথে একশ্রেণির ভূমিলোভী মানুষের অর্বাচিন কর্মকান্ড, কম্পিউটার ল্যাব সমস্যাসহ হাজারো সমস্যায় জর্জরিত সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রীরা আকস্মিকভাবে এমপিকে পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়ে। তারা অসংকোচে এমপির কাছে কলেজের অন্তহীন সমস্যার কথা তুলে ধরে বলেন, আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ শিক্ষক সঙ্কটে জর্জরিত। শিক্ষক না থাকায় আগামী দিনের পরীক্ষা প্রস্তুতি কেমন করে করবো আমরা বুঝতে পারছি না। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, প্রথম বর্ষের ৯মাস চলে গেছে অথচ এমন বিষয় আছে যার উপর আমরা পাঁচটি ক্লাসও পাইনি। এই অবস্থার উত্তরণ না হলে শিক্ষার্থীরা চোখে অন্ধকার দেখবে।

এমপি চিনু কলেজের জরাজীর্ণ অবস্থা স্বচক্ষে অবলোকন করার পর ক্ষেভের সাথে বলেন, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী নওজেশ আলী’র মতো লোকদের কারণেই সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো সঠিকভাবে যথাসময়ে বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। আর এতে উন্নয়ন বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। তিনি জানান, বিগত কয়েকমাস আগেই রাঙামাটি কলেজের একাডেমীক ভবন নির্মাণ কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হলেও শুধুমাত্র রাঙামাটি শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী নওজেশ আলী’র গাফিলতির কারণে অনেক দেন-দরবার করে নিয়ে আসা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা যায়নি। এই কর্মকর্তার কারনেই রাঙামাটি জেলায় শিক্ষার মানোন্নয়নে অবদান রাখা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অবকাঠামোগত উন্নয়ন সম্ভব হয়নি। তাই এবার সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে রাঙামাটির উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সব কিছুই করা হবে বলেও জানিয়েছেন চিনু।

এর আগে কলেজের শ্রেণী কক্ষে ছাত্রীদের সাথে মতবিনিময়কালে শিক্ষার্থীরা তাদের বক্তব্যে কলেজের নানাবিধি সমস্যার কথা তুলে ধরে জানান, তরা দীর্ঘদিন যাবৎ শিক্ষক সংকটে ভুগছেন। শিক্ষকের অভাবে তারা শিক্ষা হতে বঞ্চিত হচ্ছি। সু-পেয় পানির অভাব রয়েছে। তাছাড়া সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে তারাও অংশীদার হতে চায়। অথচ তাদের একটি কম্পিউটার ল্যাব না থাকার কারনে যথাযথ প্রযুক্তি শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। নেই একটি ভাল মানের ক্যান্টিন। এতে তাদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। এছাড়াও কমনরুম, অডিটরিয়াম, শহীদ মিনার নাই। সড়কের বেহালদশার কারণে চলাচলে তাদের কষ্ট হয়। কলেজ চত্বরে টিউবওয়েল স্থাপন, যাতায়াতের জন্য বাস বরাদ্ধ করা, অডিটরিয়াম, মাল্টিমিডিয়া রুম, পাঠাগার ও শহীদ মিনার স্থাপন, ছাত্রী হোস্টেলে যাওয়ার একমাত্র রাস্তাটিসহ কলেজের প্রবেশের পথটিকে সংস্কার করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংসদ সদস্যকে অনুরোধ জানান।

কলেজ ছাত্রীদের এতো এতো সমস্যার কথা শুনে এমপি ফিরোজা বেগম চিনু বলেন, আমি আপনাদের এসব সমস্যা সমাধানে করনীয় সবকিছুই করবো। কারন আমি চাই এই কলেজ থেকে ভবিষ্যতে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে শিক্ষার্থীরা দেশ গঠনে তথা পার্বত্য এলাকার উন্নয়নে নিজেদের আতœনিয়োগ করবে। আর এই লক্ষ্যে একজন সংসদ সদস্য হিসেবে আমার পক্ষ থেকে করনীয় সবকিছুই করা হবে।

মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে রাঙামাটি সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ শফিউল আলম জানান, ছাত্রীরা দীর্ঘদিন পরিবহন সমস্যায় ভুগছে। এছাড়া শিক্ষক সঙ্কটসহ নানাবিধি সমস্যা বহন করছে। ছাত্রীদের দাবিগুলে পূরণের জন্য আপনার সদয় দৃষ্টি কামনা করছি। এসময় কলেজের সহকারী উপাধ্যক্ষ ফারহানা আফরোজ ও আয়েশা বেগম উপস্থিত ছিলেন।

সম্পাদনা- শামীমুল আহসান, ঢাকা ব্যুরোপ্রধান