“রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়: নির্মাণ পিডি নিয়োগে অযোগ্য ব্যক্তিকে প্রস্তবনার অভিযোগ” শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাবিপ্রবির প্রকল্প পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) আবদুল গফুর।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রতিবাদলিপিতে পিডি আবদুল গফুর বলেন, গত ৩০শে জানুয়ারি-২০২৫ দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকায় প্রকাশিত উল্লেখিত শিরোনামের সংবাদে আমাকে নিয়ে অসত্য তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। সংবাদে আমার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, দূর্নীতি এবং আওয়ামী দোসরসহ পার্বত্য কৌটা ব্যবহারের অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে! যাহা সম্পূর্ন অসত্য ও মিথ্যা। আমি দৃঢ়তার সাথে জানাতে চাই যে, চাকুরির বিধিমালার পূর্নাঙ্গ শর্তাবলি পূঙ্খানুপূঙ্খভাবে অনুসরণ করেই প্রচলিত নিয়মানুসারে নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্যতার আলোকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আমি নিয়োগপ্রাপ্ত হই। উল্লেখিত প্রতিবেদনে দূদকে অভিযোগের কথা বলা হলেও অদ্যবদি এমন কোনো তথ্য আমার জানা নেই।
উল্লেখিত প্রতিবেদনে আমাকে, “হিসাব রক্ষক” হিসেবে পূর্ব চাকুরির কথা বলা হয়েছে যা মিথ্যা এবং ভুল তথ্য। আমি পূর্বে হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন “আইসিডিপি প্রকল্প” (অর্থ বিভাগের প্রধান হিসেবে) নিয়োজিত ছিলাম।
আমি যে পদে বর্তমানে এবং প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করছি, সেখানে ঐ সময়ের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে অন্যান্য পদের বেলায় ৩য় বিভাগ গ্রহণযোগ্য নয় এমন শর্ত থাকলেও সহকারী পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন)- ক্রমিক -৬ পদ, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে এই শর্তটি উল্লেখ ছিলো না। শুধুমাত্র স্নাতকোত্তরে ২য় শ্রেণির থাকার বিষয়টি উল্লেখ ছিল। ফলে আমি উক্ত নিয়োগের পরিপূর্ণ শর্ত পুঙ্কানুপঙ্খভাবে পূরণ পূর্বক আবেদন করি। যার প্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ যাচাই বাঁচাই করে নিয়োগ প্রদান করেন। যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদন পূর্বক ইউজিসিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উপযুক্ত প্রতিনিধিসহ নিয়োগ কমিটির নিকট যথাযথ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে এই চাকুরিতে আমি যোগদান করি।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে দূদকের অভিযোগের বিষয়টি বলা হলেও সংস্থাটির দায়িত্বশীল কারো বক্তব্য বা অভিযোগকারির বক্তব্য উল্লেখ করা হয়নি। এমনকি আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যক্তিগত গোপন নথি হতে আমার সকল তথ্য কার মাধ্যমে এই প্রতিবেদক প্রাপ্ত হয়েছেন তাও উল্লেখ করেনি। যদিও পার্সনাল নথি সংরক্ষণকারী কর্মকর্তাগণের উপরে এই দায়ভার বর্তায়।
আমি প্রায় ২০ বছর যাবৎ চাকুরী করে আসছি, আমার চাকুরী জীবনে কোনো রকমের দুর্নীতি ও অনিয়মের সাথে জড়িত ছিলাম না এবং এখনও নেই। তাছাড়াও আমার নামে ব্যাক্তিগত কোনো অডিট আপত্তি নেই। এমনকি ২০ বছরের চাকুরী জীবনে কর্তব্যে অবহেলার আমাকে এই পর্যন্ত জন্য কোনো কারণ দর্শানো নোটিশ ও দেওয়া হয়নি। আমার পুলিশ ভেরিফিকেশনসহ সব কিছু হালনাগাদ রয়েছে। এবং আমি সততা ও কর্তব্য নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছি।
আমি একটি সরকারি প্রকল্পের প্রথম শ্রেণির পদে (প্রথমে নবম গ্রেড পরবর্তীতে ৮ম গ্রেড) কর্মরত ছিলাম। বাংলাদেশ সরকারের উন্নয়ন বাজেট থেকে উক্ত চাকরির বেতন-ভাতা গ্রহণ করতাম। তাছড়াও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, পার্বত্য অঞ্চলের জন্য একটি সর্ববৃহৎ এবং সবচেয়ে পুরনো একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। যেখানে আমার নিয়োগ সময়ে চেয়ারম্যান ছিলেন ততকালীন জিওসি পরবর্তীতে সেনা প্রধান জেনারেল আব্দুল মোবিন স্যার।
অভিযোগে বলা হয় মাননীয় ভিসি, প্রো-ভিসি পদত্যাগের পর মালামাল ক্রয় করা হয় যেতি সঠিক নয়। কেননা কোন প্রকার ফাইল অনুমোদন ও ওয়ার্ক অর্ডার ব্যাতিত কোন মালামাল ক্রয় করা হয়নি। যদি কোন মালামাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে থাকে তা তৎকালীন মাননীয় ভিসির লিখিত ও মৌখিক নির্দেশে ঠিকাদার কর্তৃক সাপলাই করে থাকতে পারে। যার কোন বিল ভাউচার বা অর্থ পরিশোধ হয়নি।
১০ জুলাই আগষ্ট বিপ্লবের সময় আমি আমার অবস্থান থেকে সক্রিয়ভাবে ভূমিকা রাখার কারণে আমার অনেক সহকর্মী শিক্ষক ও কর্মকর্তা আমার উপর সংক্ষুদ্ধ হয়ে আমার ব্যাত্তিগত নথি হতে অফিসের আইন লঙ্গন পূর্বক সাংবাদিক এর হাতে প্রেরণ করেছে বলে আমি মনে করি যা গর্হিত কাজ।
বর্তমান অন্তভর্তিকালীন সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা বিভাগ থেকে আমার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য যাচাই বাছাই পূর্বক গত ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রি. আমাকে অন্তবর্তী সময়ের জন্য ভারপ্রাপ্ত প্রকল্প পরিচালক হিসেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিয়োগ প্রদান করা হয়। আমার এই চার মাস দায়িত্বকালে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাষ্টার প্ল্যানসহ উন্নয়ন কাজের অনেক সাফল্য অর্জন করেছি। এতে একটি পক্ষ আরো বেশি ইর্ষান্বিত হয়ে আমার বিরুদ্ধে এই অপ প্রচারে লিপ্ট রয়েছে বলে আমি বিশ্বাস করি।
অতএব, উক্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে রাঙামাটির একটি সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠকে বিতর্কিত করার অপপ্রয়াস চালানো হয়েছে বলেও আমি করি। আমার স্পষ্ট বক্তব্য হলো সংবাদটি মিথ্যা বানোয়াট এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত। কারো পরোচনায় অপপ্রচারের উদ্দেশ্যে এই সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে। [সংবাদ বিজ্ঞপ্তি]