।। নানিয়ারচর প্রতিনিধি ।।
করোনা প্রতিরোধে চলমান কঠোর লকডাউন ও টানা বৃষ্টিতে চরম দূর্ভোগে পড়েছে নানিয়ারচরের প্রান্তিক মৌসুমী চাষিরা। শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বগাছড়ি, খাইল্যাবাড়ি, ও ইসলামপুর এলাকার প্রান্তিক মৌসুমী ফল চাষিদের বাগানে পেকে আছে আম, কাঠাঁল ও আনারসসহ নানান ফলফলাদি। বগাছড়ি এলাকার আম চাষি মানিক জানান, লকডাউন ও টানা বৃষ্টির ফলে এবার প্রায় ৫লক্ষ টাকার ক্ষতি হবে। ঢাকা চট্টগ্রামের কোথাও আম পাঠাতে পারছিনা। কোন আড়ৎ-এ আম নিতে চাইছেনা। লকডাউনে বিক্রি হচ্ছেনা আম্রপালি, হাড়ি ভাঙ্গা, ফজলি ও মল্লিকা জাতের সু-স্বাদু আম। তিনি আরো জানান, এবার গেল বছরের ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে চেয়েছিলাম। রাঙামাটি, চট্টগ্রাম ও ঢাকার বাজারগুলোতে আম পাঠাতে শুরু করেছিলাম।
লকডাউনে বিক্রি না হওয়ায় এবারও বড় ধরনের লোকসান গুনতে হবে। করোনা পরিস্থিতিতে কৃষি বিভাগের কেউ তার পাশে দাড়াঁইনি এমনটাই জনালেন তিনি এদিকে ইসলামপুর এলাকার ইসমাইল খান বলেন, এবার তিনি ২বিঘা আনারস চাষ করেছেন। আনারস পাকঁতেই শুরু হলো কঠোর লকডাউন। সাথে টানা বৃষ্টি। বাগানে লাইনের পর লাইন পেকে আছে মৌসুমী মধু ফল আনারস। আনারসের পাশাপাশি আমেও লোকসান গুনতে হচ্ছে এই চাষির। ইসমাইল আরো জানায়, নিজের আম বাগানের পাশাপাশি কিছু আম কিনেও নিয়েছিলেন। কিন্তু আম বাজারজাত করতে না পারায় বাগানেই পঁচে যাচ্ছে আম।
বগাছড়ি এলাকার বর্গা চাষি আলী হোসেন জানালেন, ২বিঘা জমি বর্গা নিয়ে আনারস চাষ করেছিলাম। আনারস পাঁক ধরলে প্রথম চালানে ৩হাজার আনারস বিক্রি করেছিলাম। বাকি প্রায় ১৮হাজার আনারস পেলে বাগানেই পচঁন ধরেছে। সার ও হরমোন প্রয়োগ করে কিছু চাষি অগ্রিম ফল বিক্রি করে লাভবান হলেও প্রান্তিক কৃষকরা তেমন লাভবান হতে পারেনি। করোনায় এবারও দূর্ভোগে পড়েছেন এলাকার শতাধিক প্রান্তিক কৃষক।
এবিষয়ে জানতে চাইলে জেলা কৃষি প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা তপন কুমার পাল জানান, বিশেষ পরিস্থিতি (কোভিড-১৯) এর কারনে সারাদেশের ন্যায় পার্বত্যাঞ্চলে মৌসুমী ফল বাজারজাত করতে কিছুটা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। তবে কৃষিজাত পণ্য ব্যবসায়ীরা এগিয়ে এলে এই ক্ষতি কিছুটা কমিয়ে আনা সম্ভব। কেননা কৃষিজাত পণ্য পরিবহণে কোন বাধা নেই। সুতারং কৃষি বিপনণ বিভাগ এবং ব্যবসায়ীরা এগিয়ে আসতে হবে। প্রান্তিক এসব কৃষককে কোন প্রকার অনুদান বা সহায়তা দেওয়া যায় কিনা এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান, পার্বত্যাঞ্চলে বিভিন্ন কৃষি পন্য সম্প্রসারণে প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রান্তিক কৃষকদেরকে চারা, সার, কীটনাশক, প্রশিক্ষণ ও নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়। এছাড়া এভাবে কৃষকদেরকে সহায়তা দেওয়ার সুযোগ নেই। আমি স্থানীয় সম্প্রসারণ ও কৃষি কর্মকর্তাকে বিষয়টি ভেবে দেখার অনুরোধ জনাবো।