পিছিয়ে পড়া রাঙামাটি জেলার শিক্ষার্থীদের সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারলে একসময় তারা জেলার সার্বিক উন্নয়নসহ সামাজিক ক্ষেত্রেও অবদান রেখে এই জেলাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে বলে মন্তব্য করেছেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা। তিনি বলেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য কৃষি’সহ এ জেলায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অন্যান্য জেলা হতে চিকিৎসক-কর্মকর্তারা আসে কিন্তু কয়েক বছর থেকে তারা চলে যায়।
নিজ জেলার স্বল্প সংখ্যক চিকিৎসক-কর্মকর্তারা থাকলেও আজ যদি এ জেলার বেশির ভাগ ছেলে মেয়ে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারতো তাহলে এ জেলায় চিকিৎসক-কর্মকর্তার অভাব হতো না। আন্তরিকতার সাথে তারা নিজ জেলাবাসীর জন্য কাজ করতে পারতো। তাই শিক্ষার্থীদের নিজের সন্তানের ন্যায় শিক্ষাদান করার জন্য তিনি সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের প্রতি আহ্বান রাখেন।
রোববার রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা উন্নয়ন কমিটির সভায় সভাপতির বক্তব্যে চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। সভায় রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ এর মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ছাদেক আহমদের পরিচালনায় জেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিভাগীয় প্রধান এবং কমিটির সুশীল সমাজের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় জানানো হয়, জেলার বিভিন্ন দুর্গম উপজেলা হতে শিক্ষার্থীরা এখানে এসে বাসা-বাড়ী ভাড়া করে থাকতে হয়। ফলে পড়ালেখার পাশাপাশি বাড়ীভাড়া করে শিক্ষার্থীদের চলতে সমস্যা হয়। প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রের অভাবে কলেজের হোষ্টেল চালু করা যাচ্ছেনা। বিদ্যুৎ বিতরনের ক্ষেত্রে গত ১৩জুন পাহাড় ধসে বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ সঞ্চালনের খুঁটি ও লাইন বিচ্ছিন্ন হয়েছিল। বেশীর ভাগ লাইন সচল করতে পারলেও এখনো অনেক বিদ্যুতের খুঁটি ঠিক করতে না পারায় সামান্য সমস্যা হচ্ছে।
এগুলো সচলের বিষয়ে সার্ভে চলছে। তাছাড়া গত ১৩জুন পাহাড় ধসে সাপছড়ি শালবন এলাকায় রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম রাস্তাটি বিচ্ছিন্ন হয়েছিল। পরে সেনাবাহিনী ও সওজ এর সহযোগিতায় ছোট যান চলাচলের জন্য রাস্তা নির্মাণ করা হয়। গত ২১আগস্ট ভারী যানবাহন চলাচলের জন্য একটি বেইলী ব্রীজ নির্মাণ করে বড় যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া যেসব জায়গায় সড়কের ক্ষতি হয়েছিল তা সংস্কার করা হবে। বর্তমানে জেলা ও উপজেলা খাদ্য ভান্ডারে খাদ্য শস্য মজুদ রয়েছে। যেকোন দুর্যোগে খাদ্যশস্য বিতরণ করা যাবে।
সভায় আরো জানানো হয়, ঈদুল আজহায় পৌর এলাকার ওয়ার্ড ভিত্তিক নিদিষ্ট স্থানে কোরবানির পশু জবেহ করার জন্য জবেহ স্থানের ঠিকানা ও পশুর উচ্ছিষ্টাংশ পরিবেশ সম্মতভাবে অপসারণে পৌরসভা কর্তৃক জনগণের মাঝে প্রচারণার লক্ষ্যে সচেতনামূলক লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। আসন্ন কোরবানি ঈদে যেসব স্থানে গরুর হাট বসানো হবে সেসব স্থানে যাতে যানজট না হয় সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখার জন্য পৌর কর্তৃপক্ষ ও বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটিকে অনুরোধ জানান। এছাড়া জেলায় জঙ্গী ও মাদকের বিরুদ্ধে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে পুলিশের বিশেষ দল এ বিষয়ে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। তাই এসব বিষয়ে তথ্য জানিয়ে পুলিশকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানানো হয়।